টেকনাফে কিশোরের হাতে নারী ও উখিয়ায় স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন
Published: 12th, June 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে গতকাল বুধবার রাতে পৃথক ঘটনায় দুই নারী খুন হয়েছেন। টেকনাফে এক কিশোরের ছুরিকাঘাতে রাজিয়া বেগম (৩৩) নামের এক নারী নিহত হন। আর উখিয়ায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী আয়েশা খাতুনকে (২৫) জবাই করে হত্যা করেন স্বামী ছৈয়দ আলম (২৭)। দুটি ঘটনায় অভিযুক্তদের আটক করেছে পুলিশ।
টেকনাফের ঘটনাটি ঘটে গতকাল রাত দেড়টার দিকে সদর ইউনিয়নের ছোট হাবিরপাড়ায়। টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, রাজিয়া বেগম স্থানীয় শফিকের চায়ের দোকানে কর্মরত ছিলেন। তাঁর কিশোর ছেলের সঙ্গে প্রতিবেশী আরেক কিশোরের ক্যারম খেলা নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। খবর পেয়ে রাজিয়া বেগম সেখানে গিয়ে কিশোরদের বকাঝকা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই কিশোর কোমরে থাকা ছুরি দিয়ে রাজিয়াকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন রাজিয়াকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ওসি বলেন, অভিযুক্ত কিশোরকে আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটিও। কিশোর অপরাধী হওয়ায় তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
অন্যদিকে, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ২-ওয়েস্ট নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ডি-১২ ব্লকে আয়েশা খাতুনকে জবাই করে হত্যা করা হয়। ওসি মুহাম্মদ আরিফ হোছাইন জানান, দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল আয়েশা খাতুন ও তাঁর স্বামী ছৈয়দ আলমের মধ্যে। বুধবার সন্ধ্যায়ও তাঁদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে ছৈয়দ আলম ধারালো অস্ত্র দিয়ে আয়েশাকে জবাই করে পালিয়ে যান।
পরে খবর পেয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আয়েশার মৃতদেহ উদ্ধার করে। রাত ১০টার দিকে অভিযান চালিয়ে ছৈয়দ আলমকে আটক করা হয়। তিনি জামাল হোছাইনের ছেলে।
পুলিশ জানায়, দুই নারীর লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। পৃথক দুটি ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।