ইরানের আরাক শহরের কাছে নির্মাণাধীন একটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলায় ‌‘গুরুত্বপূর্ণ ভবন’ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। হামলায় সেখানে ভারী পানির পারমাণবিক চুল্লির পানিশোধন ইউনিটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান বৃহস্পতিবার আরাকের খোনদাব পরমাণু স্থাপনায় ভারী পানির রিয়্যাক্টরে বোমাবর্ষণ করা হয়। তবে আইএইএ জানিয়েছে, পারমাণবিক চুল্লিটি এখনও চালু হয়নি। সেটি বর্তমানে নির্মাণাধীন। ওই স্থাপনায় কোনো পারমাণবিক পদার্থ ছিল না। খবর-বিবিসি

হেভি ওয়াটার রিয়্যাক্টর ঠান্ডা রাখার জন্য এক ধরনের বিশেষ রাসায়নিক পানি ব্যবহার করা হতো। আরাক স্থাপনার মতো রিয়্যাক্টরগুলো বিজ্ঞান গবেষণার জন্য ব্যবহার করা যায়। এর অবস্থান তেহরান থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। তবে এই রিয়্যাক্টরে উপজাত হিসেবে প্লুটোনিয়াম তৈরি হয়, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

বৃহস্পতিবার ম্যাক্সার টেকনোলজির প্রকাশিত একটি স্যাটেলাইট ছবিতে ইসরায়েলি হামলার পর মধ্য ইরানের আরাকের ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা রাতভর অভিযানের সময় ইরানের আরাকের একটি ‘নিষ্ক্রিয় পারমাণবিক চুল্লিতে’ আঘাত করেছে। এছাড়া ইরানের নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনা আবারও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে।

আইএইএ-এর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি এক বিবৃতিতে বলেন, ইসরায়েলি হামলার ফলে এখন পর্যন্ত ‘গুরুতর তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর ঘটনা’ ঘটেনি। তবে ‘তেজস্ক্রিয় দুর্ঘটনার ঝুঁকি’ এখনও রয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এই কঠিন ও জটিল পরিস্থিতিতে আইএইএয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলো নির্ধারিত সময়ে এবং নিয়মিতভাবে পারমাণবিক স্থাপনাগুলো নিয়ে কারিগরি তথ্য পাওয়া।’ 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র আর ক ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত