যশপ্রীত বুমরা না হয়ে ভারতের টেস্ট অধিনায়ক কেন শুবমান গিল—এ নিয়ে নানাজন নানা মত দিচ্ছেন। বুমরা এর মধ্যেই অধিনায়কত্ব নিয়ে মুখ খুললেন প্রথমবারের মতো।

ভারতকে তিনটি টেস্টে নেতৃত্ব দেওয়া এই পেসার ইংল্যান্ড সিরিজের আগে জানিয়েছেন, তিনি নিজেই অধিনায়ক হতে চাননি। রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি অবসর নেওয়ার আগেই ব্যাপারটি তিনি বিসিসিআইকে জানিয়েছেন।

সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়া সিরিজে রোহিতের অবর্তমানে দুটি টেস্টে নেতৃত্ব দেন বুমরা। কৌশলগত দক্ষতা দেখে অনেকে মনে করেছিলেন, বুমরা নিয়মিত অধিনায়ক হতে পারেন। পরে অবশ্য বুমরাকে সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।

কারণটা স্কাই স্পোর্টসে বলেছেন বুমরা, ‘এখানে কোনো মজাদার গল্প নেই। কোনো বিতর্ক নেই। আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্যাপারটা এমন না। রোহিত আর বিরাট আইপিএলের সময় টেস্ট থেকে অবসর নেন। তারও আগে আমি বিসিসিআইকে জানিয়েছিলাম। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে আমার ওয়ার্ক লোড নিয়ে কথা বলেছিলাম। আমি আমার সার্জনের সঙ্গেও কথা বলি। তিনি বলেন, আমাকে ওয়ার্ক লোড বুঝে চলতে হবে। তখনই বুঝেশুনে খেলার সিদ্ধান্তে আসি।’

আমি তিনটা টেস্ট ম্যাচ খেলার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি। অবশ্যই সংখ্যাটা নির্ধারিত নয়। প্রথম টেস্টটা নিশ্চিত। হ্যাঁ, এটা খেলবই।ইংল্যান্ড সিরিজ নিয়ে বুমরা

বুমরা যোগ করেন, ‘এরপর আমি বিসিসিআইকে ফোন করে বলি, আমাকে যেন নেতৃত্বের জন্য বিবেচনা না করা হয়। কারণ, পাঁচ ম্যাচ সিরিজে সব ম্যাচ খেলতে পারব না। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে যদি তিনটা ম্যাচে একজন অধিনায়ক হয়, আর বাকি দুইটায় অন্য কেউ—সেটা দলের জন্যও ঠিক হবে না।’

তবে বুমরা স্বীকার করেছেন, তাঁরও অধিনায়ক হওয়ার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু চোটপ্রবণ শরীরে বেশি চাপ নিলে টেস্ট ক্যারিয়ার দ্রুতই শেষ হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা ছিল তাঁর, ‘অধিনায়কত্ব একটা দায়িত্ব। কিন্তু এ ছাড়াও দলে নেতার ভূমিকায় তো থাকাই যায়। আমি সেটাই করতে চেয়েছি। আর আমি জানি, যদি সাবধান না থাকি, তাহলে ভবিষ্যতে কী হবে বলা মুশকিল। হঠাৎই হয়তো এই সংস্করণ ছাড়তে হতে পারে। আমি এমনটা চাই না।’

আরও পড়ুনরান করতে পারেন দেখাতে মা-বাবার সামনে ম্যাক্সওয়েলের ১৩ ছক্কায় সেঞ্চুরি৪ ঘণ্টা আগে

বুমরা আরও বলেছেন, ‘দলের স্বার্থেই দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা করা উচিত। আমি যেভাবে সম্ভব, সেভাবে সাহায্য করব। তবে হ্যাঁ, অধিনায়কত্ব আমার কাছেও অনেক কিছু। আমি এর জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি। কিন্তু মাঝেমধ্যে আপনাকে বড় করে ভাবতে হবে। আমি অধিনায়কত্বের চেয়ে ক্রিকেটকে বেশি ভালোবাসি।’

বুমরা কি এভাবেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জ্বলে উঠবেন?.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের সাবেক ফরেস্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম–ঘুষের অভিযোগ ইউপি সদস্যের

সুন্দরবনকেন্দ্রিক দীর্ঘদিনের অনিয়ম, ঘুষ গ্রহণ ও ব্যক্তিগত মানহানির অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য গোলাম কিবরিয়া।

আজ মঙ্গলবার সকালে কয়রা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি অবসরোত্তর ছুটিতে থাকা বন বিভাগের সাবেক ফরেস্টার তানজিলুর রহমানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলেন।

সংবাদ সম্মেলনে গোলাম কিবরিয়া বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা তানজিলুর রহমান তাঁর কর্মজীবনের বেশির ভাগ সময় সুন্দরবনের বিভিন্ন ফরেস্ট স্টেশন ও টহল ফাঁড়িতে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বিষ দিয়ে মাছ শিকার, হরিণশিকারিদের সহযোগিতা, অবৈধ প্রবেশে সহায়তা, ঘুষ গ্রহণ, অনিয়মসহ প্রতিবাদকারীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করেছেন।

গোলাম কিবরিয়া অভিযোগ করেন, গত বছর এলাকার কয়েকজন গরিব জেলে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র (বিএলসি) নিতে তাঁর (কিবরিয়ার) সহায়তা চান। বিষয়টি তিনি তৎকালীন নলিয়ান ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা তানজিলুর রহমানের কাছে জানালে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। জেলেরা তাঁর অজান্তে ধারদেনা করে টাকা পরিশোধ করলেও অবসরের আগে কোনো অনুমতিপত্র দেননি। পরে তিনি জানতে পেরে তানজিলুর রহমানের কাছে গরিব জেলেদের টাকা ফেরত চাইলে ১০ হাজার টাকা ফেরত দেন। বাকি টাকা ফেরত চাওয়ার পর থেকে তানজিলুর রহমান তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন গোলাম কিবরিয়া।

সংবাদ সম্মেলনে ইউপি সদস্য গোলাম কিবরিয়া বলেন, অপপ্রচারের একটি অডিও তাঁর হাতে এসেছে, যেখানে এক মামলার আসামিকে তানজিলুর রহমান বলছেন, বেশির ভাগ মামলার আসামির নাম তিনি কিবরিয়া মেম্বারের কাছ থেকে পেয়েছেন। সেই কথোপকথনে আরও শোনা যায়, মামলায় মুক্তি পেতে হলে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো কথা না বলে কিবরিয়া মেম্বারের বিরুদ্ধে বলার শর্ত দেন তিনি। ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি বলেন, ‘আমি কখনো সুন্দরবনে প্রবেশ করিনি; বরং অপরাধের খবর বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিয়েছি। তবুও আমার নামেই মামলা দেওয়া হয়েছে।’ তখন তানজিলুর রহমান বলেন, ‘মামলা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আমার সঙ্গে ঝামেলা কোরো না, কয়রা আদালতে গিয়ে তোমাদের পক্ষে বলে আসব।’

গোলাম কিবরিয়া অভিযোগ করেন, তানজিলুর রহমান অবৈধ উপায়ে অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন। বনজীবীদের শোষণ, ঘুষ আদায় ও অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে অর্জিত এসব সম্পদের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করলে সত্যতা স্পষ্ট হবে।

গোলাম কিবরিয়া জানান, তিনি কখনো মিথ্যা মামলায় কাউকে জড়াননি; বরং সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষায় কাজ করেছেন। তবে ফরেস্টার তানজিলুর রহমান তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে মানহানি করছেন। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ফরেস্টারের দায়ের করা মামলাগুলো নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে নির্দোষ বনজীবীদের মুক্তি ও তাঁর অবৈধ সম্পদের উৎস অনুসন্ধানে দুদকের সক্রিয় ভূমিকা চান।

এ বিষয়ে জানতে তানজিলুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনের সাবেক ফরেস্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম–ঘুষের অভিযোগ ইউপি সদস্যের