প্রিয় বিস্কুট

মনে হয় বসে থাকি এখানে একটানা বিরামহীন
উলুধ্বনি দিচ্ছে হিন্দুপাড়ায়
সোনালি আলোর ভিডিও থেকে জোনাকির সবুজ ঘ্রাণ
বাঁধভাঙা যৌবনের মতো উথলে উথলে
বের হয়ে আসছে
মোবাইলের স্ক্রিন থেকে।

বৃষ্টির পরে ছাতা নেভানোর মুহূর্তটি
পেঁয়াজ দিয়ে দারিকামাছের ভুনা আর মিনিকেট
চালের সরু সরু সাদা ভাত।
আমাকে কাবু করে রাখে নিরীহ ব্যাঙের শরীর
মুখের ভেতর প্রিয় বিস্কুট
নরম হয়ে যাচ্ছে।

চাঁদের তীরে বসে থই থই জ্যোৎস্নায় পা ডুবিয়ে থাকি
তুলানরম পাখির ছায়া কাঁপে জলে
আর ধানের পাতায় গ্যাঞ্জাম করে ভিনগাঁয়ের মাকড়সারা
অথচ বাঁশের মরা কঞ্চি হাতে নিয়ে
মা বসে আছে
দরজায়,
সুখ ফুরায়া যায়।

বৃক্ষশিশু

কাঠবেড়ালির পায়ে বেঁধে দিয়েছি হৃদয়
যেন আমার আত্মহত্যাগুলি কেউ ধরতে না পারে
এখানে হতাশাকে হাওয়াই মিঠাইয়ের পলিব্যাগে তুলে
শিশুদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে মহামান্য ঈশ্বর।
আমি আর জন্মাতে চাই না; হতে চাই না নাড়িছেঁড়া ধন
পুত্রের আগেই মরে যাবে পিতা, এমন পৃথিবীতে
আর জন্মাতে চাই না.

..এখানে প্রেমিকারা
সহায়সম্বলহীন কবির হাতের পাঁচ হতে পারেনি;
এখানে স্নানের জল গড়িয়ে যাওয়া অসংখ্য দুপুর
হামাগুড়ি দিচ্ছে কলপাড়ে, যেন পৃথিবীতে
দড়িছেঁড়া বাছুর, ধরি ধরি ধরা যায় না...
সন্ধ্যা হয়ে আসে আর অনন্ত অন্ধকারের ভেতর
ঝরে পড়ে সুন্দর শিউলি, মায়ের কিংবা প্রেমিকার
কান্না নয় ফুলকে চিরকাল জেনেছি, বৃক্ষশিশু।

গোল্লা

মানুষ সিলেট যায়, কেউ কেউ তো কক্সবাজার
সমুদ্রসৈকতে পা ভেজায়, তীরের বালুতে আঁকে
লাভ, ভেতরে লিখে নামের ইংরেজি প্রথম অক্ষর
ঢেউ এসে এই সব একদিন মুছে যেতে থাকে;
অনেকের কাছে লাল লাল কাঁকড়ার কথা শুনি
অনেকে বলেছে, সবুজ পাহাড়ে গেলে মনে হয়
আর কখনো না ফিরি ঘরে, তবু ফিরে আসে তারা
পৃথিবীর মানুষেরা এতটা মুমূর্ষু গদ্যময়...
আমার কোথাও যেতে ইচ্ছে করে না নিঃসঙ্গতায়
যদিও মাকড়সার জাল আটকে রাখে শিশির
যদিও বাতাসে ভাসে সুর তালপাতার বাঁশির
তুমি দ্যাখো, ধানফুল লেগে আছে পায়ের পাতায়,
দুবলোঘাস চিবিয়ে লাগাব হৃদয়ের ক্ষততে
আপাতত ভালোবেসে চলে যাওয়া যাক গোল্লাতে।

হলুদ

কবিতার বই থেকে শুরু করি আলাপ আর একটি মরা পাতা
বুকের দিকে ঘুরে ঘুরে নেমে আসে অতর্কিত ভঙ্গিমায়—
পৃথিবীর সমস্ত চিলের চিৎকার আটকে থাকে ছবির ফ্রেমে
অথচ হিন্দি কোনো গানের মতো স্পর্শ করতে জানি
দ্রুত সময়ে ঝড় সামলানো বটগাছ।
পটকা মেরো না শিশুরা, চোখে লাগে
শীতের সূর্য নয়, হলুদমাখা মুখ যেন উজ্জ্বল কোনো নক্ষত্র
আমাকে
ছারখার করে দেয়
হলুদসন্ধ্যার আলো–অন্ধকারে;
ঝিঁঝিরা বলছে, ভুলে যাও বৎস
অন্য কোনো পুরুষের বড়শির টোপ গিলে ফেলে নারী–মৎস্য!
কবিতার বই থেকে শুরু করি আলাপ আর রজনীগন্ধার পাপড়ি
পিষে যাচ্ছে পিঠের নিচে, ঘরজুড়ে তার আত্মহত্যার ঘ্রাণ।

সাধুসঙ্গী

নিঃশব্দে হেঁটে বেড়াচ্ছে জোনাকিলাইটার যেন
কামরাঙাগাছ থেকে ফুলেরা নামছে মাটিতে
সিঁথানে চাঁদ হয়ে আছে ঘুমের বড়ি
অথচ আহ্লাদি চোখে ওড়নার ঘ্রাণ লেগে আছে
এত কিছু কথা সহজিয়া বাতাসের কানে
বাংলা লিরিকের মতো স্পর্শ করে আর
একদিন প্রজাপতি হয়ে যায় ঠোঁট
উড়তে উড়তে প্রেমিকার কাছে পাঠিয়ে দেয়
রোদের ফ্লাইং কিস। শীতকালীন অবসরে
কাছে বসো নিয়তির মতো
বসে থাকো একটানা নিরলসভাবে
একদিন দৈত্যাকার শূন্যতাকে ভয় দেখাব
ভালোবেসে ভ্রমণে যাব পাহাড়ে
সমুদ্রস্নান থেকে ফিরে এসে
পোয়াতি ধানগাছ আর শিমফুলে ভরে ওঠা
গ্রামের কুমারী কন্যাকে দেব বিবাহিত জীবন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১

মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতর তিনটি প্লাস্টিকের বালতিতে লুকিয়ে রাখা ২৩টি ককটেল উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের বোনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করে তারা। পাশাপাশি মোহাম্মদ হাসান নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

রবিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার বৈখর অনির্বাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার ড্রেন থেকে ককটেলগুলো উদ্ধার হয়। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

অভয়নগরে দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ককটেল হামলা, আহত ৩

দিনাজপুরে পুকুর পাড় থেকে গ্রেনেড উদ্ধার 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ঢাকনা খোলেন স্থানীয়রা। এ সময় তারা প্লাস্টিকের বালতিতে তুষ দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় কিছু বস্তু দেখতে পান। পাশাপাশি তিনটি ড্রেনের ঢাকনা খুলে তারা একই চিত্র দেখেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রেনের ভেতর থেকে তিনটি বালতিতে রাখা ২৩টি তাজা ককটেল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসানকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। 

আটক হাসান মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপন হোসেন পাটোয়ারীর ভাগ্নি জামাই বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ককটেলগুলো উদ্ধার করে। এ সময় মোল্লাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারির বোন সেলিনা বেগমের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসান নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ঢাকা/রতন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ