বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেছেন, আমার দলের কেউ যদি দখলবাজি, চাঁদাবাজি, জমি দখল, বালুরঘাট দখলসহ কোনো অন্যায় করে থাকেন তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। আপনারা এগুলো থেকে দূরে থাকবেন। এগুলো যদি করেন দলের বদনাম হবে। সেই বদনাম আমি আমার ঘাড়ে নেবো না। দলও দলের ঘাড়ে নেবে না।

তিনি বলেন, আপনাদের বুঝতে হবে ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও আছে। আপনারা এটা করলে ফ্যাসিবাদের দোসররা উপকৃত হবে। তারা আপনাদের সঙ্গে মিশে সাধারণ মানুষের ক্ষতি করবে আর সকল দায়ভার আপনাদের কাঁধে চাপানোর চেষ্টা করবে। তাই আমার পরিষ্কার কথা। আপনারা ভালো কাজ করবেন, কোনো অন্যায় কাজের সাথে জড়িত হবেন না, জনগণের পাশে থাকেন।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বিএনপি কর্মী সমীর সাহার মায়ের মৃত্যুতে শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানাতে গিয়ে এক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শামা ওবায়েদ বলেন, অন্যায়কে আমি প্রশ্রয় দেবো না, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও প্রশ্রয় দেন না, তারেক রহমানও প্রশ্রয় দেয় না, বিএনপিও প্রশ্রয় দেয় না। সুতরাং, যে অন্যায় করবেন, সে নিজ দায়িত্বে করবেন। বিএনপি এখন সরকারে নেই। এখন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, সালথা ও নগরকান্দা উপজেলা প্রশাসনকে আমি অনুরোধ করেছি যে, সালথা-নগরকান্দার আইন-শৃঙ্খলা ঠিক রাখার  জন্য সাধারণ মানুষকে সুখে-শান্তিতে রাখতে কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করা যাবে না। যদি বিএনপির কোনো নেতাকর্মী কোনো অনৈতিক কাজে জড়িত হয়। সে যদি আমার কাছের লোকও হয়, বিএনপি'র কাছের লোকও হয়, তাকে আইনের আওতায় আনবেন। এটা আমার পরিষ্কার কথা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সালথা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান তালুকদার, উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আছাদ মাতুব্বর, নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান মুকুল, সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যার্টনি জেনারেল জুয়েল মুন্সি সুমন, ফরিদপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম-সম্পাদক তৈয়বুর রহমান মাসুদ, সালথা উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শাহীন মাতুব্বর, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার খায়রুল বাসার আজাদ, অ্যাডভোকেট জাহিদ হোসেন লাবলু, মো.

শাহিনুর রহমান শাহিন, সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবুল বাসার, বিএনপি নেতা আ. রব, ডা. কামরুল ইসলাম, হুমায়ুন খান, মো. রাশেদ মিয়া, মুরাদ মাতুব্বর, যুবদল নেতা হাসান আশরাফ, এনায়েত হোসেন, কামরুল ইসলাম, বালাম হোসেন, শাফিকুল ইসলাম, চৌধুরী মামুন, মো. মিরান হুসাইন, খোকন মাতুব্বর, আনিসুর রহমান, ইয়াসিন মোল্যা, শ্রমিক দল নেতা কালাম বিশ্বাস, ছাত্রদল নেতা রেজাউল ইসলাম রাজ, সাইফুল আলম, মেহেদী হাসান সোহাগ সহ বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ম ত ব বর র রহম ন ব এনপ র ল ইসল ম অন য য উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

খানাখন্দে ভরা সড়কে মৃত্যুঝুঁকি

সড়কে খানাখন্দ। কোথাও পিচঢালাই আছে, কোথাও নেই। বৃষ্টিতে পানি-কাদায় একাকার। দিন দিন এসব খানাখন্দ বড় আকার ধারণ করছে। তাতে প্রতিদিন উল্টে পড়ছে যানবাহন। আহত হচ্ছেন যাত্রীরা। কাদাপানি ছিটকে কাপড়চোপড় নষ্ট হচ্ছে। এমন দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছে মানুষ।

এ চিত্র ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার অংশের। স্থানীয় ব্যক্তিরা সড়কটি সংস্কারে বারবার দাবি জানালেও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কয়েকদিনের টানা বর্ষণে মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে সড়কটি। 

সরেজমিন দেখা যায়, ফরিদপুর সদরের বাখুন্ডা, নগরকান্দা উপজেলার মহিলা রোড, তালমা ও পুখুরিয়া এলাকার সড়কের বেশি নাজুক অবস্থা। গাড়ি চালানোর কোনো উপায় নেই। রাস্তা গর্তে ভরা।  গর্তে চাকা পড়ে প্রায়ই বিকল হয় যানবাহন। এর পরও বিকল্প না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই চলছে বাস, ট্রাক, লরি, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত যানবাহনসহ থ্রি-হুইলার।

শনিবার ঢাকা থেকে রোগী নিয়ে ফরিদপুরে এসেছিলেন অ্যাম্বুলেন্স চালক কাশেম বেপারী। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর আসতে দেড় ঘণ্টা সময় লেগে গেছে। রাস্তা এমনই বেহাল যে, ঝাঁকুনিতে রোগী আরও অসুস্থ পড়ে। বড় বড় গর্ত বৃষ্টির কারণে চোখে পড়ে না। রাতের বেলা গাড়ি চালাতে ভয় লাগে। 

একই দিন নগরকান্দার মহিলা রোড এলাকায় দেখা যায় মালবাহী একটি লরি বিকল হয়ে পড়ে আছে। লরিটির সামনের দুটি চাকা পুরোপুরি নষ্ট। গাড়িটি বগুড়া থেকে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল। 

চালক আকবর হোসনে বলেন,  রাস্তার জঘন্য অবস্থা। গাড়ি চালানোর কোনো কায়দা নেই। গর্তে পড়ে ঝাঁকুনি খেয়ে গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। মিস্ত্রি আসবে, তারপর গাড়ি ঠিক করা হবে। এতে  ৩০ হাজার টাকা লেগে যাবে। দুপুরে আরও একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উল্টে কয়েকজন যাত্রী আহত হন। 

স্থানীয় বাসিন্দা  ফয়েজুল বারী জানান, এই এলাকায় প্রতিদিন অটোরিকশা উল্টে যাচ্ছে। তিনি দ্রুত রাস্তা সংস্কারসহ চার লেনের দাবি জানান।

সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার সড়কটির সংস্কারের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯ কোটি টাকা। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সংস্কারকাজ শুরু করা হয়নি। বাখুন্ডা এলাকায় ইট-বালু দিয়ে গর্ত ভরাট করতে দেখা যায় সড়ক বিভাগকে। 

সড়কটি সংস্কারের পাশাপাশি দ্রুত চার লেনে করার দাবিতে সরব হয়ে উঠেছে জেলার সর্বস্তরের মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে সপক্ষে প্রচারণা। ‘ফরিদপুর-ভাঙ্গা মহাসড়ক চার লেন দ্রুত বাস্তবায়ন’ নামে একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির পক্ষ থেকে মানববন্ধন, সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ১৩ জুলাই রোববার বেলা ১১টায় ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ ফরিদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী  খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার বলেন, দুটি প্যাকেজের আওতায় সড়ক মেরামতের জন্য ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তবে জরুরি ভিত্তিতে সড়কের খানাখন্দ ভরাটের কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ৩২ কিলোমিটারের এই মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খানাখন্দে ভরা সড়কে বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি
  • খানাখন্দে ভরা সড়কে বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি৷
  • খানাখন্দে ভরা সড়কে মৃত্যুঝুঁকি