দেশের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী জাহিদ হাসান ও আফসানা মিমি। বলা চলে, কাছাকাছি সময়ে অভিনয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন তারা। মজার বিষয় হল একই স্কুলে একই ক্লাসে পড়ালেখা করেছেন এই দুই তারকা। তবে একে অপরকে চিনতে না তারা। পরিচয় হয়েছে ঢাকায় মঞ্চ নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে।

চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সিরাজগঞ্জের হৈমবালা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা জাহিদ হাসান ও আফসানা মিমি। চতুর্থ শ্রেণির পর আর সেখানে পড়া হয়নি জাহিদ হাসানের। কারণ, স্কুলটি চিল মেয়েদের। সেই স্কুলে ছেলেরা শুধু চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়তে পারতো।

সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন জাহিদ হাসান ও আফসানা মিমি। একই স্কুলে পড়ালেখা করলেও একে অপরকে চিনতেন না তারা। পরিচয় হয়েছে ঢাকায় এসে।

আফসানা মিমি বলেন, ‘কাছাকাছি সময় আমরা কাজ করতে এসেছি। আমরা যখন থিয়েটার করতে করি তখন থেকে আমাদের পরিচয়। সেটা নব্বই দশকের শুরুতে। জাহিদ মঞ্চে বেশিদিন কাজ করেননি। তবে ওই সময়টাতে যারা মঞ্চে তার নাটক দেখেছেন তারা কোনোদিন জাহিদকে ভুলতে পারবে না। সেটা দিয়েই মঞ্চে তার অভিষেক ঘটলো। আমরা পাগলের মত তার অভিনয় দেখতাম। তখনও আমরা বন্ধু হইনি।’

এরপরই জাহিদ হাসান বলেন, ‘আমরা মঞ্চে অভিনয়ের জন্য বিভিন্ন কোর্স করতাম। তখন আমি টেলিভিশনে কাজ করি। বিভিন্ন গ্রুপ থেকে শিল্পীরা আসতো। তেমনি একটি গ্রুপ থেকে মিমি এসেছে। পরে জানলাম মিমি আর আমি এক স্কুলে, একই ক্লাসে পড়তাম। তখন থেকে আমাদের বন্ধুত্ব। 

জাহিদ হাসানের কথায়, ‘সেই বন্ধুত্বের সম্পর্কটা এখন পারিবারিক হয়ে গেছে। আমার মনে আছে- আমি যখন অসুস্থ ছিলাম মিমি হাসপাতালে না আসতে পারলেও ড্রাইভারকে দিয়ে আমার জন্য খাবার পাঠিয়ে দিত। তখন আমার কান্না পায়। বন্ধু, বোন না মিমি আমার পরিবারের অংশ।’

আফসানা মিমি বলেন, ‘সাদিয়া ইসলাম মৌকে বিয়ের পর আমাদের বন্ধুত্ব আরও ভালো হয়। জাহিদ হাসানের সঙ্গে যদি আমার কোনোদিন মতের বিরোধ হয় আমি জনি মৌ সব সময়ে আমার পক্ষে অবস্থান নেয়।’

প্রসঙ্গত, দির্ঘ্য সময় পর ‘উৎসব’ সিনেমায়  একসঙ্গে অভিনয় করেছেন আফসানা মিমি, জাহিদ হাসান, যা মুক্তি পেয়েছে ঈদে। এতে জাহিদ-মিমি ছাড়াও অভিনয় করেছেন জয়া আহসান, অপি করিম, চঞ্চল চৌধুরী, আয়মান সাদিকসহ এক ঝাঁক তারকা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আফস ন ম ম আফস ন

এছাড়াও পড়ুন:

জকসু নির্বাচন নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ ছাত্র সংগঠনগুলোর

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন নিয়ে একে অপরকে নানাভাবে দোষারোপ করছে ছাত্র সংগঠনগুলো। সরাসরি নাম উল্লেখ না করে কেউ কাউকে কিছু না বললেও ছাড় দিতে নারাজ তারা।

গত ৩০ অক্টোবর জবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের নেতারা জকসু নির্বাচনের বিধিমালা প্রণয়নে প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে বলে অভিযোগ করে।

আরো পড়ুন:

জবি প্রশাসনের কাছে ২০ দাবি জানাল ইউটিএল

পিএইচডি গবেষকদের জন্য বৃত্তি চালু করা হবে: জবি উপাচার্য

রবিবার (২ নভেম্বর) ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জকসু নির্বাচন পেছাতে নির্বাচন কমিশন ‘বিশেষ উদ্দেশ্যে’ কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন জবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. রিয়াজুল ইসলাম।

পরে সন্ধ্যায় একই স্থানে ‘জকসু নির্বাচনের আচরণবিধি ও স্পোর্টস কার্নিভাল’ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শাখা জাতীয় ছাত্রশক্তি অভিযোগ করে, জকসু নির্বাচন নিয়ে একটি সংগঠন তড়িঘড়ি করে নির্বাচন আয়োজন করতে চাচ্ছে এবং আরেকটি সংগঠন নির্বাচন পিছিয়ে জাতীয় নির্বাচনের সময়ের কাছাকাছি নিয়ে যেতে চাচ্ছে।

রবিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “নির্বাচন কমিশন একটি বিশেষ কারো ইশারায়, বাইরের প্রেসক্রিপশনে নির্বাচনের খসড়া প্রস্তুত করেছে। আমাদের দাবি, ২৭ নভেম্বরই শিক্ষার্থীদের নিয়ে জকসু নির্বাচন বাস্তবায়ন করা। নির্বাচন কমিশনের সবাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অংশ। তারা ২৭ নভেম্বর নির্বাচন হওয়ার বিষয়টি আগেই জানতো। কিন্তু তবু ১০ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে খসড়া রোডম্যাপ তৈরি করেছে। এতে একটি গ্রুপকে সুবিধা দিয়ে অন্যদের ভোটাধিকার হরণের চেষ্টা চলছে।”

তিনি বলেন, “প্রশাসন ও কমিশন আগে জানিয়েছিল, আইন প্রণয়নের পরই প্রস্তুতি কমিটি গঠনের কাজ শুরু হবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, তারা নতুনভাবে সব কাজ করতে চাচ্ছে—যেন নির্বাচন বিলম্বিত হয়। আলোচনার টেবিলে নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে।”

তিনি আরো বলেন, “একটা পক্ষের সব কথা শোনা হচ্ছে। কিন্তু অন্যদের মতামত গুরুত্ব পাচ্ছে না। এতে স্পষ্ট, নির্বাচন পেছানোর মানসিকতা নিয়েই তারা আলোচনায় বসছে। ১৩ ডিসেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষা বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় বিজয় দিবসের কর্মসূচির কারণে সে সময় নির্বাচন গ্রহণ করা সম্ভব নয়।”

“এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশন ১৬ ডিসেম্বরের পর ভোট আয়োজন করতে চাইছে। কিন্তু তখন জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে বা ছুটি শুরু হলে জকসু নির্বাচন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে,” যুক্ত করেন শিবির সভাপতি।

আপ বাংলাদেশের সঙ্গে প্যানল ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা ইনক্লুসিভ প্যানেল করতে চাচ্ছি। আমাদের প্যানেলে কারা থাকবেন সেটা এখনো নির্দিষ্ট হয়নি। শিগগিরই এ বিষয়ে জানতে পারবেন।”

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল আলিম আরিফ, অফিস সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল ও বাইতুল মাল সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন নিয়ে একটি সংগঠন তড়িঘড়ি করে নির্বাচন আয়োজন করতে চাইছে, আরেকটি সংগঠন নির্বাচন পিছিয়ে জাতীয় নির্বাচনের সময়ের কাছাকাছি নিয়ে যেতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছে শাখা জাতীয় ছাত্রশক্তি।

অপরদিকে, ‘জকসু নির্বাচনের আচরণবিধি ও স্পোর্টস কার্নিভাল’ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শাখা জাতীয় ছাত্রশক্তি সদস্য সচিব শাহিন মিয়া বলেন, “একটি সংগঠন নির্বাচনকে পেছানোর চেষ্টা করছে, আরেকটি সংগঠন তড়িঘড়ি করে দিতে চাইছে। আমরা চাই এমন একটি নির্বাচন, যেখানে শিক্ষার্থীরা অবাধভাবে অংশ নিতে পারবে এবং সবাই সমান সুযোগ পাবে। নির্বাচন কমিশন যেন প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে একটি গ্রহণযোগ্য সময়সূচি ঘোষণা করে এবং কোনো পক্ষের প্রভাবে না পড়ে।”

তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের যে সাহসী ও নিরপেক্ষ ভূমিকা দেখানোর কথা, আজকের মতবিনিময় সভায় আমরা তা দেখতে পাইনি।”

জবি শাখার আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, “আমরা সব সময় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। আমরা চাই না যে ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে হঠাৎ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। অন্যদিকে, ছাত্রশিবির দ্রুত নির্বাচন চায়, আর ছাত্রদল সেটি পেছাতে চায়—যা নির্বাচনী পরিবেশকে জটিল করে তুলছে। জাতীয় নির্বাচন ও জকসু নির্বাচন একই সময়ে পড়লে তা প্রশাসনিকভাবেও বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।”

এর আগে, গত ৩০ অক্টোবর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেছিলেন, “আমাদের প্রত্যাশা ছিল প্রশাসন একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত জকসু নীতিমালা প্রণয়ন করবেন। কিন্তু আমরা দেখেছি, প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে, যা হতাশাজনক।”

তিনি বলেছিলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবার জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমরা চাই এটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হোক—যাতে জকসু শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচনের মুক্ত মঞ্চে পরিণত হয়, কোনো দলীয় প্রভাবের শিকার না হয়।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসু নির্বাচন নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ ছাত্র সংগঠনগুলোর