অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ
Published: 29th, July 2025 GMT
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে।
আগামী বছরের ১-২৩ মার্চ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে নারী এশিয়া কাপ। ১২ দলের এই টুর্নামেন্টের ড্র সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ দুপুরে। যেখানে শক্তিশালী গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ।
‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তান, চীন ও উত্তর কোরিয়া। জাঁকজমকপূর্ণ ড্রতে বাংলাদেশ ছিল চার নম্বর প্লটে। সঙ্গী ছিল ইরান ও ভারত। গ্রুপিং ড্রতে টুর্নামেন্টের একমাত্র অভিষিক্ত দল বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপের তৃতীয় দল নির্বাচিত হয়।
পরের রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপের চতুর্থ দল হয় উজবেকিস্তান। এরপর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চীন বাংলাদেশের গ্রুপের দ্বিতীয় দল হয়। সবশেষ দল হিসেবে এই গ্রুপে যুক্ত হয় উত্তর কোরিয়া। যারা ২০১০ সালে প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল।
ড্র অনুষ্ঠানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও এএফসি অংশগ্রহণকারী সকল দেশের অধিনায়ক ও কোচকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রথমবার নারী এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের কেউ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। গতকাল অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কোচ, খেলোয়াড়রা ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করে হারবার ব্রিজের সামনে। সেখানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ছাড়া, তাইওয়ান,ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল দুর্বার। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ পড়েছিল কঠিন ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল বাহরাইন (র্যাঙ্কিং ৯২), তুর্কমেনিস্তান এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (র্যাঙ্কিং ৫৫)। র্যাঙ্কিংয়ের বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাঠের পারফরম্যান্সে বোঝার উপায় ছিল না।
প্রথম ম্যাচেই বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ঋতুপর্ণার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ২-১ ব্যবধানে হারায় মিয়ানমারকে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকেও ছাড়েনি মেয়েরা। ৭-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় তারা।
এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। আগামী বছর মার্চে বসবে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে খেলবে ১২টি দেশ।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের সংবর্ধনা দিল জাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শহীদ পরিবারদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এ সময় জুলাই হত্যার বিচার ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনের আকুতি জানানো হয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় জহির রায়হান মিলনায়তনে এ সংবর্ধনার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান।
আরো পড়ুন:
জুলাই শহীদদের স্মরণে জাবি ছাত্রদলের বৃক্ষরোপণ
জাবি ছাত্রদলের ১৫ নেতাকে অব্যাহতি
এতে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও ১০ শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
এসব শহীদরা হলেন, আলিফ আহম্মদ সিয়াম, শ্রাবণ গাজী, শাইখ আস-হা-বুল ইয়ামিন, নাফিসা হোসেন মারওয়া, সাফওয়ান আখতার সদ্য, মো. কুরমান শেখ, ছায়াদ মাহমুদ খান, নিশান খান, আস-সাবুর ও সুজন মিয়া।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এরপর শহীদদের স্বরণে একটি ডকুমেন্টারি ভিডিও দেখানো হয়। পরে শহীদদের স্বীকৃতি স্বরূপ সংবর্ধনা, সনদ ও স্মারক প্রদান করা হয়।
শহীদ আলিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবির বলেন, “আমরা আমাদের সন্তানদের হারিয়েছি ১ বছর হতে চললো। কিন্তু হত্যাকারীদের বিচার এখনো নিশ্চিত হয়নি। আপনারা শহীদদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে এ চেয়ারে বসেছেন। ফ্যাসিস্টদের বিচার নিশ্চিত করুন।”
শহীদ শ্রাবণ গাজীর পিতা মো. মান্নান গাজী বলেন, “আমাদের সন্তানরা তো আর ফিরে আসবে না। কিন্তু হাসাপাতালে যারা আহত আছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন। তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।”
শহীদ নাফিসা হোসেনের মামা মো. হজরত আলী নাফিসার শহীদ হওয়ার বর্ণনা করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। এ সময় তিনি জুলাই শহীদদের পরিবারের পুর্নগঠন এবং শহীদদের নামে হল, সড়ক বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণের প্রস্তাব করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, “জুলাই আন্দোলনের স্বরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে মাসব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শহীদ পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে যেসব দাবি করা হয়েছে, আমি প্রশাসনের একজন হয়ে তা আগামী সিন্ডিকেট সভায় তুলব।”
তিনি বলেন, “আমি চাই আমাদের এখানে যেহেতু কিন্ডারগার্টেন, স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এখানে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের পড়াশোনার সুযোগ প্রদান করা হোক। এ বিষয়ে আমরা সিন্ডিকেটে আলোচনা করব। একইসঙ্গে জুলাই শহীদদের পরিবারের সদস্যদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
এর আগে, সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে অদম্য-২৪ স্মৃতিস্তম্ভ পর্যন্ত মুখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেন শিক্ষকরা।
গত ১৪ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে স্বরণ ও ধারণ করতে মাসব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী