নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় নবগঙ্গা নদীতে অনুষ্ঠিত হলো আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। নৌকা বাইচ দেখতে নবগঙ্গা নদীর দুই পাড়ে হাজারো দর্শকের ঢল নামে।

প্রতিযোগিতায় নড়াইল,খুলনা ও গোপালগঞ্জ জেলা থেকে তিনটি নৌকা অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলমের উদ্যোগে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় নৌকাডুবিতে ৬০ জনের মৃত্যু

ঝালডাঙ্গা বিলে নৌকা বাইচ, দর্শকদের ঢল

রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকেই নবগঙ্গা নদীর বারইপাড়া খেয়াঘাট থেকে কাঞ্চনপুর পর্যন্ত দুই কিলোমিটার জুড়ে নদীর দুই পাড়ে লোকজন জড়ো হতে থাকে। নড়াইল জেলাসহ পাশ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ দেখতে মানুষের আগমন ঘটে। এদিন প্রায় সন্ধা পর্যন্ত চলে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।

আয়োজক কমিটির সদস্য নাসির উদ্দিন জানান, নবগঙ্গা নদীর কাঞ্চনপুর গ্রাম থেকে নৌকা ছাড়া হয়। দুই কিলোমিটার নদী পাড়ি দিয়ে প্রতিযোগিতা শেষ হয় বারইপাড়া ঘাটে নির্মাণাধীন সেতুর কাছে এসেছে। পয়েন্ট ভিত্তিক এই প্রতিযোগিতায় তিনবার অংশগ্রহণ করে প্রথম হয়েছে গোপালগঞ্জের সামাদ মুন্সীর নৌকা।

নৌকা বাইচ দেখতে আসা মারজান ইসলাম বলেন, “নদীমাতৃক নড়াইল জেলায় নৌকা বাইচ হারিয়ে যেতে বসেছে। দীর্ঘকাল পর নবগঙ্গা নদীতে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হলো। আমরা খুব আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করেছি। আগামীতেও যেন এ ধারা অব্যাহত থাকে।”

প্রতিযোগিতা শেষে রাতে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কালিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান মিলু, কালিয়া পৌর বিএনপি সভাপতি শেখ সেলিম হোসেন প্রমুখ।

জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমাদের গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও প্রতিযোগিতা হারিয়ে যেতে বসেছে। মানুষ আজ আকাশ সংস্কৃতির দিকে ঝুঁকে পড়েছে। তরুণ সমাজ মোবাইলে ফেসবুক, ইউটিউব, অনলাইন গেমসহ ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন সাইটে সময় নষ্ট করছে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও প্রতিযোগিতা ফিরিয়ে আনতে ঐতিহ্যবাহী এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।”

ঢাকা/শরিফুল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র স নবগঙ গ

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরোর দিন ফুরিয়ে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর বিবিসির। 

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করতে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিবিএস নিউজের ৬০ মিনিটসকে বলেন, “আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করছে।”

আরো পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয়।

ট্রাম্প এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান মাদক বন্ধ করার লক্ষ্যে নয়, বরং ট্রাম্প বিরোধী মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ‘অনেক কিছু’ সম্পর্কে।

বিবিসির মার্কিন নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে।

সম্প্রতি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলায় আপনি যেসব নৌযানে বিস্ফোরণ হতে দেখেন, তার প্রতিটিতে অন্তত ২৫ হাজার মাদকদ্রব্য ধ্বংস হয়। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহের জন্য দায়ী।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থলপথে ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প তা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “আমি এটা বলতে চাই না যে আমি এটা করব...আমি ভেনেজুয়েলার সাথে কী করব, আমি তা করব কিনা, তা আমি বলব না।”

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর অভিযোগ, নৌযানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘আধিপত্য বিস্তার’ করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প জানান, তার সরকার ‘সারা বিশ্ব থেকে’ সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘আসতে’ দেবে না।

তিনি বলেন, “তারা কঙ্গো থেকে আসে, তারা সারা বিশ্ব থেকে আসে, তারা আসছে, কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নয়। তবে বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা- খারাপ। তাদের গ্যাং আছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়ার’ নাম উল্লেখ করেন। তিনি এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গ্যাং’ হিসেবে অভিহিত করেন।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাদক পাচারকারী সংগঠন ও অপরাধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া এবং কার্টেল অব দ্য সানস, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা পরিচালনা করে। তবে কারাকাস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ