ফিফার নতুন সংস্করণের ক্লাব বিশ্বকাপ শুরুতেই পাল্টে গেল পূর্বধারণা। টিকিট বিক্রির ধীরগতি এবং দর্শকদের আগ্রহের অভাব নিয়ে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তৈরি হয়েছিল সংশয়। তবে খেলার দিন সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করে দিল বাস্তবতা। বাংলাদেশ সময় রোববার (১৫ জুন) ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থিত হার্ড রক স্টেডিয়ামে গ্যালারি ভরে উঠল প্রায় ৬১ হাজার দর্শকে। তবে মাঠে গোলের খরা থেকে রেহাই মেলেনি!

৩২ দলের নতুন কাঠামোয় ক্লাব বিশ্বকাপের প্রথম আসর রোমাঞ্চ দিয়ে শুরু হলেও গোলশূন্য ড্রয়ে শেষ হয় উদ্বোধনী ম্যাচ। মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামি এবং আফ্রিকার প্রতিনিধিত্বকারী শক্তিশালী মিশরীয় ক্লাব আল আহলি।

খেলার শুরু থেকেই আল আহলি ছিল আগ্রাসী মেজাজে। প্রথমার্ধে তারা একের পর এক আক্রমণ শানালেও গোলরক্ষক অস্কার উস্তারির দৃঢ় দেয়ালে বারবার আটকে যায়। ম্যাচের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত আসে যখন আল আহলি পেনাল্টি পায়। কিন্তু সাবেক ফরাসি তারকা দাভিদ ত্রেজেগের আদলে খ্যাত মাহমুদ ‘ত্রেজেগে’ সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। তার নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন মায়ামির অভিজ্ঞ গোলকিপার উস্তারি। ফিরতি বলেও সফল হন না ত্রেজেগে—দ্বিতীয়বারও বল লুফে নেন উস্তারি।

আরো পড়ুন:

তেহরানে আটকা ইন্টার মিলানের স্ট্রাইকার তারেমি, ক্লাব বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ‘মিস’

ভোরে শুরু ক্লাব বিশ্বকাপ, বিশ্বের নজর এবার যুক্তরাষ্ট্রে

ম্যাচজুড়ে আটটি দুর্দান্ত সেভ করে মায়ামির হয়ে মূল নায়ক হয়ে ওঠেন ৩৮ বছর বয়সী এই গোলকিপার। ইনজুরির কারণে নিয়মিত গোলকিপার ড্রেক ক্যালেন্ডারের অনুপস্থিতিতে সুযোগ পেয়ে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেন তিনি। অন্যদিকে আল আহলির গোলপোস্টে দায়িত্বে থাকা মোহামেদ এল শেনাওয়িও কম যাননি; পাঁচটি সেভ করে দলের হতাশা কিছুটা হলেও হালকা করেন।

দ্বিতীয়ার্ধে মায়ামি নিজেদের ছন্দ খুঁজে পায়। লিওনেল মেসির পায়ের জাদুও দেখা যায় কয়েকবার। একটি ফ্রি কিকে অল্পের জন্য গোল বঞ্চিত হন তিনি। শেষ মুহূর্তে তার এক জোরালো শট ঠেকিয়ে ড্র নিশ্চিত করেন শেনাওয়ি। এমন নাটকীয়তা থাকা সত্ত্বেও গোলের খাতা খুলতে ব্যর্থ থাকে দুই দলই।

এই ম্যাচের ফলাফলের পর গ্রুপপর্বে বাকি লড়াইগুলো আরও উত্তেজনাকর হবে বলেই ধরে নেওয়া যায়। আগামী বৃহস্পতিবার ইন্টার মায়ামি মুখোমুখি হবে পর্তুগালের ক্লাব পোর্তোর। অন্যদিকে, আল আহলি খেলবে ব্রাজিলিয়ান জায়ান্ট পালমেইরাসের বিপক্ষে। 

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ক ল ব ব শ বক প

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ