গণঅভ্যুত্থান সমাজের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা তৈরি করে। কেননা এটি রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, বৈষম্য ও অনিয়মের বিরুদ্ধে জনগণের সম্মিলিত প্রতিরোধের প্রকাশ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলন ছিল দীর্ঘদিনের সামাজিক হতাশা ও রাজনৈতিক অচলাবস্থার বহিঃপ্রকাশ। এই গণআন্দোলনের অভিঘাত শুধু রাজনীতিতেই নয়, সমাজ ও সংস্কৃতির ভেতরেও ছড়িয়ে পড়ে। এই প্রতিবাদের অভিঘাত কেবল শাসনব্যবস্থা নয়, সমাজ ও সংস্কৃতির গভীর তলদেশেও অনুরণন তুলেছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতির অবস্থা ও আকাঙ্ক্ষাগত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে।

গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কিছুটা হলেও মোড় ঘুরেছে। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা দলগুলোর ওপর জনগণের আস্থা কমে যাওয়ার ফলে রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়, যার ফাঁকে নতুন নেতৃত্ব ও বিকল্প রাজনৈতিক চিন্তার উত্থান ঘটছে। অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে আগের সরকার ব্যবস্থার পতন ঘটে। নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা পূরণের অঙ্গীকার দিয়ে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের মূল লক্ষ্য সুষ্ঠু নির্বাচন, রাষ্ট্রীয় সংস্কার তথাপি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনা। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে জনগণের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার কাঁধে দায়িত্ব নিয়েছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার প্রথম দিকে ‘আস্থা ফেরানোর সরকার’ হিসেবে বিবেচিত হলেও বছর শেষে তার সাফল্য মিশ্র। স্বচ্ছ নির্বাচনি রূপরেখা, প্রশাসনের দলীয়করণ রোধ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এই তিনটি অঙ্গীকারের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন প্রক্রিয়া আংশিক অগ্রগতি পেলেও, বাকিগুলোতে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। প্রশাসনের মধ্যে পুরোনো গোষ্ঠীগত আনুগত্য এখনো প্রবলভাবে কাজ করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রাথমিক সাফল্য হিসেবে বলা যায়- দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মেরুকরণ ও রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের পর অন্তর্বর্তী সরকার একটি ‘সততা ও স্বচ্ছতার বার্তা' দিয়েছে। তাদের কিছু কর্মকাণ্ড জনগণের আস্থার ভিত্তি গড়েছে। মানুষ রাস্তায় কথা বলছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভয়হীনভাবে লেখালেখি করছে, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সভা-সমাবেশ করছে যা ২০২৪ সালের তুলনায় এক বিশাল পরিবর্তন। এটি প্রমাণ করে, অন্তর্বর্তী সরকার অন্তত ‘শ্বাস নেওয়ার সুযোগ’ তৈরি করেছে।

আরো পড়ুন:

শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদ

বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের পথে সরকার কতটা এগুলো?

দেশের তরুণরা রাজনীতি নিয়ে ভাবছে, কিছু নতুন রাজনৈতিক দল জন্ম নিয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা ‘নেতৃত্বশূন্যতা’র ফাঁকা জায়গায় আলো দেখা যাচ্ছে। এরা দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতি, অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র এবং রাষ্ট্রীয় স্বচ্ছতার দাবিকে কেন্দ্র করে নিজেদের কর্মসূচি সাজাচ্ছে। অনেক তরুণ, বিশেষ করে যারা সামাজিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছে, তারা এই নতুন বিকল্পের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। নতুন রাজনৈতিক শক্তিগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের সংলাপে অংশগ্রহণ করলেও, পুরোনো দলগুলো বারবার অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ফলে রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়তে সরকার সফল হয়নি। বিচার ও জবাবদিহিতায় স্পষ্ট অগ্রগতি নেই, জনগণ চেয়েছিল, র‌্যাব, ডিবি বা পুলিশকে আরও মানবিক ও নিরপেক্ষ করা হোক। কিন্তু বাহিনীগুলোর আচরণ ও কাঠামোয় দৃশ্যমান কোনো সংস্কার আসেনি। বরং কিছু এলাকায় এখনও পুরোনো ভীতি বজায় রয়েছে। জনগণ চেয়েছিল, সব রাজনৈতিক শক্তি অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে একমত হয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করুক। কিন্তু প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনাস্থা, পাল্টাপাল্টি দোষারোপ এবং সংলাপে অনীহার কারণে জনগণের এই প্রত্যাশা আদৌও পূরণ হবে কি না, তা বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে! এই সংস্কারপ্রক্রিয়া জনগণের সম্পূর্ণ আশা পূরণ করতে পারবে— এমন প্রত্যাশা বাস্তবসম্মত নয়। কিন্তু এটি একটি ভাঙা সিস্টেমে ‘আস্থার সূচনা’ করতে পেরেছে, যা ভবিষ্যতের জন্য হয়ত বড় পরিবর্তনের ভিত্তি হতে পারে। 

গণআন্দোলনের পর মানুষ যে ‘শুদ্ধিকরণ ও ন্যায়বিচার’-এর স্বপ্ন দেখেছিল তা এখনও অসম্পূর্ণ। এখনও প্রশাসনের দলীয় আনুগত্য ভাঙা যায়নি। তৃণমূল পর্যায়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের দলীয় আনুগত্য বা গোষ্ঠীস্বার্থ এখনও বহাল আছে। অনেক স্থানে তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘অস্থায়ী’ ভেবে আগের অভ্যাসেই চলছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং দক্ষিণ এশীয় কয়েকটি রাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উদ্যোগ (বিশেষত নির্বাচনি প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক বন্দিমুক্তি) প্রশংসা করেছে। তবে বিচারিক স্বচ্ছতা এবং মানবাধিকার কমিশনের অকার্যকারিতার বিষয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে।

এই অভ্যুত্থান এক ধরনের শ্রেণিচেতনাকে সামনে নিয়ে আসে। সমাজের প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলোর (যেমন: দিনমজুর, পরিবহনশ্রমিক, রিকশাচালক, পোশাকশ্রমিক, হিজড়া জনগোষ্ঠী, সংখ্যালঘু ও আদিবাসী সম্প্রদায়) ওপর রাষ্ট্র ও প্রশাসনের নিপীড়ন এবার মিডিয়া ও আন্দোলনে বেশি করে চিত্রিত হয়। গণঅভ্যুত্থান একটি বৃহত্তর নাগরিক জাগরণ সৃষ্টি করে। শিক্ষক, চিকিৎসক, পরিবেশকর্মী, আইনজীবী; যারা এতদিন নিঃশব্দ ছিলেন, তারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে আওয়াজ তোলেন। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী আমরা ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিমূলক সমাজ আমরা চাই যেখানে রাষ্ট্র ও প্রশাসন আইনের শাসনের প্রতি বাধ্য থাকবে, গরিব-বড়লোক, ক্ষমতাবান-সাধারণ কেউই আইনের ঊর্ধ্বে থাকবে না, গায়েবি মামলা, ক্রসফায়ার, হয়রানি, বিনাবিচারে আটক এসবের কোনো স্থান থাকবে না। সরকার নয়, ন্যায় হবে সবচেয়ে বড় কর্তৃপক্ষ। আমরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মর্যাদাবোধসম্পন্ন সমাজ চাই, যেখানে ধর্ম, লিঙ্গ, শ্রেণি, জাতি, অঞ্চল, ভাষা কিংবা রাজনৈতিক মতভেদ কখনো নাগরিক অধিকার কেড়ে নেবে না, হিজড়া, দলিত, প্রতিবন্ধী, সংখ্যালঘু, পাহাড়ি সবার জন্য থাকবে সমান সুযোগ। আমরা চাই মর্যাদা-ভিত্তিক নাগরিকত্ব, করুণার নয়।

গণঅভ্যুত্থানের প্রাণ ছিল তরুণরা। তাই আমরা চাই, একটি জিজ্ঞাসু সমাজ, যেখানে প্রশ্ন করা 'অপরাধ' নয়। শিক্ষা হবে কেবল সার্টিফিকেটের জন্য নয়, মানুষ গড়ার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয় হবে মুক্ত চিন্তার কেন্দ্র, ছাত্রাবাস হবে নিপীড়নের স্থান নয়। অভ্যুত্থানের সময় আমরা একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা চাই, সেই সহানুভূতির চর্চা আমাদের সমাজব্যবস্থায় স্থায়ী হোক। একজন রিকশাচালকের মৃত্যু যেন কেবল 'সংখ্যা' না হয় বরং দায়বদ্ধতার প্রশ্ন উঠুক; দুর্যোগে সাহায্য, প্রতিবাদে সংহতি, শোকেও ভাগাভাগি হোক। কারও বাড়িতে ‘সোয়া দুই কোটি টাকার চেক’ আবার কেউ চিকিৎসার খরচ জোগাতে পারে না। আমরা এই বৈষম্যমূলক চর্চার বাইরে সমাজটিকে দেখি। শ্রমিকের ঘামে যে অর্থনীতি চলে, সে অর্থনীতির মালিকও শ্রমিকই হবে,সব নাগরিকের জন্য ন্যূনতম আয়ের নিশ্চয়তা ও স্বাস্থ্যসেবা থাকবে। আমরা শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন চাই না, আমরা ‘ন্যায়ভিত্তিক উন্নয়ন’ চাই।

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে সংস্কৃতির চেহারায় এক নতুন জাগরণ প্রত্যাশিত। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক গোঁজামিল, ফ্যাসিবাদের ছায়া এবং দমন-পীড়নের সংস্কৃতি সংস্কারপ্রবণ সমাজে রূপান্তরিত হতে শুরু করেছে। এই পরিবর্তনের কেন্দ্রে রয়েছে গণমানুষের অংশগ্রহণ, প্রশ্ন করার সাহস এবং নতুন এক নৈতিক বোধের উন্মেষ। শিল্প, সাহিত্য, নাটক ও সংগীতে পুনর্জাগরণের সম্ভাবনা জাগছে। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ এবং মুক্তির ভাষা ফিরে আসছে কবিতায়, গান ও চিত্রকলায়। শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র মানুষ এখন সংস্কৃতিকে শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং মতপ্রকাশ ও সামষ্টিক চেতনার বাহক হিসেবে দেখতে শুরু করেছে। তবে কোথাও কোথাও সংস্কৃতির চিন্তা রুদ্ধ হয়েছে। মাজার ভাঙা, সংগীত-নাটকে বাধার ঘটনাও ঘটেছে। এরকম চর্চা অনাকাঙ্ক্ষিত।

বাংলাদেশের ইতিহাসে সংস্কৃতি সবসময়ই ছিল প্রগতির বাহক, বৈচিত্র্য ও মানবিকতার প্রতিচ্ছবি। কিন্তু এই সাংস্কৃতিক ধারার বিপরীতে একটি শক্তি দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থেকেছে। তাদের উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট: সমাজকে একমাত্রিক, সংকীর্ণ ও অচল চিন্তার খাঁচায় আবদ্ধ করা, যেখানে প্রশ্ন নেই, ভিন্নমত নেই, কল্পনা বা সৃজনশীলতার জায়গা নেই। মৌলবাদের আঘাত প্রথম আসে চিন্তার ওপর। তারা সাহিত্যে ‘অশ্লীলতা’ খোঁজে, চিত্রকলায় ‘অবমাননা’ খুঁজে বেড়ায়, গানকে ‘নিষিদ্ধ’ করে, নাটককে ‘পাপ’ হিসেবে চিহ্নিত করে। তারা চায় না, মানুষ স্বতন্ত্রভাবে ভাবুক, ইতিহাস জানুক, নিজের পরিচয় ও মূল্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলুক। এই আঘাত শুধু মননে নয়, কখনো কখনো প্রাণঘাতীও হয়েছে মঞ্চে হামলা, শিল্পীর ওপর হামলা এ সব কিছু তার প্রমাণ।

মৌলবাদী আঘাতের আরেকটি দিক হলো সংস্কৃতির বিকৃতি। তারা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করে এবং সেই নামে প্রচলিত লোকসংস্কৃতিকে অস্বীকার করে। বাউল, কবি, সংস্কৃতি মেলা- সবকিছুকেই তারা খারিজ করে দিতে চায়। এতে করে সংস্কৃতি শুধু সংকুচিতই হয় না, জনগণের ঐতিহ্যবাহী আত্মপরিচয়ও হারাতে বসে। তবে আশার কথা হলো, প্রতিবাদ তো হচ্ছে। প্রতিবাদী কবিতা, বিকল্প চলচ্চিত্র, তরুণদের নেতৃত্বে সংস্কৃতির নতুন জাগরণ আশাবাদী হতে শেখাচ্ছে আমাদের। সংস্কৃতি হলো মানুষের মনের আয়না, যা কখনোই একরৈখিক শাসনের কাছে পরাজিত হয় না।

এই নবজাগরণে তরুণরা পুরোনো দাসত্বমনা সংস্কৃতিকে অস্বীকার করে, নতুন মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট। সামাজিক গণমাধ্যম, ছোট পত্রিকা, পথনাটক এবং বিকল্প সাহিত্যমাধ্যম এখন তাদের হাতিয়ার। একইসঙ্গে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতেও সংস্কৃতি নিয়ে নতুন করে ভাবনা শুরু হয়েছে; তথ্য, ইতিহাস ও স্মৃতি রচনার দায়িত্বের প্রতি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। গণঅভ্যুত্থান কেবল রাজনৈতিক পরিবর্তন আনেনি, বরং সংস্কৃতিতে দিয়েছে নতুন ভাষা ও মননচর্চার দিগন্ত। এখন প্রশ্ন, এই জাগরণ কতটা টিকে থাকবে এবং কতটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে? তবে এটুকু নিশ্চিত যে, নিপীড়ন আর আত্মবিক্রয়ের সংস্কৃতি ভেঙে দিয়ে বাংলাদেশ এগোচ্ছে এক নতুন সাংস্কৃতিক দিগন্তের দিকে। 
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে জনগণের সংস্কৃতি হবে অধিকতর সচেতন, অংশগ্রহণমূলক ও আত্মমর্যাদাশীল। দীর্ঘদিনের দমন-পীড়ন ও ভয়ভীতির আবহে যে সাংস্কৃতিক শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, তা জনগণের সচেতন অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ভরাট হতে শুরু করেছে। মানুষ এখন আর সংস্কৃতিকে ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া কিছু বলে মনে করে না, বরং তারা নিজেরাই হয়ে উঠেছে সংস্কৃতির নির্মাতা। সবচেয়ে বড় কথা, এই নতুন জনগণের সংস্কৃতি হবে রাষ্ট্রনির্ভর নয়, বরং জনগণনির্ভর। এর উৎস থাকবে জনগণের সংগ্রামে, সাহসে, এবং নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার সংকল্পে।

লেখক: সাংবাদিক ও গবেষক

তারা//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ল ই গণঅভ য ত থ ন গণঅভ য ত থ ন পরবর ত র র জন ত ক জনগণ র স সরক র র ব কল প ন র পর র জন য জ গরণ

এছাড়াও পড়ুন:

নোবিপ্রবিসাসের বর্ষসেরা সাংবাদিক রাইজিংবিডি ডটকমের শফিউল্লাহ

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (নোবিপ্রবিসাস) এক যুগে পদার্পণ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।এতে ফিচার ক্যাটাগরিতে বর্ষসেরা সাংবাদিক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন অনলাইন নেউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকমের প্রতিনিধি মো. শফিউল্লাহ।
 
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে র‍্যালি, কেককাটা, আলোচনা সভা ও প্রকাশনা উন্মোচনের মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করা হয়।

দিনব্যাপী উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল নোবিপ্রবিসাসের বার্ষিক মুখপত্র ‘ফাউন্টেনপেন’-এর তৃতীয় সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম মোড়ক উন্মোচন করেন।

আরো পড়ুন:

নোবিপ্রবিতে ১৩১ প্রজাতি বন্যপ্রাণী শনাক্ত

গোবিপ্রবির সায়েন্স ফেস্টে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সাফল্য

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রেক্ষাপট ও পরবর্তী বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক এবং নোবিপ্রবিসাসের উপদেষ্টা এ. এফ. এম. আরিফুর রহমান।

সভার সভাপতিত্ব করেন নোবিপ্রবিসাসের সভাপতি মো. ইমাম হোসেন।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বর্ষসেরা সাংবাদিকের মধ্যে পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইসমাইল এবং প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এ সময় মঞ্চে সাংবাদিক সমিতি ও অন্য শিক্ষকরা ছিলেন।

বর্ষসেরা অনুসন্ধানী সাংবাদিক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন আমার দেশ-এর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি নাহিদুল ইসলাম এবং আরটিভি-এর প্রতিনিধি মো. রিয়াদুল ইসলাম।

বর্ষসেরা বিশেষ প্রতিবেদন (প্রিন্ট) ক্যাটাগরিতে দৈনিক ইনকিলাব -এর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মুস্তাকিম সাদিক এবং অনলাইন ক্যাটাগরিতে সময়ের কণ্ঠস্বর প্রতিনিধি তৌফিক আল মাহমুদ পুরস্কার অর্জন করেছেন।  

ফিচার ক্যাটাগরিতে সেরা সাংবাদিকের পুরস্কার পেয়েছেন রাইজিংবিডি ডটকম-এর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মো. শফিউল্লাহ।এবং সেরা কন্ট্রিবিউটরের পুরস্কার পেয়েছেন এশিয়ান টিভি-এর প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল তৌহিদ।

অনুষ্ঠানে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “বাংলাদেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই সাংবাদিক সমিতি রয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার চর্চা করেন। নোবিপ্রবির সাংবাদিকরাও জুলাই আন্দোলনের সময় সাহসিকতার সঙ্গে সংবাদ পরিবেশন করেছেন— যা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।”

তিনি আরো বলেন, “ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার ইতিহাস দীর্ঘ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই এই ধারা শুরু। বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ফেক নিউজ। এই ভুয়া সংবাদ প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক ক্লাবগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”

তিনি বলেন, “সত্য প্রকাশে সাহসী হতে হবে, মিথ্যা তথ্যের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির এক যুগ পূর্তিতে আমি শুভেচ্ছা জানাই। জুলাই–আগস্ট আন্দোলনের সাহসী শিক্ষার্থীদের গল্পগুলো লিখে রাখুন— এগুলোই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনুপ্রেরণা হবে।”

নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, “জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকতা আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে গেছে। এখন আমাদের দায়িত্ব অনেক গুণ বেড়ে গেছে। একটা সময় ছিল, যখন সত্য নিউজ প্রকাশ করা সম্ভব ছিল না। তবে এখন সময় এসেছে, সত্যকে সামনে নিয়ে আসার এবং ন্যায়ভিত্তিক সাংবাদিকতা করার।”

ঢাকা/শফিউল্লাহ/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশভাগ ত্রয়ী: শেকড়চ্যুত, ঠিকানাশূন্য মানুষের গল্প
  • সেঞ্চুরির অপেক্ষায় মুশফিকুর, তিন দিনেই জয় রাজশাহীর
  • বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে 
  • কুবিতে খেলার মাঠে মারামারির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
  • খুলনায় বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল, ভোলা সদরে কার্যক্রম স্থগিত
  • জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হলো কেন
  • নোবিপ্রবিসাসের বর্ষসেরা সাংবাদিক রাইজিংবিডি ডটকমের শফিউল্লাহ
  • ১০০ কোটির সম্পদ, স্বামীর প্রতারণা, ৪৭ বছর বয়সেই মারা যান এই নায়িকা
  • তানজানিয়ায় ‘সহিংস’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী সামিয়া
  • শিল্পের আয়নায় অতীতের ছবি