আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) দিয়ে তৈরি ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানোর প্রবণতা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে দেশের নারী শিল্পীদের মুখচ্ছবি এআইয়ের মাধ্যমে বিকৃত করে প্রচারের ঘটনা দিন দিন উদ্বেগ তৈরি করছে। বিষয়টি নিয়ে এবার সরব হলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দেন সাদিয়া আয়মান। সেখানে তিনি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ভুয়া ছবি ও ভিডিও সম্পর্কে ভক্তদের সচেতন থাকার আহ্বান জানান। পাশাপাশি এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের উদ্দেশ্যে কঠোর বার্তা দেন। 

সাদিয়া আয়মান লেখেন, “কিছু কিছু পেজ আছে, যারা সেলিব্রিটিদের এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) দিয়ে এডিট করা ছবি বানায়। আমার মনে হয়, ওরা আমার ছবি বানিয়ে ছড়াতে আরো বেশি মজা পায়। হ্যাঁ, তারা সম্ভবত এটা থেকে আয় করে। এটাই তাদের রুটি-রুজি হতে পারে। কিন্তু এতে ওদের নিচু মানসিকতা আর সস্তা মনভাবটাই বেশি ফুটে ওঠে।” 

আরো পড়ুন:

২৫০ পর্বে ‘হাবুর স্কলারশিপ’

‘কোনো দিন জন্মদিন পালন করা হতো না, কেক কাটাও হতো না’

হতাশা প্রকাশ করে সাদিয়া আয়মান বলেন, “কিন্তু যেটা সবচেয়ে আশ্চর্যের, ২০২৫ সালেও মানুষ কীভাবে এখনো ‘এআই’ চিনতে পারে না বা বোঝে না! তারা ওই ভুয়া ছবি বা ভিডিওতে গিয়ে আসল ভেবে মন্তব্য করে!” 

ভক্ত-অনুরাগীদের উদ্দেশ্যে সাদিয়া আয়মান বলেন, “আরে ভাই-বোনেরা, এখন তো সময় হয়েছে একটু সচেতন হওয়ার! এসব ‘এআই এডিটেড ছবি ও ভিডিও’-কে সত্যি ভেবে বিশ্বাস করবেন না, আল্লাহর দোহাই লাগে!” 

যদি এমন কোনো ছবি বা ভিডিও চোখে পড়ে, তাহলে সেই পোস্ট ও পেজ রিপোর্ট করে ব্লক করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের কাছে তুলে দেওয়ার ঘোষণাও দেন, যেন পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক চলচ চ ত র আয়ম ন

এছাড়াও পড়ুন:

থমথমে পরিস্থিতিতে এক পক্ষের বিক্ষোভের ডাক

চট্টগ্রামের রাউজানে গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ-গোলাগুলিতে অর্ধশত নেতা-কর্মী আহত হওয়ার ২২ ঘণ্টা পরও মামলা করেনি কোনো পক্ষ। ঘটনার পর থেকে পুরো উপজেলায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ অবস্থায় বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। আজ বুধবার বিকেল চারটায় উপজেলা সদরের মুন্সির ঘাটায় এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে রাউজানের সত্তারঘাট এলাকায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ছররা গুলিতে আহত হন গোলাম আকবর খন্দকার নিজেও। তিনি দাবি করেন, তাঁর গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে গিয়াস উদ্দিন কাদেরের নির্দেশে। এতে দুই পক্ষের অর্ধশত নেতা-কর্মী আহত হন।

সংঘর্ষের পর গতকাল রাতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল রাত আটটার দিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক চিঠিতে কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। জানতে চাইলে বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন উত্তর জেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বেলায়েত হোসেন। এ ছাড়া আরেকটি চিঠিতে স্থগিত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর পদও।
এ ঘটনার পর গোলাম আকবর খোন্দকার পক্ষের লোকজন মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে। দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত থাকায় নতুন করে সহিংসতার আশঙ্কা করছেন উপজেলার বাসিন্দারা।

গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী রাউজান উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি নিজেও আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁর পা ভেঙে দিয়েছেন গিয়াস কাদেরের লোকজন। গোলাম আকবরকেও তাঁরা গুলি করেছেন। তিনি বলেন, তাঁরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আজকের মধ্যে মামলার এজাহার দেওয়া হবে। পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলন করে হামলার বিস্তারিত তুলে ধরবেন।

গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী এবং উপজেলা বিএনপির প্রচার বিভাগের আহ্বায়ক কাজী সরোয়ার খান প্রথম আলোকে বলেন, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আজ বিকেলে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল করবেন। সেখান থেকে অপপ্রচারের জবাব দেওয়া হবে।

ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করে স্ট্যাটাস, ছবি ও ভিডিও শেয়ার করছেন বিএনপির দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা। এতে পাল্টা উত্তেজনা ও পুনরায় সহিংস ঘটনা ঘটার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া আজ বেলা একটায় প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের হামলা সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো পক্ষ মামলা করেনি। কাউকে গ্রেপ্তারও করা যায়নি। মামলা করলে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।

উল্লেখ্য, রাউজানে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত সহিংসতায় মোট ১৩টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১০টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয় অন্তত শতাধিকবার। তিন শতাধিক মানুষ এসব ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ