নিউইয়র্কে মাহফুজের ওপর হামলার প্রতিবাদ ঢাবি শিক্ষার্থীদের
Published: 26th, August 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের প্রবাসী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একদল শিক্ষার্থী।
মাহফুজ আলমের ওপর হামলার বিষয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর নীরবতারও সমালোচনা করেন তারা।
আরো পড়ুন:
চবিতে বাগছাস নেতা রাফির বিরুদ্ধে ২ শিক্ষার্থীর সংবাদ সম্মেলন
জবিতে শিক্ষার্থীদের টানা পঞ্চম দিনের অবস্থান কর্মসূচি
তারা বলছেন, মাহফুজ আলম জুলাই বিপ্লবের অন্যতম প্রধান নেতা ও চিন্তক। তাকে একঘরে করে দেওয়া যাবে না। তার পাশে জুলাই বিপ্লবের সুবিধভোগীরা না থাকলেও বিপ্লবী ছাত্রজনতা তার পাশে আছে ও থাকবে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে জুলাই বিপ্লবী তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলাকারী ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সন্ত্রাসবাদীদের দমনের দাবিতে আয়োজিত এক বিক্ষোভ থেকে এসব কথা বলা হয়।
‘জুলাই বিপ্লবী শিক্ষার্থী ও নাগরিকবৃন্দ’ এর ব্যানারে আয়োজিত এ বিক্ষোভে বক্তব্য দেন, জুলাই বিপ্লবের আহত যোদ্ধা মাওলানা শফিকুর রহমান, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ ও সদস্য সচিব ফজলুর রহমান, সহকারী সদস্য সচিব জিহাদী ইহসান, সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মুস্তাকিম ও সৌরভ অন্তর প্রমুখ।
আব্দুস সালাম বলেন, “জুলাই বিপ্লবের ১ বছর পরও বিপ্লবীদের উপর হামলা হচ্ছে। এই ১ বছরে অনেক সুশীলতা দেখেছি, ঠিক যেমন সুশীলতা হয়েছিল ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর। ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগকে ৭৫ সালেই নিষিদ্ধ করা দরকার ছিল। কিন্তু চব্বিশের জুলাই বিপ্লবের পর এসে তাদের শুধু রাজনৈতিক কার্যক্রম সাময়িক নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারকে বলব, বর্তমান সংবিধানকে বাতিল করে নতুন সংবিধান রচনা করে তাতে ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করুন এবং তাদের সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করুন। কারণ ফ্যাসিস্টরা জনগণের সম্পদ লুট করে বিদেশে পাচার করে সেখানে সুখে শান্তিতে আছে এবং সেখান থেকে জুলাই বিপ্লবীদের ওপর হামলা পরিচালনা করছে।”
আবদুল ওয়াহেদ বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো বরাবর বিপ্লবের ফল ভোগ করে, কিন্তু বিপ্লবীদের পাশে থাকে না। তারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরিবর্তনের সুবিধা নিছেন। কিন্তু খুনি হাসিনা যখন তাদের ফাঁসি দিয়েছে তখন রাজনৈতিক দলগুলো চুপ ছিল। এবারো তারা জুলাই বিপ্লবের সুবিধা নিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর আমেরিকায় বাংলাদেশ কন্স্যুলেট অফিসে হামলার পরে কিছু বলছে না।”
বিক্ষোভে উপস্থিত জুলাই যোদ্ধা মাওলানা শফিকুর রহমান দেখিয়ে ডাকসুর ভিপি প্রার্থী আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, “প্রতিনিয়ত নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেইজ থেকে ছবি প্রচার করে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আজ যেখানে তথ্য উপদেষ্টা হামলা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না, সেখানে জুলাই যোদ্ধা মাওলানা শফিকুর রহমান কিভাবে বাঁচবেন? তাকে কে নিরাপত্তা দেবে?”
ফজলুর রহমান বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত আমেরিকা সরকারের কাছে জবাবদিহিতা দাবি করা। কেন একটি স্বাধীন দেশের মন্ত্রীর সমমর্যাদাসম্পন্ন অতিথিকে তারা সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হলো, তা আমেরিকাকে ব্যাখ্যা দিতে হবে। সেইসঙ্গে হামলার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে।”
ফজলুর রহমান ফ্যাসিবাদী জামানায় লুটপাটকৃত সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে দেশের উন্নয়ন, শহীদ পরিবার এবং আহত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনে ব্যবহারের জোর দাবি জানান।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত ক র রহম ন সরক র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প
ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরোর দিন ফুরিয়ে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর বিবিসির।
ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করতে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিবিএস নিউজের ৬০ মিনিটসকে বলেন, “আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করছে।”
আরো পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয়।
ট্রাম্প এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান মাদক বন্ধ করার লক্ষ্যে নয়, বরং ট্রাম্প বিরোধী মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ‘অনেক কিছু’ সম্পর্কে।
বিবিসির মার্কিন নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে।
সম্প্রতি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলায় আপনি যেসব নৌযানে বিস্ফোরণ হতে দেখেন, তার প্রতিটিতে অন্তত ২৫ হাজার মাদকদ্রব্য ধ্বংস হয়। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহের জন্য দায়ী।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থলপথে ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প তা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “আমি এটা বলতে চাই না যে আমি এটা করব...আমি ভেনেজুয়েলার সাথে কী করব, আমি তা করব কিনা, তা আমি বলব না।”
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর অভিযোগ, নৌযানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘আধিপত্য বিস্তার’ করার চেষ্টা করছে।
ট্রাম্প জানান, তার সরকার ‘সারা বিশ্ব থেকে’ সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘আসতে’ দেবে না।
তিনি বলেন, “তারা কঙ্গো থেকে আসে, তারা সারা বিশ্ব থেকে আসে, তারা আসছে, কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নয়। তবে বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা- খারাপ। তাদের গ্যাং আছে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়ার’ নাম উল্লেখ করেন। তিনি এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গ্যাং’ হিসেবে অভিহিত করেন।
জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাদক পাচারকারী সংগঠন ও অপরাধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া এবং কার্টেল অব দ্য সানস, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা পরিচালনা করে। তবে কারাকাস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ঢাকা/ফিরোজ