গুগলের ‘এআই ওভারভিউ’–সুবিধায় সার্চ ফলাফলের ওপরের অংশেই এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি সংক্ষিপ্ত তথ্য দেখা যায়। ফলে কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশ না করেই অনলাইন থেকে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য জানতে পারেন ব্যবহারকারীরা। গত বছর এই সুবিধা চালুর পর থেকে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্রাফিক কমে গেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টার। তবে গুগল জানিয়েছে, পিউ রিসার্চ সেন্টার পরিচালিত গবেষণার পদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ এবং এতে সার্চ ট্রাফিকের প্রকৃত চিত্র প্রতিফলিত হয়নি।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের গবেষণায় বলা হয়েছে, গুগল সার্চে ব্যবহারকারীর প্রশ্নের ওপর ভিত্তি করে শীর্ষে যে এআই সারাংশ দেখানো হয়, সেখানে অনেকেই প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে যান। ফলে তাঁরা আর মূল উৎস; অর্থাৎ ওয়েবসাইটে ক্লিক করে প্রবেশ করেন না। ফলে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটগুলোর ট্রাফিক সংখ্যা কমছে। আর তাই গুগলের এআই ওভারভিউ–সুবিধা চালুর পর থেকে অনেক ওয়েবসাইটের মালিক ও কনটেন্ট নির্মাতা অর্গানিক ট্রাফিক কমে যাওয়ার অভিযোগ করছেন। কেউ কেউ জানিয়েছেন, ট্রাফিক এতটাই কমে গেছে যে অনেকেই ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। কেউ আবার আধেয় (কনটেন্ট) প্রকাশের ধরন বদলে ফেলেছেন।

বাজার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সিমিলার ওয়েবের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি বড় সংবাদমাধ্যমের অর্গানিক সার্চ ট্রাফিক গত এক বছরে হ্রাস পেয়েছে। এই প্রবণতা শুধু বড় প্রতিষ্ঠানেই ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়; ছোট ও স্বাধীন ওয়েবসাইটগুলোর ট্রাফিকও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) বিশ্লেষকেরাও জানিয়েছেন, এআই ওভারভিউ চালুর পর থেকে সার্চ রেজাল্টে ক্লিকের হার কমেছে। ব্যবহারকারীরা আগের মতো আর সংশ্লিষ্ট লিংকে ক্লিক করছেন না।

গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুন্দর পিচাই জানিয়েছেন, ‘আমরা এখন আরও বৈচিত্র্যময় উৎস থেকে মানুষকে তথ্যের কাছে নিয়ে যাচ্ছি। কেউ কেউ হয়তো আগের চেয়ে কম ট্রাফিক পাচ্ছেন, কিন্তু সার্বিকভাবে ব্যবহারকারীরা বেশি কনটেন্ট দেখছেন।’

সূত্র: ম্যাশেবল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ গল র

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরোর দিন ফুরিয়ে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর বিবিসির। 

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করতে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিবিএস নিউজের ৬০ মিনিটসকে বলেন, “আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করছে।”

আরো পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয়।

ট্রাম্প এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান মাদক বন্ধ করার লক্ষ্যে নয়, বরং ট্রাম্প বিরোধী মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ‘অনেক কিছু’ সম্পর্কে।

বিবিসির মার্কিন নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে।

সম্প্রতি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলায় আপনি যেসব নৌযানে বিস্ফোরণ হতে দেখেন, তার প্রতিটিতে অন্তত ২৫ হাজার মাদকদ্রব্য ধ্বংস হয়। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহের জন্য দায়ী।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থলপথে ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প তা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “আমি এটা বলতে চাই না যে আমি এটা করব...আমি ভেনেজুয়েলার সাথে কী করব, আমি তা করব কিনা, তা আমি বলব না।”

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর অভিযোগ, নৌযানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘আধিপত্য বিস্তার’ করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প জানান, তার সরকার ‘সারা বিশ্ব থেকে’ সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘আসতে’ দেবে না।

তিনি বলেন, “তারা কঙ্গো থেকে আসে, তারা সারা বিশ্ব থেকে আসে, তারা আসছে, কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নয়। তবে বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা- খারাপ। তাদের গ্যাং আছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়ার’ নাম উল্লেখ করেন। তিনি এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গ্যাং’ হিসেবে অভিহিত করেন।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাদক পাচারকারী সংগঠন ও অপরাধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া এবং কার্টেল অব দ্য সানস, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা পরিচালনা করে। তবে কারাকাস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ