লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মাছ ধরতে নৌকায় না যাওয়ায় মো. জসিম (৪০) নামের এক জেলেকে রাতভর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে একদল যুবক। ওই নির্যাতনের ভিডিও নিজেরাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় অভিযুক্তরা। 

ভিডিওটি পুলিশের নজরে এলে, জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে কমলনগর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই জনকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চরফলকন ইউনিয়নের শফি উল্লাহ মাঝির ছেলে মো.

লাদেন (১৯) ও দুলাল মাঝির ছেলে রাকিব।

এর আগে, গত রোববার (২৪ আগস্ট) রাতে উপজেলার মাতাব্বর হাট এলাকার মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের পাশে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, লাদেন, ফিরোজ ও বিক্রমসহ ৮-১০ জন যুবক মিলে চুরির অপবাদ দিয়ে জসিমকে বেঁধে রাতভর নির্যাতন চালায়।

ভিডিওতে দেখা যায়, ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির ব্লকের চিপায় ফেলে জসিমকে হাত-পা বেঁধে গোপনাঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে পেটানো হয়। মাথা ব্লকের নিচে রেখে পা উপরের দিকে তুলে চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন।

‎খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাকছুদ মাঝির নৌকায় মাছ ধরতে না যাওয়ায় তার নির্দেশে গভীর রাতে আপেল মাঝির নৌকা থেকে জসিমকে তুলে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। ভোর রাত পর্যন্ত নির্যাতন চালায় তারা। পরে এলাকাবাসী সকালে জসিমকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে কমলনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন। 

‎হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত মো. জসিম জানান, মাকছুদ মাঝির নৌকায় মাছ ধরতে না যাওয়ায় গভীর রাতে সোহেল, সিরাজ, রাকিব ও বিক্রম তার হাত-পা বেঁধে মাকছুদের নৌকার পাঠাতানের কাঠ দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এছাড়াও তার গোপনাঙ্গে ইট বেঁধে রাখেন এবং মুখে সিগারেটের আগুনের ছ্যাঁকা দেন। 

এভাবে সারা রাত নির্যাতন করে সকালে আবারও হাত-পা বেঁধে ব্লকের নিচে রেখে কাঠ দিয়ে অমানবিক নির্যাতন করেন। অনেক কাকুতি-মিনতি এবং চিৎকার করলেও তারা নির্যাতন বন্ধ করেননি। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

‎কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “এ ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরোর দিন ফুরিয়ে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর বিবিসির। 

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করতে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিবিএস নিউজের ৬০ মিনিটসকে বলেন, “আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করছে।”

আরো পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয়।

ট্রাম্প এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান মাদক বন্ধ করার লক্ষ্যে নয়, বরং ট্রাম্প বিরোধী মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ‘অনেক কিছু’ সম্পর্কে।

বিবিসির মার্কিন নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে।

সম্প্রতি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলায় আপনি যেসব নৌযানে বিস্ফোরণ হতে দেখেন, তার প্রতিটিতে অন্তত ২৫ হাজার মাদকদ্রব্য ধ্বংস হয়। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহের জন্য দায়ী।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থলপথে ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প তা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “আমি এটা বলতে চাই না যে আমি এটা করব...আমি ভেনেজুয়েলার সাথে কী করব, আমি তা করব কিনা, তা আমি বলব না।”

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর অভিযোগ, নৌযানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘আধিপত্য বিস্তার’ করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প জানান, তার সরকার ‘সারা বিশ্ব থেকে’ সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘আসতে’ দেবে না।

তিনি বলেন, “তারা কঙ্গো থেকে আসে, তারা সারা বিশ্ব থেকে আসে, তারা আসছে, কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নয়। তবে বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা- খারাপ। তাদের গ্যাং আছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়ার’ নাম উল্লেখ করেন। তিনি এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গ্যাং’ হিসেবে অভিহিত করেন।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাদক পাচারকারী সংগঠন ও অপরাধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া এবং কার্টেল অব দ্য সানস, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা পরিচালনা করে। তবে কারাকাস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ