ফোরডো ধ্বংসে যুক্তরাষ্ট্রের সক্ষমতা কতটুকু
Published: 19th, June 2025 GMT
মধ্যপ্রাচ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংসের জন্য প্রয়োজনে মিলিটারি হস্তক্ষেপের ব্যাপারটি বিবেচনা করছেন। তবে এখনও চূড়ান্ত ঘোষণা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। এই অবস্থায় এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ইরানের ফোরডো পারমাণবিক স্থাপনা। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করতে হলে এই স্থাপনাটি ধ্বংস করার বিকল্প নেই। যুক্তরাষ্ট্র কি স্থাপনাটি ধ্বংস করতে সক্ষম? এ নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে দ্য গার্ডিয়ান।
ইরানের পবিত্র শহর কোমের কাছাকাছি স্থানে ফোরডো পারমাণবিক স্থাপনাটি অবস্থিত। এর মূল কক্ষগুলো মাটির নিচে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ মিটার (প্রায় ২৬০ থেকে ৩০০ ফুট) গভীরে অবস্থিত। এটি ধ্বংস করতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে বি-২ বোমারু বিমান ব্যবহার করতে হবে। এই বিমানটি ৩০ হাজার পাউন্ড (১৩.
গত দশকের মাঝামাঝিতে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে এই বোমা ছিল ২০টি। বর্তমানে এই সংখ্যা আরও বেড়েছে বলে মনে করা হয়। গত সোমবার রাতে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগেথ মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। ট্রাম্পও সাংবাদিকদের বলেন, তিনি যুদ্ধবিরতি চাচ্ছেন না। যুদ্ধবিরতির চেয়ে ভালো কিছু তাঁর লক্ষ্য। তবে এই লক্ষ্য হতে পারে ‘ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংসের পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা’।
মধ্যপ্রাচ্য যখন উত্তপ্ত, তখন পেন্টাগন ইরানের বিরুদ্ধে দূরপাল্লার বিমান হামলার কথা বিবেচনা করছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। বি-২ বোমারু বিমান একবার জ্বালানি নিয়ে ৬ হাজার মাইল পাড়ি দিতে পারে। গত বছরের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরির হোয়াইটম্যান ঘাঁটি থেকে ৮ হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে পাঁচটি ভূগর্ভস্থ হুতি স্থাপনায় হামলা করতে এই বিমান ব্যবহার করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য যদি হয় ফোরডো, তাহলে দেশটিকে দক্ষিণ মহাসাগরের দিয়াগো গার্সিয়া ঘাঁটি ব্যবহার করতে হবে।
কারণ, এই ঘাঁটি থেকে ফোরডোর দূরত্ব সবচেয়ে কম– ৩ হাজার ২০০ মাইল। তবে সেখানে হামলা করে ফেরার পথে বিমানের জ্বালানি শেষ হয়ে যাবে। গত শুক্রবার ইরানে হামলার প্রথম দিনই ইসরায়েল ফোরডো স্থাপনায় হামলা করেছিল। তবে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা জানিয়েছে, হামলায় ফোরডোর কোনো ক্ষতি হয়নি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাবিষয়ক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের বিমান বিশেষজ্ঞ জাস্টিন ব্রঙ্ক মনে করেন, ফোরডো ধ্বংস করতে হলে একাধিক আঘাত করতে হবে। প্রথম আঘাতের ফলে সৃষ্ট গর্তে দ্বিতীয় বোমাটি ফেলতে হবে। একটি বি-২ বিমান দুটি বোমা বহন করতে পারে। তবে স্থাপনাটি পুরোপুরি ধ্বংস করতে হলে অতিরিক্ত অন্যান্য সামরিক সরঞ্জামের দরকার হবে। সঠিক গভীরতায় বোমার বিস্ফোরণ না হলে ফোরডো নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব হবে না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ধ ব স করত ধ ব স কর এই ব ম লক ষ য
এছাড়াও পড়ুন:
ইসি মেরুদণ্ডহীন প্রতিষ্ঠান: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, তাঁরা যতই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন, ততই বুঝতে পারছেন, এটি একটি ‘মেরুদণ্ডহীন’ প্রতিষ্ঠান।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল। পরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, নির্বাচন কমিশনের কোথায় কোথায় সমস্যা, তা তাঁরা জনগণের সামনে তুলে ধরছেন। ইসি যে মেরুদণ্ডহীন একটি প্রতিষ্ঠান, তা তাদের কাজের মধ্য দিয়ে আস্তে আস্তে প্রকাশ পাবে। তিনি বলেন, আগে ভোট দেওয়ার অধিকার থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এবার ভোট ‘নেওয়ার’ অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য পাঁয়তারা হচ্ছে। এনসিপি এখনো ইসির দুর্বলতা ও ভুলগুলো তুলে ধরে সংশোধনের সুযোগ দিচ্ছে।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, নির্বাচন কমিশন দেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তাঁরা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে দেখেছেন, এই প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ অঙ্গজুড়ে সামরিক উর্দি পরা পোশাকে ও বাকিটুকু দলীয় পোশাকে আবৃত।
এই নির্বাচন কমিশনের অধীন এনসিপি নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমরা আপাতত যে অবস্থায় আছি, সেটা আমরা বলেছি। যে গত ১৫ বছরে ভোট দিতে পারে নাই। এখনো ভোট নেওয়ার সিস্টেম নাই। যদি আমি ভোট নিতেই না পারি, জনগণ যদি আমাকে ভোট দিতে আসে, আর আমাকে যদি বাধাগ্রস্ত করা হয়, ভোট নেওয়ার জন্য, তো সেখানে যখন আমি বুঝব আমাকে ভোট নিতে দিবে না, সেখানে গত ১৫ বছরে তো অনেকে ভোটে অংশগ্রহণ করে নাই। যদি আমাকে ভোট না দিতে দেয় তারা, তাহলে আমি কেন অংশগ্রহণ করব? কিন্তু এই প্রক্রিয়াটা এখনো অ্যান্ডিং প্রসেসে আসে নাই।’
নির্বাচন কমিশনকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘ইলেকশন কমিশন যদি সামরিক উর্দি পরে, দলীয় উর্দি পরে তার মেরুদণ্ড বিকিয়ে দিতে চায় এবং ভোট না দিতে চায়, তাহলে ফাইনালি হয়তোবা এ সিদ্ধান্তে যেতে আমরা বাধ্য হব।’
এ সময় এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
জহিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, নিবন্ধনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইসির পক্ষ থেকে এনসিপিকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল। ইসির কিছু পর্যবেক্ষণ ছিল। সে পর্যবেক্ষণগুলোর আলোকে কিছু নতুন ডকুমেন্ট তাঁরা আজ ইসির কাছে জমা দিয়েছেন।