এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী : অবসরসুবিধা পেতে ভোগান্তি বাড়ছেই
Published: 27th, November 2025 GMT
বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণসুবিধার টাকা পেতে ভোগান্তি কোনোভাবেই কমছে না; বরং প্রাপ্য সুবিধা পেতে তাঁদের অপেক্ষার সময় বাড়ছেই। আগে অবসরসুবিধার টাকা পেতে দুই বছরের মতো সময় লাগত, এখন তা তিন-চার বছরে গড়াচ্ছে। অথচ হাইকোর্টের নির্দেশ আছে, শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরসুবিধার টাকা ছয় মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
সারা জীবন শিক্ষাসেবা দিয়ে নিজের প্রাপ্য অর্থ পেতে এমন দীর্ঘ অপেক্ষা শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বাড়াচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, এ সংকট সমাধানে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) ১২ নভেম্বর অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের কাছে একটি আধা সরকারিপত্র (ডিও লেটার) পাঠিয়েছেন। পত্রে পুরো পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে অবসরসুবিধা দিতে ৭ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা এবং কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ২ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
চিঠিতে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেছেন, তহবিলঘাটতির কারণে বিপুলসংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারীকে অবসর ও কল্যাণসুবিধা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নিজ ও পারিবারিক চিকিৎসা, সন্তানের বিয়ে-পড়াশোনা, বৃদ্ধ বয়সে ধর্মীয় ব্রত সম্পাদন ইত্যাদি প্রয়োজনে প্রাপ্য সুবিধার জন্য বয়োবৃদ্ধ ও গুরুতর অসুস্থ শিক্ষকেরা প্রায়ই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হন। অনেক শিক্ষক প্রাপ্য সুবিধা পাওয়ার আগেই মারা যান। তহবিলসংকটের কারণে শিক্ষকদের প্রাপ্য সুবিধা দেওয়ার ব্যর্থতা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য অত্যন্ত পীড়াদায়ক।
আবেদনের পাহাড়সারা দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত (বেতনবাবদ মাসে সরকারি অনুদান) শিক্ষক-কর্মচারী আছেন পাঁচ লাখের বেশি। এসব শিক্ষক-কর্মচারীর অবসর ও কল্যাণসুবিধা দেওয়া হয় দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। এর মধ্যে কল্যাণসুবিধার টাকা দেওয়া হয় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে। আর অবসরসুবিধার টাকা দেওয়া হয় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসরসুবিধা বোর্ডের মাধ্যমে।
অবসরসুবিধা বোর্ডের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, স্কুল পর্যায়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত করা আবেদনের সুবিধা পেয়েছেন। আর কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে। বাকিরা অপেক্ষমাণ। অবসরসুবিধার জন্য গত ৩০ জুন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৭৭৫টি আবেদন জমা ছিল।
কল্যাণ ট্রাস্টের পরিস্থিতিও অভিন্ন। সর্বশেষ ২৪ নভেম্বরের তথ্য বলছে, ৪৪ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণসুবিধার অর্থ না পেয়ে অপেক্ষায় আছেন। ট্রাস্ট সূত্র জানায়, ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত আবেদনকারীরা টাকা পেয়েছেন। ওই বছরের পরের দুই মাসের কাগজপত্র প্রস্তুত করা হলেও এখনো টাকা দেওয়া যায়নি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক হিসাব বলছে, চলতি বছরের শেষে অবসরসুবিধা পেতে আবেদনের সংখ্যা দাঁড়াবে ৮০ হাজার ৩২০। অন্যদিকে কল্যাণসুবিধার জন্য আগামী জুন পর্যন্ত আবেদনের সংখ্যা বেড়ে হবে ৫১ হাজার ৬৫৫।
শিক্ষকতা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব সরক র কল য ণ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী : অবসরসুবিধা পেতে ভোগান্তি বাড়ছেই
বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণসুবিধার টাকা পেতে ভোগান্তি কোনোভাবেই কমছে না; বরং প্রাপ্য সুবিধা পেতে তাঁদের অপেক্ষার সময় বাড়ছেই। আগে অবসরসুবিধার টাকা পেতে দুই বছরের মতো সময় লাগত, এখন তা তিন-চার বছরে গড়াচ্ছে। অথচ হাইকোর্টের নির্দেশ আছে, শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরসুবিধার টাকা ছয় মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
সারা জীবন শিক্ষাসেবা দিয়ে নিজের প্রাপ্য অর্থ পেতে এমন দীর্ঘ অপেক্ষা শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বাড়াচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, এ সংকট সমাধানে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) ১২ নভেম্বর অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের কাছে একটি আধা সরকারিপত্র (ডিও লেটার) পাঠিয়েছেন। পত্রে পুরো পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে অবসরসুবিধা দিতে ৭ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা এবং কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ২ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
চিঠিতে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেছেন, তহবিলঘাটতির কারণে বিপুলসংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারীকে অবসর ও কল্যাণসুবিধা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নিজ ও পারিবারিক চিকিৎসা, সন্তানের বিয়ে-পড়াশোনা, বৃদ্ধ বয়সে ধর্মীয় ব্রত সম্পাদন ইত্যাদি প্রয়োজনে প্রাপ্য সুবিধার জন্য বয়োবৃদ্ধ ও গুরুতর অসুস্থ শিক্ষকেরা প্রায়ই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হন। অনেক শিক্ষক প্রাপ্য সুবিধা পাওয়ার আগেই মারা যান। তহবিলসংকটের কারণে শিক্ষকদের প্রাপ্য সুবিধা দেওয়ার ব্যর্থতা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য অত্যন্ত পীড়াদায়ক।
আবেদনের পাহাড়সারা দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত (বেতনবাবদ মাসে সরকারি অনুদান) শিক্ষক-কর্মচারী আছেন পাঁচ লাখের বেশি। এসব শিক্ষক-কর্মচারীর অবসর ও কল্যাণসুবিধা দেওয়া হয় দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। এর মধ্যে কল্যাণসুবিধার টাকা দেওয়া হয় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে। আর অবসরসুবিধার টাকা দেওয়া হয় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসরসুবিধা বোর্ডের মাধ্যমে।
অবসরসুবিধা বোর্ডের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, স্কুল পর্যায়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত করা আবেদনের সুবিধা পেয়েছেন। আর কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে। বাকিরা অপেক্ষমাণ। অবসরসুবিধার জন্য গত ৩০ জুন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৭৭৫টি আবেদন জমা ছিল।
কল্যাণ ট্রাস্টের পরিস্থিতিও অভিন্ন। সর্বশেষ ২৪ নভেম্বরের তথ্য বলছে, ৪৪ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণসুবিধার অর্থ না পেয়ে অপেক্ষায় আছেন। ট্রাস্ট সূত্র জানায়, ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত আবেদনকারীরা টাকা পেয়েছেন। ওই বছরের পরের দুই মাসের কাগজপত্র প্রস্তুত করা হলেও এখনো টাকা দেওয়া যায়নি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক হিসাব বলছে, চলতি বছরের শেষে অবসরসুবিধা পেতে আবেদনের সংখ্যা দাঁড়াবে ৮০ হাজার ৩২০। অন্যদিকে কল্যাণসুবিধার জন্য আগামী জুন পর্যন্ত আবেদনের সংখ্যা বেড়ে হবে ৫১ হাজার ৬৫৫।
শিক্ষকতা