ঘটককে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর কনের বাবার
Published: 19th, June 2025 GMT
বিয়ের পর নবদম্পতির মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় উপহার দেওয়ার কথা বলে ঘটককে বাড়িতে ডেকে এনে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার (১৫ জুন) বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের সূত্রাপুর গোয়ালপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার মজিবর শেখ একই ইউনিয়নের ওমরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় মজিবরের ছোট ভাই নজরুল শেখ শেরপুর থানায় চারজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
গত ৯ জুন জহুরুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া খাতুনের সঙ্গে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার ঘাসুরিয়া গ্রামের মুন্নার বিয়ে হয়। বিয়ের ঘটক ছিলেন মজিবর শেখ। বিয়ের পর থেকে নবদম্পতির মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল কনের পরিবার। রোববার উপহার হিসেবে লুঙ্গি দেওয়ার কথা বলে কনের বাবা জহুরুল ইসলাম ঘটক মজিবর শেখকে বাড়িতে ডেকে নেন। এরপর তাঁকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে স্যান্ডেলের সঙ্গে গরুর গোবর লাগিয়ে লাঠি দিয়ে হাতে, পায়ে ও মাথায় মারধর করা হয়। খবর পেয়ে মজিবরের ভাই নজরুল শেখ তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। গতকাল তিনি বাড়ি ফিরেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাজিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, আহত মজিবর শেখকে রোববার হাসপাতালে আনা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তাঁর শরীরে মারধরের একাধিক চিহ্ন রয়েছে।
ভুক্তভোগী মজিবর শেখ বলেন, ‘জহুরুল ইসলাম আমাকে বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর গাছের সঙ্গে বেঁধে এক ঘণ্টা বেধড়ক মারধর করেন।’
কনের বাবা জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘৯ জুন মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়েছি। বিয়ের দুইদিন পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেয়ে ও আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার শুরু করেন। তারা আমাদের মেনে নিতে পারছেন না। বিয়ের আগে ঘটক জানিয়েছিলেন ছেলের পরিবার খুব ভালো। এ কারণে তাঁকে বাড়িতে ডেকে এনে সামান্য মারধর করা হয়েছে।’
মজিবর শেখের ছেলে সোনাউল্লাহ শেখ বলেন, ‘বাবা পেশাদার ঘটক নন। টাকা নিয়ে ঘটকালি করেন না। উপহারের কথা বলে ডেকে নিয়ে তাঁকে যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তা অমানবিক।’
শেরপুর থানার ওসি মঈন উদ্দিন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মারধরের সত্যতা মিলেছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম রধর ম রধর র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলন কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সিলেট কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ২২ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে নগরের আম্বরখানাস্থ বাসদ কার্যালয় থেকে তাদের আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বাসদ নেতারা অভিযোগ করেছেন, সকালে নিয়মিত পাঠচক্র চলাকালে হঠাৎ পুলিশ কার্যালয় ঘেরাও করে নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দিল শিবির
বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে এগিয়ে নিতে সিকৃবি উপাচার্যের অঙ্গীকার
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আজ (শনিবার) ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা নগরে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করেছিল। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগের সত্যতা মিললে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। গ্রেপ্তারদের নাম পরবর্তীতে জানানো হবে।’’
বাসদের সিলেট জেলা সভাপতি আবু জাফর বলেন, ‘‘ব্যাটারিচালিত রিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ (শনিবার) চৌহাট্টা থেকে আমাদের পূর্বঘোষিত ‘ভুখা মিছিল’ কর্মসূচি ছিল। কিন্তু শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতে পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর আমরা কর্মসূচি স্থগিত করি। তবে সব শ্রমিককে তা জানানো সম্ভব হয়নি। সকালে শহীদ মিনার এলাকায় কয়েকজন শ্রমিক জড়ো হন। কিন্তু কার্যালয়ে শুধু পাঠচক্র চলছিল। সেখানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২২ নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে গেছে।’’
এর আগে একই ইস্যুতে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মধ্যরাতে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ী এলাকার বাসা থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমনকেও আটক করে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকরা। ওই সময় আনোয়ার হোসেন সুমনসহ কয়েকজন বামঘরানার রাজনীতিকও আন্দোলনে অংশ নেন। আন্দোলনকারীরা ব্যাটারি রিকশা চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরে তা মেনে নিতে রবিবার (২ নভেম্বর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। সেই আলটিমেটাম শেষ হওয়ার একদিন আগে সিপিবির সুমন ও বাসদের ২২ নেতাকর্মীকে আটক করা হলো।
শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে সংঘাতের আশঙ্কায় রবিবারের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’
গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে শতাধিক রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর থেকে নগরে ব্যাটারি রিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা/নুর/বকুল