“বন্ধু তোমার পথের সাথীকে চিনে নিও”—মুকুল দত্তের কথায় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া বিখ্যাত এ গানের মতো অসংখ্য গান রয়েছে বন্ধুত্ব নিয়ে। বন্ধু ছাড়া যেন জীবন অবিশ্বাস্য। কেননা মানব জনমে বন্ধুর অবদান অনেক। এই বিষয়টি আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিতে বন্ধু ও বন্ধুত্বের সম্মানে প্রতি বছরের আগস্টের প্রথম রবিবার পালিত হয়ে থাকে ‘বিশ্ব বন্ধু দিবস’।  

বন্ধুত্ব নিয়ে বলিউড বেশ কিছু সিনেমা নির্মিত হয়েছে। আবার কিছু সিনেমায় বন্ধুত্ব নিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে সংলাপ; যা পরবর্তীতে জনপ্রিয়তা পায়। এমন দশটি সংলাপ নিয়ে এই প্রতিবেদন— 

এক.

‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ সিনেমা ১৯৮৯ সালে মুক্তি পায়। এ সিনেমায় একটি দৃশ্যে সালমান খান বলেন—“বন্ধুত্বের একটা নীতি আছে ম্যাডাম, নো সরি, নো থ্যাঙ্কস।” 

আরো পড়ুন:

শাহরুখের স্বপ্নপূরণ: যারা পেলেন ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

‘ডন’ সিনেমার পরিচালক মারা গেছেন

দুই. বলিউডের আলোচিত সিনেমা ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’। ১৯৯৮ সালে মুক্তি পায় এটি। এ সিনেমার একটি দৃশ্যে শাহরুখ খান বলেন, “ভালোবাসাই হলো বন্ধুত্ব। সে যদি আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু না হতে পারে, তাহলে আমি কখনো তাকে ভালোবাসতে পারব না। কারণ বন্ধুত্ব ছাড়া ভালোবাসা হয় না... সহজ, ভালোবাসাই হলো বন্ধুত্ব।”  

তিন. ২০১৩ সালে মুক্তি পায় বলিউড সিনেমা ‘চশমে বাদ্দুর’। এ সিনেমার একটি দৃশ্যে আলী জাফর বলেন, “ভালোবাসা যদি প্যান্ট হয়, বন্ধুত্ব অন্তর্বাস, প্যান্ট যদি খুলে যায় তবে অন্তর্বাস সম্মান রক্ষা করবে।”  

চার. বলিউডের আলোচিত সিনেমা ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’। রণবীর-আনুশকা শর্মা অভিনীত এ সিনেমা ২০১৬ সালে মুক্তি পায়। একটি দৃশ্যে আনুশকা শর্মা বলেন, “ভালোবাসায় আবেগ আছে। কিন্তু বন্ধুত্বে আছে শান্তি।” 

পাঁচ. নব্বই দশকে বলিউডে রাজত্ব করেন গোবিন্দ। তার অভিনীত ‘নসীব’ সিনেমা ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায়। এ সিনেমার একটি দৃশ্যে গোবিন্দ বলেন, “আমার মতো বন্ধুরা কথা বলতে পারে। কিন্তু কখনো লাথি মারতে পারে না।” 

ছয়. আমির খান অভিনীত সাড়া জাগানো বলিউড সিনেমা ‘থ্রি ইডিয়টস’। ২০০৯ সালে মুক্তি পায় এটি। এ সিনেমার একটি দৃশ্যে মাধবন বলেন,   “একজন বন্ধু ফেল করলে কষ্ট হয়, কিন্তু একজন বন্ধু ফার্স্ট হলে আরো কষ্ট হয়।” 

সাত. বলিউড শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চন। তার ক্যারিয়ারে সফল সিনেমার সংখ্যার অভাব নেই। তার অভিনীত ‘অগ্নিপথ’ সিনেমা ১৯৯০ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। এ সিনেমার একটি দৃশ্যে অমিতাভ বচ্চন বলেন, “যদি তুমি তোমার শত্রুর কাছে কোনো উপকার পাও, তবে তাকে তোমার বন্ধু বানা।” 

আট. এক সময়ের জনপ্রিয় বলিউড অভিনেতা তুষার কাপুর। এখন অভিনয়ে নেই বললেই চলে। তার অভিনীত ‘শুটআউট অ্যাট ওয়াডালা’ সিনেমা ২০১৩ সালে মুক্তি পায়। এ সিনেমার একটি দৃশ্যে তুষার কাপুর বলেন, “বন্ধুত্বের কোনো ধর্ম নেই।” 

নয়. বলিউডের আলোচিত সিনেমা ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’। রণবীর-আনুশকা শর্মা অভিনীত এ সিনেমা ২০১৬ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটির একটি দৃশ্যে রণবীর কাপুর বলেন, “ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের গল্প বড়ই অদ্ভুত। ভালোবাসা আমাদের নায়ক, বন্ধুত্ব নায়িকা।” 

দশ. অজয় দেবগন অভিনীত বলিউড সিনেমা ‘ওয়ান্স আপনে টাইম আ ইন মুম্বাই’। ২০১০ সালে মুক্তি পায় এটি। সিনেমাটির একটি দৃশ্যে এই অভিনেতা বলেন, “বন্ধু হয়ে যখন কাজ করা যায়, তাহলে শত্রু কেন বানাবেন?”

ঢাকা/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রণব র ক প র আম র খ ন অজয় দ বগন এ স ন ম র একট বন ধ ত ব ন য় বন ধ ত ব র ন বল ন

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

বান্দরবানের থানচি উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসার জায়গা ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকটে এই হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বর্তমানে পুরো হাসপাতাল চালাচ্ছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। গত পাঁচবছরে চিকিৎসাধীন ও রেফার্ড করা ২৪ জন রোগী মারা গেছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৯৫ সালে ৩১ শয্যার থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যাত্রা শুরু করে। পরে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র দুইজন। তাদের মধ্যে একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন। এ কারণে রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ১৮ জন নার্স পদে রয়েছেন মাত্র চারজন। চারজন মিডওয়াইফ থাকার কথা, নেই একজনও।

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে পাগলা ঘোড়ার কামড়ে আহত ২০

বক্তব্য দেওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়লেন কাদের সিদ্দিকী

প্রাথমিক থেকে শুরু করে জরুরি চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে ছুটে যান পাহাড়ি ও বাঙালিরা। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা যোগ হয়নি। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রোগীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। 

দুর্গম এলাকার রোগীরা অনেক সময় নদীপথ কিংবা পাহাড়ি রাস্তা পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে এলেও কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা পান না। বরং তাদের বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। অনেক সময় বান্দরবানে যাওয়ার পথে রোগীরা মারা যান। এ কারণে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তারা।

হাসপাতালের পরিসংখ্যানবীদ পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এখানে ভর্তি হয়েছেন ৫ হাজার ১৯৮ জন রোগী। এর মধ্যে ৪৫৬ জনকে রেফার্ড করা হয় বান্দরবান সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৭ জন রোগী। 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মংক্যসিং মারমা বলেন, “২০১৯ সালে চাকরিতে যোগদান করার পর থেকে অন্তত সাতজন রেফার্ড করা রোগী মাঝপথে আমার গাড়িতেই মারা গেছেন।”

 

শৈসাই মং মারমা তিন বছর আগে বিনা চিকিৎসায় তার মাকে মারা যেতে দেখেছেন। তিনি জানান, তার মা শৈমেপ্রু মারমা (৩৪) অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর হঠাৎ তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। রেমাক্রী বাজার থেকে নদীপথে থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান মাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ভাড়া গাড়িতে জেলা হাসপাতালে যাওয়ার সময় চিম্বুক বারো মাইল এলাকায় তার মা মারা যান।

লেংরু ম্রো নামে চার সন্তানের মা হারিয়েছেন স্বামীকে। তিনি জানান, তার স্বামী রেং য়ুং ম্রো (৪৫) কিডনি জটিলতা নিয়ে থানচি হাসপাতালে যান। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে তাকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। থানচি থেকে বান্দরবান যাওয়ার মাঝপথে মারা যান তার স্বামী।

স্থানীয় বাসিন্দা মংমে মারমা বলেন, ‍“হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ ও যন্ত্রপাতির সংকট দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বদলি হলেও অনেকেই থানচিতে যোগ দেন না, ডিপুটেশনে থেকে যান সদর হাসপাতালে। ফলে এ অঞ্চলের পাহাড়ি ও বাঙালি প্রায় ৩০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”

রিয়েং ম্রো নামে অপর বাসিন্দা বলেন, “পাহাড়ে বসবাসকারীদের অধিকাংশ গরিব। জেলা সদর হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া ব্যয়বহুল ও কষ্টকর। রেমাক্রি, বড় মোদক, তিন্দু থেকে থানচি সদরে রোগী আনতেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপর আবার বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করলে সাধারণ মানুষ কীভাবে চিকিৎসা করাবে?” 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, “বর্তমানে হাসপাতালে আমিসহ দুইজন চিকিৎসক রয়েছেন। একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন। তিন রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ফলে পুরো হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব আমাকে একাই সামলাতে হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “জনবল ও সরঞ্জাম সংকটের কারণে গুরুতর রোগীদের রেফার্ড করা ছাড়া উপায় থাকে না। দীর্ঘ পথের কারণে অনেকেই জীবিত অবস্থায় সদর হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না।”

বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, “শুধু বান্দরবান নয়, পুরো তিন পার্বত্য জেলাতেই চিকিৎসক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নতুন করে ৪৮তম বিসিএসের ডাক্তার পদায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই সংকট পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও বিভাগীয় প্রধানকে বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের আট-দশজন চিকিৎসককে বান্দরবানে বদলি করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
  • দুবাইয়ে বিকৃত যৌন ব্যবসা চক্রের প্রধানকে চিহ্নিত করল বিবিসির এক অনুসন্ধান
  • মহানবী (সা.)–এর ইন্তেকালের পরে শাসন নিয়ে যা ঘটেছে
  • কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
  • সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
  • ৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে