উপদেষ্টা আসিফের বাবাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
Published: 4th, August 2025 GMT
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাবা বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে মদদ ও নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন কুমিল্লার মুরাদনগরের বাসিন্দা রুমা আক্তার। সোমবার (৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান।
রুমা আক্তার জানান, গত ৩ জুলাই বিল্লাল হোসেনের বাবার মদদে তার মা, ভাই ও বোনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সেদিন তাকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। কিন্তু, ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। মামলা করলেও পুলিশ প্রধান আসামি উপদেষ্টার বাবার নাম বাদ দিয়ে ইচ্ছেমতো অধিকাংশ আসামির নাম দেয়।
তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার আগের দিন রাতে কড়ইবাড়ি গ্রামে তরু মিয়ার বাড়িতে শিমুল বিল্লাহ চেয়ারম্যান, আনু মেম্বার, মধু ও মতিনের উপস্থিতিতে বাচ্চা মেম্বার, রবিউল ও শরিফের আহ্বানে গোপন বৈঠক হয়। সেখানে প্রথমে আমার মাকে (রোকসানা) হত্যার পরিকল্পনা হয়। পরে পরিবারের সবাইকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেখানে টাকার লেনদেন হয় ও খুনি ভাড়া করা হয়।’’
আরো পড়ুন:
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন
রাবির সাবেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’র অভিযোগ
রুমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ‘‘উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেনের মদদে এই হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দেন শিমুল চেয়ারম্যান। কিন্তু, তিনি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। র্যাব কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে কারো কারো জামিন হয়ে গেছে। এছাড়া, বাকি আসামিরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমার মা এলাকায় বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে দুইবার মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনও করেছিলেন। কিন্তু, বিএনপি সমর্থিত হওয়ায় তাকে জিততে দেওয়া হয়নি। উল্টো জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হওয়ায় হয়রানির উদ্দেশে তার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল।’’
ঘটনার দিন পুলিশের যথাযথ সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ তুলে রুমা আক্তার বলেন, ‘‘ঘটনার দিন একাধিকবার থানা পুলিশ এবং ৯৯৯-এ ফোন করে সহযোগিতা চেয়েছিলাম। কিন্তু, পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাইনি।’’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘এ ঘটনায় আমার বড় বোন রিক্তা আক্তার মামলার বাদী হলেও আসামিদের তালিকা সাজিয়েছে পুলিশ। এ নিয়ে আপত্তি করলেও পুলিশ সেটা কর্ণপাত করেনি।’’
রুমা আক্তার বলেন, ‘‘মামলা দায়েরের পর থেকে আমাদের মেরে ফেলার জন্য খোঁজা হচ্ছে। প্রাণ ভয়ে আমরা নিজেদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছি।’’
গত ৩ জুলাই কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন- ওই গ্রামের রোকসানা বেগম (৫৩), তার ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার (২৯)।
এ ঘটনায় নিহত রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার বাদী হয়ে ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি মামলা করেন।
ঢাকা/রায়হান/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১
মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতর তিনটি প্লাস্টিকের বালতিতে লুকিয়ে রাখা ২৩টি ককটেল উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের বোনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করে তারা। পাশাপাশি মোহাম্মদ হাসান নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
রবিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার বৈখর অনির্বাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার ড্রেন থেকে ককটেলগুলো উদ্ধার হয়। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
অভয়নগরে দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ককটেল হামলা, আহত ৩
দিনাজপুরে পুকুর পাড় থেকে গ্রেনেড উদ্ধার
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ঢাকনা খোলেন স্থানীয়রা। এ সময় তারা প্লাস্টিকের বালতিতে তুষ দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় কিছু বস্তু দেখতে পান। পাশাপাশি তিনটি ড্রেনের ঢাকনা খুলে তারা একই চিত্র দেখেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রেনের ভেতর থেকে তিনটি বালতিতে রাখা ২৩টি তাজা ককটেল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসানকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আটক হাসান মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপন হোসেন পাটোয়ারীর ভাগ্নি জামাই বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ককটেলগুলো উদ্ধার করে। এ সময় মোল্লাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারির বোন সেলিনা বেগমের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসান নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ঢাকা/রতন/মাসুদ