বিছানা সাজাতে বা গোছাতে কত জিনিষই প্রয়োজন। তোষক, জাজিম, বালিশ এসব দিয়েই সাজিয়ে তোলা হয় বিছানাটি। দিন শেষে মানুষ বিছানায় এলিয়ে দেয় ক্লান্ত শরীর। আর সেখানেই বিপত্তি !শরীরের ঘাম, জীবাণু মিশে একাকার হয়ে যায় বিছানায়। প্রতিদিন ব্যবহারের ফলে শক্ত হয়ে যায় মাথার নিচের বালিশটি। এমনকি পিঠের নিচের তোষক বা জাজিমও। নিয়ম করে যত্ন নিলেই এই অতি প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ভালো রাখা সম্ভব।

এ বিষয়ে গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ গৃহব্যবস্থাপনা ও গৃহায়ণ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রীনাত ফওজিয়ার পরামর্শ জেনে নিন

বালিশের যত্নে
বালিশ নিয়ম করে রোদে দিতে হয়। আর সুযোগ থাকলে সেটা করা উচিৎ প্রতিদিন। তা যদি সম্ভব না হয় অন্তত দুই-তিন দিন পর পর বালিশ রোদে দেবেন। দীর্ঘ দিন রোদে না দিলে, বালিশের তুলা চুপসে যায়। বাজে গন্ধ হয়। এটা থেকে রোগ জীবাণু ছড়ায়। 

তোষকের যত্নে
বালিশ সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নেয়া যায়। কিন্তু তোষকের বেলায় এই কাজটা একটু কঠিন। তারপরও তোষক রোদে দিতে হবে ১৫ দিন, এক মাস পর পর। দুই- তিন মাস পর পর তোষক উল্টিয়ে বিছাতে হবে। তোষকে কাভার ব্যবহার করতে পারলে ভালো। এতে ময়লা জমলে ধুয়ে নিতে পারবেন।

জাজিমের যত্ন
জাজিম রোদে দেবার জন্য রোদ ঝলমলে একটা দিন বেছে নেবে। এই-রোদ আবার এই বৃষ্টি এমন দিনে জাজিম রোদে দিতে যাবে না। হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজিয়ে দিতে পারে তোমার জাজিমটা। ৩ মাসে অন্তত একবার জাজিম রোদে দেবে। 

প্রতিদিন একটু একটু
রোদেলা দিনে বিছানায় যেন রোদ পড়ে এজন্য খোলা রাখবে জানালা। একটা কথা, যখন দেখবে রোদে দিলেও বালিশ, তোষক বা জাজিমের তুলা ফুলে উঠছে না তখন বুঝবে সেটি পাল্টানোর সময় হয়েছে। না পাল্টালেউ  ভেঙে নতুন করে বানিয়ে নেয়া ভালো।

কোথায় পাবেন
রাজধানীর নিউ মার্কেট, কারওয়ান বাজার সুপার মার্কেট, মৌচাক মার্কেটে পাওয়া যাবে জাজিম, তোষক এবং বালিশ। কমলাপুর বাজার রোড ও সাইন্সল্যাবের বিভিন্ন দোকানেও মিলবে এসব জিনিষ।


বিভিন্ন ক্রেতা-বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা গেল, জাজিম প্রধানত তিন মাপের হয় ৬/৭ফুট, ৫/৭ফুট এবং ৪/৭ফুট হয়। আকারভেদে জাজিমের দাম কম বেশি হতে পারে। 

তোষকের পরিমাপ জাজিমের আকারেই হয়। বালিশের আকারেও রয়েছে ভিন্নতা।

সবচেয়ে বেশি চলে ১৮/২৪ ইঞ্চি মাপের বালিশ। প্রতিটির দাম পড়বে, ৬০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা।

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র যত ন

এছাড়াও পড়ুন:

থমথমে পরিস্থিতিতে এক পক্ষের বিক্ষোভের ডাক

চট্টগ্রামের রাউজানে গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ-গোলাগুলিতে অর্ধশত নেতা-কর্মী আহত হওয়ার ২২ ঘণ্টা পরও মামলা করেনি কোনো পক্ষ। ঘটনার পর থেকে পুরো উপজেলায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ অবস্থায় বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। আজ বুধবার বিকেল চারটায় উপজেলা সদরের মুন্সির ঘাটায় এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে রাউজানের সত্তারঘাট এলাকায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ছররা গুলিতে আহত হন গোলাম আকবর খন্দকার নিজেও। তিনি দাবি করেন, তাঁর গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে গিয়াস উদ্দিন কাদেরের নির্দেশে। এতে দুই পক্ষের অর্ধশত নেতা-কর্মী আহত হন।

সংঘর্ষের পর গতকাল রাতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল রাত আটটার দিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক চিঠিতে কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। জানতে চাইলে বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন উত্তর জেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বেলায়েত হোসেন। এ ছাড়া আরেকটি চিঠিতে স্থগিত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর পদও।
এ ঘটনার পর গোলাম আকবর খোন্দকার পক্ষের লোকজন মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে। দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত থাকায় নতুন করে সহিংসতার আশঙ্কা করছেন উপজেলার বাসিন্দারা।

গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী রাউজান উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি নিজেও আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁর পা ভেঙে দিয়েছেন গিয়াস কাদেরের লোকজন। গোলাম আকবরকেও তাঁরা গুলি করেছেন। তিনি বলেন, তাঁরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আজকের মধ্যে মামলার এজাহার দেওয়া হবে। পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলন করে হামলার বিস্তারিত তুলে ধরবেন।

গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী এবং উপজেলা বিএনপির প্রচার বিভাগের আহ্বায়ক কাজী সরোয়ার খান প্রথম আলোকে বলেন, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আজ বিকেলে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল করবেন। সেখান থেকে অপপ্রচারের জবাব দেওয়া হবে।

ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করে স্ট্যাটাস, ছবি ও ভিডিও শেয়ার করছেন বিএনপির দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা। এতে পাল্টা উত্তেজনা ও পুনরায় সহিংস ঘটনা ঘটার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া আজ বেলা একটায় প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের হামলা সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো পক্ষ মামলা করেনি। কাউকে গ্রেপ্তারও করা যায়নি। মামলা করলে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।

উল্লেখ্য, রাউজানে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত সহিংসতায় মোট ১৩টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১০টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয় অন্তত শতাধিকবার। তিন শতাধিক মানুষ এসব ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ