২০২৩ সালের ১১ জুন ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের শর্তে গঠন করা হয়েছিল গাজীপুর মহানগর বিএনপির কমিটি। তবে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়নি। ঝুট ব্যবসাসহ মহানগরের সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ এই দুই নেতার হাতে। এসব নিয়ে রাজপথের ত্যাগী নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

জানা গেছে, দুই বছর আগে গাজীপুর মহানগরের তেলীপাড়া এলাকায় অবস্থিত সাগর সৈকত কনভেনশন সেন্টারে বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে নতুন কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে। ওই কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করা হয় কাশিমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা শওকত হোসেন সরকার এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় বিএনপির প্রয়াত নেতা গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র ও সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক এম এ মান্নানের ছেলে এম মঞ্জুরুল করীম রনি। 

ওই দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেখানে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে তিনজন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে পাঁচজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। 

পরবর্তীতে দুজন বাদে সবাই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় শওকত হোসেন সরকার সভাপতি এবং এম মঞ্জুরুল করীম রনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়।

নেতাকর্মীরা জানান, ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটির দেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কমিটি হয়নি। যদিও নেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয় কেন্দ্রে পূর্ণাঙ্গ কমিটির লিস্ট পাঠানো হয়েছে। তবে কেন বা কী কারণে এখনো কমিটি হয়নি সেটিও তাদের অজানা। দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা গাজীপুরে এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় সাংগঠনিক গতিশীলতা হারিয়েছে। 

সেইসঙ্গে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যেও সম্পর্ক ভালো নেই। তারা বিভিন্ন সময়ে জুট ব্যবসা ও অধিপত্য বিস্তার নিয়ে ঝামেলায় জড়িয়েছে। দিয়েছেন একে অন্যের বিপক্ষে বক্তব্য। যেহেতু সামনে নির্বাচন এজন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়া দরকার। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সব সময় আলাদা আলাদা প্রোগ্রাম করেন। মহানগর নেতা কর্মীর মধ্যেও এটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কে কার রাজনীতি করে সেতু এখন দিবালোকের মত স্পষ্ট। কেন্দ্রীয় প্রোগ্রামগুলোতে দুই নেতা আলাদা আলাদা লোক বল নিয়ে প্রোগ্রামে যোগদান করে। এখন পর্যন্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক ব্যানারে রাজধানীর কোনো প্রোগ্রামে দেখা যায়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপির নেতা বলেন, “তারা নিজেদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিশেষ করে ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত। এখন পর্যন্ত কমিটি দেওয়ার বিষয়ে তাদের তেমন কোনো আগ্রহ দেখা যায় না। এতে মহানগর বিএনপির কার্যক্রম একপ্রকার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককেন্দ্রীক হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে দলের বদনামসহ ভোটের মাঠে প্রভাব পড়বে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করীম রনি বলেন, “আমরা অনেক আগেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলাম কিন্তু রাজনৈতিক কারণ ও তখনকার নির্বাচনের পরিবেশের কারণে হয়তো কমিটি দেয়নি। দলের কেন্দ্র থেকে যখন চাইবে তখনই পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে। এই সিদ্ধান্তটি কেন্দ্রের।”

এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার বলেন, “আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই, কিছু লোক দলীয় ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। মহানগর বিএনপির স্বতঃস্ফূর্তভাবেই একত্রে বিভিন্ন সভা সমাবেশ মিছিলে অংশগ্রহণ করছে। বিভিন্ন কারণেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, আমরা আগেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিয়েছি।”

ঢাকা/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ই প র ণ ঙ গ কম ট কর ম র কম ট র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

হল সংসদে পাহাড়ি ছাত্রীদের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ‘হৃদ্যতার বন্ধন’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হল সংসদ নির্বাচনে পাহাড়ি ছাত্রীরা পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছেন। তাঁদের প্যানেলের নাম ‘হৃদ্যতার বন্ধন’। নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে তাঁরা ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

আজ সোমবার বিকেলে চাকসু ভবনের এসে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন প্যানেলের সদস্যরা। সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নাট্যকলা বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী প্রমিতা চাকমা। তিনি বলেন, ‘আমাদের হল নতুন। অনেক সংস্কারকাজ বাকি আছে। শিক্ষার্থীদের জন্য যা যা সংস্কার প্রয়োজন, সেসবের দাবিতে কাজ করতেই আমরা পূর্ণ প্যানেল নিয়ে নির্বাচন করছি।’

সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পালি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সিংঞোইউ মারমা। তিনি বলেন, ‘হলের খাবারের মান, লাইব্রেরির উন্নয়নসহ যেসব সংস্কারের প্রয়োজন, আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করব।’

সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মে থুই চিৎ খেয়াং। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিভেদহীন পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই আমরা। তাই প্যানেলে সব পাহাড়ি ছাত্রীগোষ্ঠী থেকে প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।’

এ ছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আছেন খেলাধুলা সম্পাদক স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ইতি চাকমা, সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পাদক সংগীত বিভাগের প্রত্যাশা চাকমা, দপ্তর সম্পাদক হিসাববিজ্ঞান বিভাগের খিং খিং রাখাইন, সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার সম্পাদক পালি বিভাগের অপরাজিতা বড়ুয়া, বিজ্ঞান, গবেষণা ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সুরঞ্জনা ত্রিপুরা, স্বাস্থ্য সম্পাদক পালি বিভাগের অংমে মারমা, রিডিংরুম, ডাইনিং ও হল লাইব্রেরি সম্পাদক মার্কেটিং বিভাগের মোনালিসা চাকমা, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক পালি বিভাগের শ্রেয়া তালুকদার, নির্বাহী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিপ্রা তঞ্চঙ্গ্যা, পরিসংখ্যান বিভাগের অনন্যা চাকমা এবং বাংলা বিভাগের প্রমিতা ত্রিপুরা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন এবং হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১২ অক্টোবর ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালে। গতকাল রোববার থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়ন ফরম বিতরণ।

মনোনয়নপত্র বিতরণের বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে ১৫ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। যাচাই-বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত। প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২১ সেপ্টেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাকসু নির্বাচন আয়োজনে বাজেট কত, খরচ যেসব খাতে
  • জকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর
  • ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পের বিমা দাবি নিষ্পত্তির অনুরোধ বিটিএমএর
  • হল সংসদে মনোনয়নপত্র নিলেন ডাকসু ভিপি সাদেক কায়েমের ছোট ভাই
  • চাকসু ও হল সংসদে ২৩২ পদে মনোনয়নপত্র নিলেন ১ হাজার ৮৮ জন প্রার্থী
  • চাকসু: ফয়জুন্নেছা হলে ১৪ পদে ১৪ মনোনয়নপত্র বিক্রি
  • চাকসু নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ
  • মনোনয়ন নেওয়ার শেষ দিনে একটি হলে ছাত্রী সংস্থার প্যানেল
  • দ্বিতীয় দিনে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন ১৪১ জন
  • হল সংসদে পাহাড়ি ছাত্রীদের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ‘হৃদ্যতার বন্ধন’