সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে দুই বাংলাদেশি কৃষকের জমি চাষে বাধা দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এ নিয়ে আজ রোববার দুপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের পতাকা বৈঠক হয়। বৈঠকে আগামী ১৫ জানুয়ারি পরিমাপের পর বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন সাতক্ষীরা ৩৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশরাফুল হক। বিএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ১০২ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার রমেশ কুমার।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার লক্ষ্মীদাড়ি গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল হোসেন বলেন, ভোমরা স্থলবন্দর-সংলগ্ন লক্ষ্মীদাড়ি সীমান্তের কুমড়াখালী খালের ধারে বাংলাদেশ অংশে ১০ শতক জমি লিজ নিয়ে কয়েক বছর ধরে চাষাবাদ করছি। সেখানে শনিবার সকালে বোরো ধান রোপণ করতে গেলে বিএসএফ বাধা দেয়। ওই জমি ভারতীয় অংশের বলে দাবি করে তারা। বিএসএফের বাধার মুখে একপর্যায়ে রোপণ বন্ধ রাখা হয়।

একই গ্রামের শাহীন গাজী বলেন, আমার বাবা বাড়ির দক্ষিণ পাশে প্রায় এক বিঘা জমি ডিসিআর নিয়ে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে চাষাবাদ করে আসছেন। শনিবার বিকেলে দুই শ্রমিক নিয়ে ওই জমিতে গেলে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বিএসএফ সদস্যরা বাধা দেয়।

বিষয়টি জানতে পেরে পতাকা বৈঠকের প্রস্তাব দেয় বিজিবি। আজ বৈঠকের পর ভোমরা বিজিবির সুবেদার আফজাল হোসেন জানান, আপত্তিকৃত অংশ ব্যতীত অন্য জায়গায় চাষাবাদ অব্যাহত থাকবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আপত্তিকৃত জায়গায় ১৫ জানুয়ারি উভয় দেশের সার্ভে বিভাগ কর্তৃক যৌথ মাপ জরিপের পর বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে বলে একমত পোষণ করা হয়েছে বৈঠকে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে

দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।

খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।

উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।

সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।

উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
  • ভুলে সীমানায় পা, বিএসএফ সদস্যকে আটক করল পাকিস্তান
  • স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ দারিদ্র্য নিরসনে অন্যতম বাধা