দেশের ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বড় সংস্থা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ঢাকা স্টেডিয়ামের ছোট্ট কক্ষে শুরু হয়েছিল এর কার্যক্রম। অর্থের অভাবে মোমবাতি জ্বালিয়েও কাজ করতে হয়েছে। সময়ের পরিবর্তনে সেই সংস্থাই এখন হাজার কোটি টাকার মালিক। সঙ্গে তারকাদের ভিড় থাকে বলে সব নজর যেন ক্রিকেট কেন্দ্রিক।
বিসিবির আজকের বৈভবের কারণে এর পরিচালনা পর্ষদ নিয়েও আলাদা আগ্রহ থাকে। আগামী মাসেই সেই পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যা নিয়ে রীতিমত উত্তাপ ছড়ানো শুরু হয়ে গেছে।
আরো পড়ুন:
নির্বাচন করার ঘোষণা আমিনুলের
বিসিবি নির্বাচন অক্টোবরে
গত পহেলা সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত হয়, নির্বাচন আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হবে। বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন প্যানেলের ঘোষণা আজকের মধ্যেই করার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে তা পিছিয়েছে। নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত হতে আরো দুয়েক দিন সময় লাগতে পারে।
তবে কোন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হবে তা পরিস্কার। বিসিবিতে প্রথমে কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ২৩ পরিচালক বোর্ডে আসবেন। ২ জন সরাসরি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে মনোনিত হবেন। এই ২৫ বোর্ড পরিচালক নিজেরা ভোট দিয়ে নির্বাচন করবেন বিসিবির পরবর্তী সভাপতি। অনেকেরই জিজ্ঞাসা বিসিবির নির্বাচনে কারা ভোট দিতে পারবেন? কিংবা কিভাবে হয় এই নির্বাচন।
সব মিলিয়ে এই নির্বাচনে কাউন্সিলর সংখ্যা ১৭৪ জন। এই ১৭৪ কাউন্সিলর ভোটাধিকার পাবেন। তিনটি ক্যাটাগরিতে হবে বিসিবি ২৩ পরিচালক পদে নির্বাচন। প্রথম ক্যাটাগরিতে ১০, দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে রয়েছেন ১২ ও তৃতীয় ক্যাটাগরিতে রয়েছে ১ পরিচালক নির্বাচন।
কাউন্সিলর কিভাবে মনোনিত হবে? প্রথম ক্যাটাগরিতে কাউন্সিলর সংখ্যা ৭১ জন। যেখানে থাকে বিভাগ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার মনোনিত ব্যক্তি। দেশের ৭ বিভাগ ও ৬৪ জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলর ভোটাধিকার পাবেন। বিসিবি এরই মধ্যে বিভাগীয় এবং জেলা ও ক্রীড়া সংস্থাকে এক মাস আগে কাউন্সিলর মনোনিত করতে চিঠি পাঠিয়েছে।
দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে কাউন্সিলর থাকে ৫৮ জন। যেখানে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, প্রথম-দ্বিতীয়-তৃতীয় বিভাগের ক্লাবগুলোর মনোনিত ব্যক্তি কাউন্সিলর হবেন। তৃতীয় ক্যাটাগরিতে আছেন জাতীয় দলের সাবেক ৫ অধিনায়ক ও সব সার্ভিসেস, সব বিশ্ববিদ্যালয়, সকল শিক্ষাবোর্ড, বিকেএসপি ও কোয়াব মনোনিতরা।
নির্বাচন কমিশন এখনও ঘোষণা করা হয়নি। তবে নির্বাচন কার্যক্রম আগের মতোই থাকবে। নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই নির্বাচনের প্রজ্ঞাপন জারি করবেন। এরপর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। এরপর আপত্তি ও শুনানি এবং চূড়ান্ত ভোট তালিকা প্রকাশ করবে। ধারাবাহিকভাবে নির্বাচন কমিশন মনোনয়নপত্র বিক্রি করা শুরু করবে। মনোনয়ন বিক্রি হবে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। এরপর নির্বাচন কমিশন মনোনয়ন যাচাই-বাছাই করবে এবং চূড়ান্ত করে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবেন। মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগও পাবেন প্রার্থীরা।
এরপর অক্টোবরে হবে নির্বাচন। নির্বাচনের একদিন পরই আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।
সবশেষ বিসিবি নির্বাচন হয়েছিল ৬ অক্টোবর। এবারও অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের ভেতরেই নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে বিসিবির। সেভাবেই নির্বাচনের সকল কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মন ন ত প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলন কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সিলেট কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ২২ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে নগরের আম্বরখানাস্থ বাসদ কার্যালয় থেকে তাদের আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বাসদ নেতারা অভিযোগ করেছেন, সকালে নিয়মিত পাঠচক্র চলাকালে হঠাৎ পুলিশ কার্যালয় ঘেরাও করে নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দিল শিবির
বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে এগিয়ে নিতে সিকৃবি উপাচার্যের অঙ্গীকার
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আজ (শনিবার) ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা নগরে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করেছিল। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগের সত্যতা মিললে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। গ্রেপ্তারদের নাম পরবর্তীতে জানানো হবে।’’
বাসদের সিলেট জেলা সভাপতি আবু জাফর বলেন, ‘‘ব্যাটারিচালিত রিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ (শনিবার) চৌহাট্টা থেকে আমাদের পূর্বঘোষিত ‘ভুখা মিছিল’ কর্মসূচি ছিল। কিন্তু শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতে পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর আমরা কর্মসূচি স্থগিত করি। তবে সব শ্রমিককে তা জানানো সম্ভব হয়নি। সকালে শহীদ মিনার এলাকায় কয়েকজন শ্রমিক জড়ো হন। কিন্তু কার্যালয়ে শুধু পাঠচক্র চলছিল। সেখানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২২ নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে গেছে।’’
এর আগে একই ইস্যুতে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মধ্যরাতে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ী এলাকার বাসা থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমনকেও আটক করে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকরা। ওই সময় আনোয়ার হোসেন সুমনসহ কয়েকজন বামঘরানার রাজনীতিকও আন্দোলনে অংশ নেন। আন্দোলনকারীরা ব্যাটারি রিকশা চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরে তা মেনে নিতে রবিবার (২ নভেম্বর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। সেই আলটিমেটাম শেষ হওয়ার একদিন আগে সিপিবির সুমন ও বাসদের ২২ নেতাকর্মীকে আটক করা হলো।
শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে সংঘাতের আশঙ্কায় রবিবারের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’
গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে শতাধিক রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর থেকে নগরে ব্যাটারি রিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা/নুর/বকুল