রাজনীতিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের খুলনা মহানগর শাখার সহ-সভাপতি বেগ লিয়াকত আলীকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয়রা।

শনিবার (১৪ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর ফুলবাড়িগেট বাজার মোড় থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।

বেগ লিয়াকত আলীর বাড়ি খানজাহান আলী থানার বাদামতলা পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে।

আরো পড়ুন:

‘মারধরের’ ১২ দিন পর সাবেক প্রতিমন্ত্রীর চাচাতো ভাইয়ের মৃত্যু

কুষ্টিয়ায় মোটর শ্রমিকদের মারধরের প্রতিবাদে মহাসড়কে বিক্ষোভ 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মাটিতে বসা বেগ লিয়াকত আলীর জামার কলার ধরে আছেন এক ব্যক্তি। অন্যরা তাকে ঘিরে ধরে বিভিন্ন সময় স্থানীয়দের ওপর তার চালানো নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে অশ্লীল ভাষায় বকাবকি করছেন। কয়েকজন তাকে আঘাত করেন।

এ সময় মধ্য বয়স্ক এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, আমার বুড়ো বাপকেও তুই ছাড়িসনি। ‌তাকেও মারতে গেছিস।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর বেগ লিয়াকাত আলীর বিরুদ্ধে দিঘলিয়া, দৌলতপুর, খানজাহান আলী এবং সাভার থানায় কয়েকটি মামলা হয়। গত ১৩ মে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পরের দিন তিনি আদালতে জামিন নিতে গেলে পুলিশ সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। ঈদের সপ্তাহখানেক আগে তিনি জামিনে কারামুক্ত হন। সেই থেকে বেগ লিয়াকত আলী বাড়িতেই থাকতেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন অনেকটা জোরপূর্বক তিনি (বেগ লিয়াকত আলী) ফুলবাড়িগেট বাজার বণিক সমিতির সভাপতি পদ দখলে রেখেছিলেন। বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী, এমনকি আওয়ামী লীগের সমর্থক ব্যবসায়ীরাও নির্বাচনের দাবি জানালেও তিনি কান দেননি। এসব কারণে বাজারের ব্যবসায়ীরা তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিল।

নগরীর খানজাহান আলী থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, “বেগ লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। শনিবার দুপুর ১টার দিকে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসা শেষে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।”

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর আটক আওয় ম ল গ ত আল র

এছাড়াও পড়ুন:

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া প্রশ্নে রুল

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রুল দেন। একই সঙ্গে যেকোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব (নিযুক্ত) দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

আরও পড়ুননতুন ব্যবস্থাপনায় নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা শুরু০৭ জুলাই ২০২৫

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন রিটটি করেন। রিটে নৌসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।

‘নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামে গত ২৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এনসিটি পরিচালনায় ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

আগের ধারাবাহিকতায় ৯ জুলাই রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত ২৩ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন। ধার্য তারিখে আদালত আদেশের জন্য ৩০ জুলাই দিন রাখেন। এ অনুসারে আজ বিষয়টি আদেশের জন্য আদালতের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

আজ মধ্যাহ্নবিরতির পর আদালত আদেশ দেন। আদালত বলেন, শুধু রুল দেওয়া হলো।

আদেশের সময় রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আহসানুল করিম এবং আইনজীবী কায়সার কামাল ও আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম।

পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার নতুন দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে এ দায়িত্ব নেয় জাহাজ মেরামতের এ প্রতিষ্ঠান। প্রথমবারের মতো বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হলো চিটাগং ড্রাইডক।

চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহৎ এই টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সিংহভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ