নড়াইলে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ দেখতে মানুষের ঢল
Published: 8th, September 2025 GMT
নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় নবগঙ্গা নদীতে অনুষ্ঠিত হলো আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। নৌকা বাইচ দেখতে নবগঙ্গা নদীর দুই পাড়ে হাজারো দর্শকের ঢল নামে।
প্রতিযোগিতায় নড়াইল,খুলনা ও গোপালগঞ্জ জেলা থেকে তিনটি নৌকা অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলমের উদ্যোগে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় নৌকাডুবিতে ৬০ জনের মৃত্যু
ঝালডাঙ্গা বিলে নৌকা বাইচ, দর্শকদের ঢল
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকেই নবগঙ্গা নদীর বারইপাড়া খেয়াঘাট থেকে কাঞ্চনপুর পর্যন্ত দুই কিলোমিটার জুড়ে নদীর দুই পাড়ে লোকজন জড়ো হতে থাকে। নড়াইল জেলাসহ পাশ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ দেখতে মানুষের আগমন ঘটে। এদিন প্রায় সন্ধা পর্যন্ত চলে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।
আয়োজক কমিটির সদস্য নাসির উদ্দিন জানান, নবগঙ্গা নদীর কাঞ্চনপুর গ্রাম থেকে নৌকা ছাড়া হয়। দুই কিলোমিটার নদী পাড়ি দিয়ে প্রতিযোগিতা শেষ হয় বারইপাড়া ঘাটে নির্মাণাধীন সেতুর কাছে এসেছে। পয়েন্ট ভিত্তিক এই প্রতিযোগিতায় তিনবার অংশগ্রহণ করে প্রথম হয়েছে গোপালগঞ্জের সামাদ মুন্সীর নৌকা।
নৌকা বাইচ দেখতে আসা মারজান ইসলাম বলেন, “নদীমাতৃক নড়াইল জেলায় নৌকা বাইচ হারিয়ে যেতে বসেছে। দীর্ঘকাল পর নবগঙ্গা নদীতে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হলো। আমরা খুব আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করেছি। আগামীতেও যেন এ ধারা অব্যাহত থাকে।”
প্রতিযোগিতা শেষে রাতে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কালিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান মিলু, কালিয়া পৌর বিএনপি সভাপতি শেখ সেলিম হোসেন প্রমুখ।
জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমাদের গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও প্রতিযোগিতা হারিয়ে যেতে বসেছে। মানুষ আজ আকাশ সংস্কৃতির দিকে ঝুঁকে পড়েছে। তরুণ সমাজ মোবাইলে ফেসবুক, ইউটিউব, অনলাইন গেমসহ ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন সাইটে সময় নষ্ট করছে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও প্রতিযোগিতা ফিরিয়ে আনতে ঐতিহ্যবাহী এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।”
ঢাকা/শরিফুল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র স নবগঙ গ
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদপুরে জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা, হাসপাতাল বন্ধ
চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে নবজাতক দাফনের সময় নড়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় শহরের তালতলা দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় আগামী দুই দিনের মধ্যে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন হাসপাতালটিতে নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছে। ওই নবজাতকের জন্মও হয় এই হাসপতালে। জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা করার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে আসা ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবর স্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।
এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, “হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সাথে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্রও নবায়ন নেই।”
তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সীলগালা করা হয়েছে। একই সাথে রোগীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”
এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।
অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।
ঢাকা/অমরেশ/এস