Prothomalo:
2025-08-01@21:58:22 GMT

কিছু পাখি কেন উড়তে পারে না

Published: 17th, June 2025 GMT

পাখি বললেই আমাদের কল্পনায় সুন্দর ডানার উড়ন্ত প্রাণীর কথা মনে হয়। কিন্তু পৃথিবীতে এমন অনেক প্রজাতির পাখি রয়েছে, যারা উড়তে পারে না। অনেক পাখি আবার বিবর্তনের ধারায় ওড়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। এসব পাখি স্থল বা জলজ পরিবেশে বিশেষভাবে অভিযোজিত হয়েছে। বর্তমানে ৬০টির বেশি প্রজাতির ডানাবিহীন পাখি পৃথিবীতে টিকে আছে, যার মধ্যে উটপাখি, এমু, কিউই, পেঙ্গুইন অন্যতম।

পাখির ওড়ার ক্ষমতা না থাকার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব পাখি এমন এলাকা বা দ্বীপে বসবাস করত, যেখানে কোনো স্থলজ শিকারি ছিল না। উড়ে উড়ে শিকারির হাত থেকে পালানোর প্রয়োজন কম ছিল বলে ওড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে তারা। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, ওড়ার জন্য পাখির প্রচুর শক্তি খরচ হয়। এ জন্য ডানার পেশি ও হাড়ের বিশেষ গঠন প্রয়োজন হয়। ওড়ার প্রয়োজন ছিল না বলে এসব পাখির ডানা ও হাড়ের পরিবর্তন কম হয়েছে। ওড়ার বদলে এসব পাখি সেই শক্তি দ্রুত দৌড়ানো বা সাঁতার কাটার জন্য ব্যয় করেছে। ধীরে ধীরে এসব পাখির ডানা ছোট হয়ে যায়। ওড়ার ক্ষমতা লোপ পায়। আবার কিছু পাখি জলজ জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হওয়ার কারণে ওড়ার ক্ষমতা হারিয়েছে। পেঙ্গুইনরা তাদের ডানা ব্যবহার করে আকাশে ওড়ার পরিবর্তে জলের নিচে সাঁতার কাটার জন্য বিশেষভাবে ক্ষমতা তৈরি করেছে। এদের ডানা ফ্লিপার হিসেবে কাজ করে। স্টিমার ডাক প্রজাতির কিছু পাখি উড়তে পারে না। এরা ডানা পানির ওপর দিয়ে দ্রুত দৌড়ানোর জন্য অভিযোজিত হয়েছে।

যেহেতু এসব পাখি উড়তে পারে না, তাই স্থলভাগে দ্রুত চলাচলের জন্য তাদের পা হয় খুব শক্তিশালী। উটপাখি ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে দৌড়াতে পারে। এ ছাড়া উড়ন্ত পাখিদের বুকের হাড়ে ‘কিল’ নামের বিশেষ একটি হাড় থাকে। এই অংশে ওড়ার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তিশালী পেশি সংযুক্ত থাকে, ডানাবিহীন পাখিদের এই অঙ্গ থাকে না।

উটপাখি আফ্রিকার উন্মুক্ত সাভানা ও মরুভূমিতে দেখা যায়। এরা বিশ্বের বৃহত্তম ও দ্রুততম দৌড়বিদ পাখি হিসেবে আলোচিত। অস্ট্রেলিয়াতে এসব পাখি দেখা গেলেও ১৮শ শতকের আগে দেখা যায়নি। এমু অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন পরিবেশে দেখা যায়। উটপাখির পর এমু দ্বিতীয় বৃহত্তম পাখি।

কাসোয়ারি নামের আরেকটি বড় পাখি পাপুয়া নিউগিনি, উত্তর অস্ট্রেলিয়া ও আশপাশের দ্বীপপুঞ্জের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনে দেখা যায়। এদের ছুরির মতো দেখতে নখ থাকে। এর শক্তিশালী পায়ের জন্য পরিচিত। আরেকটি আলোচিত পাখি কিউই। এটি নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় পাখি। ছোট, নিশাচর ও লম্বা ঠোঁটের ডগায় নাসারন্ধ্র থাকে এদের। আর বিখ্যাত কোটপরা পাখি পেঙ্গুইন। ১৮ প্রজাতির পেঙ্গুইন রয়েছে। এরা সবাই ডানাবিহীন। এদের বেশির ভাগই অ্যান্টার্কটিকা ও দক্ষিণ গোলার্ধের ঠান্ডা অঞ্চলে বাস করে। গ্যালাপাগোস পেঙ্গুইনের মতো কিছু প্রজাতি বিষুবরেখার কাছাকাছি দেখা যায়। এরা সাঁতারে অত্যন্ত দক্ষ।

অতীতে মানুষের কারণে ও শিকারি প্রাণীর কারণে ডানাবিহীন অনেক পাখির প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ডোডো ও মোয়া পাখি এদের মধ্যে অন্যতম।

সূত্র: ব্রিটানিকা

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প ঙ গ ইন এসব প খ র ক ষমত র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ