শরিফুল রাজ। জনপ্রিয় অভিনেতা। ঈদে মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘ইনসাফ’। সঞ্জয় সমদ্দার পরিচালিত সিনেমাটিতে অ্যাকশন অবতারে দেখা গেছে রাজকে। মুক্তির পর থেকেই সিনেমাটি নিয়ে হলে হলে ঘুরছেন। দর্শকদের উচ্ছ্বাস দেখছেন, নিজে শুনছেন তাঁর চরিত্রটি নিয়ে ভালো লাগার গল্প। ইনসাফ ও দর্শকদের সঙ্গে কাটানো সে সময় অভিজ্ঞতা নিয়েই কথা হয় তাঁর সঙ্গে। 

ঈদের সময়টায় আপনার সময় কাটছে কেমন?

দারুণ কাটছে; তবে সেটা হলে হলে গিয়ে দর্শকের সঙ্গে কাটিয়েছি। আমি আসলে আমার প্রথম সিনেমা ‘আইসক্রিম’ থেকেই হলে হলে ঘুরি। সিনেমা মুক্তির পর দর্শকরা যে আবেগ আর উচ্ছ্বাস নিয়ে সিনেমা দেখেন, সেটা নিজ চোখে দেখা। এটাই আমার সবচেয়ে প্রিয় অভিজ্ঞতা। এবারও ইনসাফ দেখে তাদের প্রতিক্রিয়া দেখেছি। অনেকেই এসে জড়িয়ে ধরেছে, বলেছে আপনাকে অনেক ভালো লাগে। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।

পরাণ ও হাওয়ার সময় দর্শকদের যে ভালোবাসা পেয়েছিলেন সেই পরিমাণ ভালোবাসা কি এই সিনেমার বেলাতে পাচ্ছেন?

পরাণ ও হাওয়া বেশ কয়েক বছর আগের সিনেমা। সিনেমাগুলোও ভিন্ন গল্পের, ভিন্ন পরিচালকের ভিন্ন ঢঙের। তখন রাজ যেমন ছিল এখন কিন্তু কিছুটা পরিবর্তন আসছে। তবে হলে দর্শকদের যে ভালোবাসা পাচ্ছি সেই উচ্ছ্বাস ও প্রক্রিয়া কিন্তু একই রকম। তবে তখন আরও বেশি হলে গিয়েছিলাম। এইবার তো এত হলে যাওয়া হচ্ছে না। তবে আগামীতে শো ও হল বাড়লে আমার বিশ্বাস, সেসব হলেও যাব। তবে যে ভালোবাসা দেখছি ও পাচ্ছি, তাতেই আমি তৃপ্ত। 

ভিডিওতেও দেখলাম আপনি বলছেন “আমি দক্ষিণী না, বাংলাদেশি অভিনেতা”– এই পরিচয়বোধ এত জোরালো কেন?

কারণ আমি বিশ্বাস করি, আমাদের এই বাংলাদেশি গল্প বলার দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। যখন কেউ আমাকে দক্ষিণী অভিনেতা ভেবে ফেলে, তখন মনে হয় আমি নিজেকে পুরোপুরি তুলে ধরতে পারিনি। তাই আমি সবসময় বলি, আমি বাংলাদেশের সন্তান, এই দেশের মাটির গন্ধ আমার অভিনয়ে থাকতে হবে। আমি বাংলাদেশের অভিনেতা। 

ইনসাফ শুধুই অ্যাকশনধর্মী সিনেমা নয়, এতে নাকি সামাজিক মেসেজও আছে?  

এটা শুধুই অ্যাকশন সিনেমা নয়। এই দেশের নানা অঙ্গনের দুর্নীতি, অবিচার আর নীরবতা নিয়ে কথা বলেছে সিনেমাটা। এতে একটা প্রতিবাদের ভাষা আছে। সেটা এসেছে নির্মাতা সঞ্জয় সমদ্দারের ভেতর থেকে। আমি কেবল সেই চরিত্রটিকে পর্দায় রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এই চেষ্টা করার মধ্যেই আমার শিল্পীসত্তা খুঁজে পাই, আনন্দও পাই। আসলে এটাই তো আমার কাজ। 

তাসনিয়া ফারিণের সঙ্গে প্রথমবার কাজ করলেন। কেমন অভিজ্ঞতা?

ফারিণ অনেক ভালো অভিনেত্রী, সেটা আগে থেকেই জানতাম। সিনেমায় ওকে আরও বেশি দেখতে চাই। এই সিনেমা যারাই দেখেছেন, এক বাক্যে ফারিণের প্রশংসা করেছেন। ফারিণের চরিত্রটি দারুণ সাহসী চরিত্র। সিনেমায় ওর আরও জোরালো হওয়া দরকার সিনেমায়। আমি বিশ্বাস করি, ও যদি আরও বেশি সিনেমায় কাজ করে, তাহলে দুর্দান্ত কিছু দেবে ইন্ডাস্ট্রিকে।

ঈদে দর্শকের হলে ফেরা নিয়ে আপনার ভাবনা কী?

আজ থেকে আট-দশ বছর আগে সিনেমার যে পরিস্থিতি ছিল, সেটা এখন অনেকটাই বদলেছে। ঈদে মুক্তি পাওয়া সব ধরনের সিনেমা দেখতে মানুষ সিনেমা হলে যাচ্ছে। এটা অনেক বড় ‘পজিটিভ সাইন’। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে, সারা বছর হয়তো এমন হবে না, কিন্তু এখন যা হচ্ছে, সেটাও তো কম না। আমি আশাবাদী। ভবিষ্যতে ঈদ ছাড়াও সিনেমা দেখতে হলে যাবে দর্শক। তবে সেজন্য ঈদ ছাড়াও তো ভালো ভালো সিনেমা মুক্তি দিতে হবে। দর্শকদেরও বুঝাতে হবে সেটা। 

সিনেমা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আপনার কোনো নির্দিষ্ট কৌশল আছে?

ব্যবসায়িকভাবে সফল হবে, এই চিন্তা করে আমি কোনো সিনেমা হাতে নিই না। আমি চেষ্টা করি গল্পটা বুঝতে। আমার অভিনীত অনেক সিনেমা ভালো ব্যবসা করেছে, কিন্তু সেটা আমার একার কৃতিত্ব নয়। নির্মাতাদের পরিশ্রম আর ভালো গল্পই আসল বিষয়। আমি শুধু চেষ্টা করি চরিত্রটিকে নিজের ভেতর ধারণ করতে। সেটা ধারণ করতে সব ধরনের পরিশ্রম করতে প্রস্তুত থাকি। 

নিজের চলচ্চিত্রকারদের নিয়ে আপনার ভাবনা কী?

আমি আমার নির্মাতাদের কাছে কৃতজ্ঞ। যারা আমাকে কাস্ট করেন, তারা বিশ্বাস করেই করেন। আমি চেষ্টা করি সেই বিশ্বাসটাকে পর্দায় প্রমাণ করতে। আমার সব সিনেমাই যে হিট হয়েছে তা নয়। সব সিনেমা হিট হবেও না। কিন্তু আমি চাই, প্রতিটি সিনেমায় নিজের সেরাটা দিই। ইনসাফের বেলায়ও সেই চেষ্টা ছিল। এতে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ শট ছিল। চেষ্টার কারণে সেগুলো কিন্তু সহজ হয়ে গেছে। 

আপনি নিজেকে কোথায় দেখতে চান আগামী দিনে?

আমি চাই, আমার সিনেমা সফল হোক। সেই সফলতা শুধু আমার না, যারা টাকা লগ্নি করেন, যিনি গল্প লেখেন, পরিচালনা করেন, ক্যামেরার পেছনে থাকেন। সবাই মিলে যে একটা স্বপ্ন বানান, সেটা যেন সফল হয়। আর আমি যেন সেই স্বপ্নের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করতে পারি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শর ফ ল র জ অভ ন ত চর ত র ইনস ফ আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

‘মাস্তান’কে ছাড়া রিয়ালের অ্যানফিল্ড–অভিযান এবং সালাহর রেকর্ডের হাতছানি

অ্যানফিল্ডে যাওয়ার ঠিক আগে হঠাৎ দুঃসংবাদ পেল রিয়াল মাদ্রিদ। লিভারপুলের বিপক্ষে আজ রাতে খেলতে পারবেন না ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো। দলের মেডিকেল বিভাগ জানিয়েছে, আর্জেন্টাইন এই মিডফিল্ডার ভুগছেন ‘স্পোর্টস হার্নিয়া’-তে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা লিখেছে, মাস্তানতুয়োনো কবে ফিরতে পারবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে আজকের ম্যাচে তাঁর না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত।

গতকাল অনুশীলনেও ছিলেন না মাস্তানতুয়োনো। সাধারণত প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়ে ম্যাচের আগের দিন অনুশীলন করে রিয়াল। কিন্তু এবার কোচ জাবি আলোনসো একটু ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন। অ্যানফিল্ডে সাংবাদিকদের সামনে কৌশল প্রকাশ না করে তিনি শেষ অনুশীলন সেরেছেন ক্লাবের নিজস্ব মাঠ ভালদেবাসে। মার্কার বিশ্লেষণ, প্রতিপক্ষ যেন শেষ মুহূর্তে কিছু বুঝে না ফেলে, সে জন্যই আলোনসোর এ সিদ্ধান্ত।
রিয়ালের বর্তমান ফর্ম অবশ্য কোনোভাবেই লুকানো যাচ্ছে না। লা লিগায় গত পরশু রাতে ভ্যালেন্সিয়াকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। এ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৪ ম্যাচে এটি তাদের ১৩তম জয়। একমাত্র হারের স্বাদ লিগে। ১২৬ বছরের ইতিহাসে রিয়ালের এর চেয়ে ভালো সূচনা হয়েছে মাত্র দুবার, সর্বশেষ ১৯৬১-৬২ মৌসুমে।

লিভারপুলের অনুশীলনে ভার্জিল ফন ডাইক ও মোহাম্মদ সালাহ

সম্পর্কিত নিবন্ধ