হোতারা গ্রেপ্তার হলেও থামেনি মাদক কারবার
Published: 26th, June 2025 GMT
রাজধানীতে মাদকের অন্যতম ‘হটস্পট’ মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। এ সময় জব্দ করা হয় মাদক বিক্রির ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এই টাকা ক্যাম্পের ৭ নম্বর সেক্টরের জি ব্লকের একটি ফার্মেসিতে রাখা ছিল।
সেখানকার শীর্ষ মাদক কারবারি ভূঁইয়া সোহেল ওরফে বুনিয়া সোহেল ওই টাকা রাখতে বাধ্য করেছিল বলে দাবি করেন ফার্মেসির মালিক। এই অভিযান থেকে ধারণা পাওয়া যায়, ক্যাম্পে কী পরিমাণ মাদক কেনাবেচা হয়। এ কারণেই বারবার অভিযান চালিয়ে একের পর এক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হলেও বন্ধ হয় না ক্যাম্পের মাদক কারবার।
বিগত এক দশকে দাপটের সঙ্গে ক্যাম্পে মাদক কারবার চালিয়ে আসা ভূঁইয়া সোহেল, চুয়া সেলিম ও সৈয়দপুরিয়া বাবুসহ ‘মাদক মাফিয়া’দের অনেককেই গত কয়েক মাসে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে থেমে নেই মাদক কারবার। শুধু পুরোনোর বদলে এসেছে নতুন মুখ। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তারা নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ক্যাম্পের।
এদিকে মামলার বোঝা মাথায় থাকলেও গ্রেপ্তারের কয়েক মাসের মধ্যে জামিন পেয়েছে ভূঁইয়া সোহেল ও চুয়া সেলিম। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ‘চিহ্নিত’ হওয়ায় তারা এখন সামনে আসছে না। তবে ‘শান্তি গ্রুপ’ নামে একটি পুরোনো মাদক কারবারি চক্রকে নেপথ্যে থেকে পরিচালনা করছে। চক্রটি প্রায় দেড় দশক নিষ্ক্রিয় ছিল। এখন তারা সৈয়দপুরিয়া বাবুর অবর্তমানে তার স্থানটি দখল করেছে। তারা ক্যাম্পের ৭ নম্বর সেক্টর, সি-ব্লক, স্কুল গলি ও স্পোর্টিং ক্লাব এলাকায় মাদক কারবার চালাচ্ছে। এই চক্রে আছে পোপলা মুন্না, পিচ্চি ইমরান, বেজি নাদিম, রহমত, রসুল, আজম, সগীর, দাগী রুবেল ও সাঈদ।
এ বিষয়ে ক্যাম্পের নন লোকাল রিলিফ কমিটির নবনিযুক্ত চেয়্যারম্যান মুরাদ কাদেরী সমকালকে বলেন, ক্যাম্পে কারা মাদক কারবার চালায়, তা প্রশাসন জানে। তবে দেখা যায়, অভিযান শুরুর আগেই মাদক কারবারের হোতারা খবর পেয়ে সটকে পড়ে। অভিযানে ধরা পড়ে ছোটখাটো বিক্রেতা আর নিরপরাধ মানুষ। ফলে কারবার বন্ধ হয় না।
সরেজমিন জানা যায়, ভূঁইয়া সোহেল আড়ালে থাকলেও তার ভাই টুনটুন কারবারের হাল ধরেছে। তার নেতৃত্বে একটি দল ক্যাম্পের ৭ নম্বর সেক্টরের আলফালাহ মডেল ক্লিনিক এলাকার হেরোইন, ইয়াবা ও গাঁজা বিক্রি করে। সেই সঙ্গে মেলে ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান বলেন, জেনেভা ক্যাম্পে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। সব মাদক কারবারিকে আইনের আওতায় আনা হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় তাঁর বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী শহীদ মিনার এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করার খবর পাওয়া গেছে। রাত সাড়ে আটটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে মিছিল করছিলেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী।
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আসলাম চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে দেন। এ সময় তাঁরা ‘দুর্দিনের আসলাম ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’ ‘আসলাম ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ এমন স্লোগান দেওয়া হয়।
বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, আসলাম চৌধুরী দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন। তিনি দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়ে কারাবন্দী হন। দীর্ঘ সময় তিনি জেল-জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছেন। অথচ এখন সুসময়ে দল তাঁকে বঞ্চিত করছে। তাঁরা দলের এ সিদ্ধান্ত মানেন না। তাই প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তাঁরা।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. মোরসালীন প্রথম আলোকে বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থী ঘোষণার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা যে যাঁর জায়গা থেকে মহাসড়কে উঠে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁরা অন্তত সীতাকুণ্ডের ৩০টি স্থানে মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
ঘোষিত প্রার্থী কাজী মুহাম্মদ সালাউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব কাজী মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ছোট ভাই। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম তাঁকে যোগ্য মনে করেছেন বিধায় তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চান। এর আগে ২০১৪ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন।
ফৌজদারহাট পুলিশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কের মাথা, ফৌজদারহাট, জলিল গেইট, ভাটিয়ারী, মাদামবিবিরহাট, কদমরসুল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ রয়েছে। ফলে উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ। পুলিশ বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের সরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।