প্রয়োজনীয় সংস্কার করে চলতি বছরেই জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করে বিএনপি। দলটি বলেছে, অন্য কোনো ভাবনা না ভেবে সরাসরি জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। আগামী দিনে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে।

রোববার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের সঙ্গে বৈঠকের পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেন। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.

আব্দুল মঈন খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।

আমীর খসরু বলেন, বৈঠকে দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কবে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সংস্কারের ব্যাপারে আমাদের ভাবনা কী– এসব নিয়ে কথা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে বলেছি, এ বছরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। 

তিনি বলেন, অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি দেশ বেশি দিন চলতে পারে না। অগণতান্ত্রিক সরকারের সঙ্গে জনগণের সংশ্লিষ্টতা থাকে না। প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠক প্রসঙ্গে আমীর খসরু আরও বলেন, সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যে ক’টি বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছতে পারব, সেগুলো দ্রুত সংস্কার করা যেতে পারে।  যেগুলো বিষয়ে ঐকমত্য হবে না,  সেগুলো আগামী দিনে নির্বাচনে প্রতিটি দল জনগণের কাছে তুলে ধরবে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আগামী দিনে সংসদে পেশ করা হবে। সংসদে আলোচনা হবে, তর্ক-বিতর্ক হবে এবং পাস করা হবে। বৈঠকে দেশের অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী দিনে দেশের অর্থনীতিকে ভঙ্গুর অবস্থা ও গর্ত থেকে তুলে আনার পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। এই সরকারের সময় যদি কোনো কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়, সেটা অবশ্যই বিএনপি সমর্থন করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বৈঠকে এ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বিএনপি বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানায়।

‘নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব’

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমেই শুধু গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। রোববার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বাংলাদেশ লেবার পার্টির বৈঠক শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সীমান্তে যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা নেওয়ার আগে ঢাকা-দিল্লি আলোচনা হওয়া দরকার। বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান এবং ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন। লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল এতে অংশ নেয়।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘মিয়ানমারকে মানবিক করিডোর দেওয়া স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সংকট’

মিয়ানমারের জন্য তথাকথিত মানবিক করিডোর দেওয়ার খবরে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এ ধরনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার  অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেই। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশের বিদ্যমান সংবিধান লংঘন করে এই ভয়ংকর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সংকটে ফেলবে।

নেতারা বলেন, এই করিডোর দেয়া হলে বাংলাদেশের সীমান্ত অরক্ষিত হয়ে পড়বে। এমনিতেই মায়ানমারের নাসাকা বাহিনীর সাথে বাংলাদেশের বিজিবির নিয়মিত সংঘর্ষ চলছে। এই করিডোর দেয়া হলে মায়ানমার জান্তা বাংলাদেশের নিরাপত্তাকেও নানা অজুহাতে বিপন্ন করে তুলবে। 

সিপিবি নেতারা বলেন, হঠাৎ করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে পশ্চিমা দেশগুলোর এই উৎসাহ সন্দেহজনক। এটি সাম্রাজ্যবাদের ভূ-রাজনৈতিক চক্রান্ত থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। কারণ, জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা দেশগুলো মানবিক করিডরের জন্য বাংলাদেশের বিকল্প হিসেবে মিয়ানমারের সিতওয়ে বন্দর ছাড়াও বঙ্গোপসাগরের মিয়ানমার উপকূলের অনেক জায়গাই ব্যবহার করতে পারে।

সুতরাং বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির কথা বিবেচনায় না রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যদি এ ধরনের দেশবিরোধী কোন পদক্ষেপ নেয়, বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক জনতা তাকে প্রতিহত করবে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে এবং ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায় সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যবাদী শক্তিকে যেকোন সুবিধে দেওয়ার বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের পদক্ষেপ সচেতনভাবে রুখে দাঁড়াতে গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

এটা চব্বিশের জুলাইয়ে শত শহীদের স্বৈরাচারী বিরোধী গণতন্ত্রের  আকাংখা ও প্রত্যাশাকে ভুণ্ডল করে দেবে।

তাই এই ষড়যন্ত্রকে দেশের গণতন্ত্রের লড়াকু জনগণে নিয়ে প্রতিহত করা হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

ঢাকা/হাসান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এনসিপি-গণসংহতি আন্দোলনের বৈঠক: নির্বাচনের ঘোষিত সময়ে সংস্কারে ঐক্য
  • বাঁশের ‘সিলিং গ্রাম’ চাঁদপুরের ছটাকি
  • ‘মিয়ানমারকে মানবিক করিডোর দেওয়া স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সংকট’
  • সংস্কার ও নির্বাচন একই সঙ্গে চলতে পারে: বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি
  • ঐকমত্য কমিশন দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে পারলে দ্রুত রাজনৈতিক বোঝাপড়া সম্ভব: সাইফুল হক
  • রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য তৈরিতে আলোচনার সিদ্ধান্ত গণসংহতির
  • কোনো মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
  • কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
  • কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু
  • জনগণ গণতন্ত্রের জন‍্য রক্ত দিয়েছে, কোনো মহামানবের প্রতিষ্ঠার জন্য নয়: আমীর খসরু