ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না বলে মত দিয়েছে ধনী দেশগুলোর জোট জি-৭। কানাডায় চলমান ৫১তম সম্মেলন থেকে যৌথ বিবৃতিতে এ অবস্থানের কথা জানিয়েছে সদস্য দেশগুলো। ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ রয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। খবর ইকোনমিক টাইমস।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা জোর দিয়ে বলছি, ইরানি সংকটের সমাধান হলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে কমে যাবে। যার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতিও অন্তর্ভুক্ত।

জি-৭ সম্মেলন শেষ হওয়ার আগেই কানাডা ছেড়ে চলে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানান, সোমবার রাতের খাবারের পরেই প্রেসিডেন্ট সম্মেলন ছেড়ে দেশে ফিরেছেন। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাতের কারণেই তিনি ফিরে এসেছেন বলে জানান তিনি। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি হোয়াইট হাউস।

সোমবার বিশ্বনেতাদের সাথে ফটো সেশনের সময় ট্রাম্প জানান, বড় কিছুর জন্য ওয়াশিংটনে ফিরে যাওয়া জরুরি।

তেহরানের পক্ষ থেকে কাতার, সৌদি আরব ও ওমানকে অনুরোধ করা হয়েছে, তারা যেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। যাতে তিনি ইসরায়েলের ওপর তার প্রভাব খাটিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে উদ্যোগী হন। বিনিময়ে ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সমঝোতা আলোচনায় নমনীয়তা দেখাবে। দুজন ইরানি এবং ওই অঞ্চলের তিনটি কূটনৈতিক সূত্র রয়টার্সকে এসব কথা জানায়।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ