চলতি বছরই জাতীয় নির্বাচন করা জরুরি: আমীর খসরু
Published: 13th, January 2025 GMT
প্রয়োজনীয় সংস্কার করে চলতি বছরেই জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করে বিএনপি। দলটি বলেছে, অন্য কোনো ভাবনা না ভেবে সরাসরি জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। আগামী দিনে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে।
রোববার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের সঙ্গে বৈঠকের পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেন। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.
আমীর খসরু বলেন, বৈঠকে দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কবে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সংস্কারের ব্যাপারে আমাদের ভাবনা কী– এসব নিয়ে কথা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে বলেছি, এ বছরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি দেশ বেশি দিন চলতে পারে না। অগণতান্ত্রিক সরকারের সঙ্গে জনগণের সংশ্লিষ্টতা থাকে না। প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠক প্রসঙ্গে আমীর খসরু আরও বলেন, সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যে ক’টি বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছতে পারব, সেগুলো দ্রুত সংস্কার করা যেতে পারে। যেগুলো বিষয়ে ঐকমত্য হবে না, সেগুলো আগামী দিনে নির্বাচনে প্রতিটি দল জনগণের কাছে তুলে ধরবে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আগামী দিনে সংসদে পেশ করা হবে। সংসদে আলোচনা হবে, তর্ক-বিতর্ক হবে এবং পাস করা হবে। বৈঠকে দেশের অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী দিনে দেশের অর্থনীতিকে ভঙ্গুর অবস্থা ও গর্ত থেকে তুলে আনার পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। এই সরকারের সময় যদি কোনো কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়, সেটা অবশ্যই বিএনপি সমর্থন করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বৈঠকে এ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বিএনপি বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানায়।
‘নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব’
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমেই শুধু গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। রোববার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বাংলাদেশ লেবার পার্টির বৈঠক শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সীমান্তে যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা নেওয়ার আগে ঢাকা-দিল্লি আলোচনা হওয়া দরকার। বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান এবং ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন। লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল এতে অংশ নেয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা মঙ্গলবার আবার শুরু
আগামী মঙ্গলবার থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা আবার শুরু করতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে এই আলোচনা শুরু হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবারের আলোচ্যসূচি হিসেবে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো আগের অসমাপ্ত আলোচনা সমাপ্ত করা (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন ও নারী প্রতিনিধিত্ব), দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ (নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ) এবং প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, মঙ্গলবার আলোচনা শেষ হওয়ার পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ প্রথমে সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফ করবেন। পরে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা ব্রিফ করবেন। আলোচনা অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন-নিউজ (বিটিভি-নিউজ) সরাসরি সম্প্রচার করবে।
সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠনের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয় এবং ২০ মার্চ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করে কমিশন। গত ১৯ মে পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, সিপিবি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে আলোচনা করেছে কমিশন।
প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় অনেক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হলেও মৌলিক সংস্কারের কিছু প্রস্তাব নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। সেসব প্রস্তাবে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ২ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরের দিন বিষয়ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তিনটি বিষয়ে (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন ও নারী প্রতিনিধিত্ব) আলোচনার পর ওই দিন অধিবেশন মুলতবি করা হয়। সেই মুলতবি বৈঠকই মঙ্গলবার আবার শুরু হচ্ছে।
আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবারও আলোচনা হবে বলে আজ রোববার বিকেলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বুধ ও বৃহস্পতিবারের আলোচ্য সূচি (আলোচনার বিষয়বস্তু) পরে জানাবে কমিশন।