ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়ে তদবির করতে এসে গ্রেপ্তার হয়েছেন বাচ্চু মিয়া (৫০) নামের এক ব্যক্তি। গতকাল সোমবার বিকেলে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে দুটি হত্যাসহ চারটি মামলা আছে।

গ্রেপ্তার বাচ্চু মিয়ার (৫০) বাড়ি সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের ধামাউড়া গ্রামে। তিনি কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অরুয়াইল ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গতকাল সন্ধ্যায় তাঁকে সরাইল থানা–পুলিশের কাছে হস্থান্তর করা হয়।  

থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাচ্চু মিয়ার বিরুদ্ধে সরাইল এবং ঢাকার আদাবর থানায় দুটি হত্যা মামলা রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন থানায় দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে গত শনিবার ধামাউড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য শিরিন আক্তারকে মারধরের অভিযোগে সরাইল থানায় ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় বাচ্চু মিয়া এক নম্বর আসামি।

গত সোমবার দুপুরের পর বাচ্চু মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে তদবিরে যান। সেখানে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে গত শনিবার করা মামলটি মিথ্যা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে থেকে ডিবি পুলিশ বাচ্চু মিয়াকে মাদরাসাছাত্র হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করেন। এর দুই ঘন্টা পর বিএনপির দুই নেতার সুপারিশে ডিবি পুলিশ তাঁকে ছেড়ে নেয়। এর পর কিছু দিন তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। গত মঙ্গলবার ধামাউড়া গ্রামে তিনি কয়েকজনকে নিয়ে শিরিণ আক্তারকে মারধর করেন। এ ঘটনায় গত শনিবার শিরিন আক্তার সরাইল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

শিরিন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাচ্চু মিয়ার নেতৃত্বে আমাকে মারধর করা হয়েছে। তাঁর লোকজন মামলা তুলে নিতে আমাকে হুমকি দিচ্ছে। তাঁর লোকজনের ভয়ে আমি একা মেয়েকে স্কুলে আনা-নেওয়া করতে পারছি না। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’

বাচ্চু মিয়াকে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, বাচ্চু মিয়ার বিরুদ্ধে দুটি হত্যাসহ চারটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। তিনি সরাইল থানা পুলিশের জিম্মায় রয়েছেন। তাঁকে আজ মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরোর দিন ফুরিয়ে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর বিবিসির। 

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করতে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিবিএস নিউজের ৬০ মিনিটসকে বলেন, “আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করছে।”

আরো পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয়।

ট্রাম্প এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান মাদক বন্ধ করার লক্ষ্যে নয়, বরং ট্রাম্প বিরোধী মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ‘অনেক কিছু’ সম্পর্কে।

বিবিসির মার্কিন নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে।

সম্প্রতি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলায় আপনি যেসব নৌযানে বিস্ফোরণ হতে দেখেন, তার প্রতিটিতে অন্তত ২৫ হাজার মাদকদ্রব্য ধ্বংস হয়। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহের জন্য দায়ী।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থলপথে ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প তা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “আমি এটা বলতে চাই না যে আমি এটা করব...আমি ভেনেজুয়েলার সাথে কী করব, আমি তা করব কিনা, তা আমি বলব না।”

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর অভিযোগ, নৌযানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘আধিপত্য বিস্তার’ করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প জানান, তার সরকার ‘সারা বিশ্ব থেকে’ সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘আসতে’ দেবে না।

তিনি বলেন, “তারা কঙ্গো থেকে আসে, তারা সারা বিশ্ব থেকে আসে, তারা আসছে, কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নয়। তবে বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা- খারাপ। তাদের গ্যাং আছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়ার’ নাম উল্লেখ করেন। তিনি এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গ্যাং’ হিসেবে অভিহিত করেন।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাদক পাচারকারী সংগঠন ও অপরাধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া এবং কার্টেল অব দ্য সানস, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা পরিচালনা করে। তবে কারাকাস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ