বাবা হারালেন নির্মাতা রায়হান রাফী
Published: 13th, January 2025 GMT
চলচ্চিত্র পরিচালক রায়হান রাফীর বাবা সিরাজ উদ্দিন চৌধুরী মারা গেছেন। রোববার দিবাগত রাত পৌনে তিনটায় ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। রাফীর বাবার মৃত্যুর খবরটি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন চিত্রনায়িকা তমা মির্জা।
৭৫ বছর সিরাজ উদ্দিন চৌধুরী বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। দুই বছর আগে একবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল তার। তারপর থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই তিনি জীবন যাপন করছিলেন। এছাড়া তিনি ডায়াবেটিসেও আক্রান্ত ছিলেন।
তমা বলেন, ‘রোববার বিকেলে রাফীর বাবা হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন। এরপর তাকে দ্রুত গুলশানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। তারপর সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে আমরা আংকেলকে নিয়ে আরেকটি হাসপাতালে যাই। সন্ধ্যায় সেখানে তাকে ভর্তি করানোর পর দ্রুত তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। দ্রুত আইসিইউ হয়ে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার ঘণ্টা তিনেকের মধ্যে চিকিৎসক আংকেলের মৃত্যুসংবাদ আমাদের জানান।’
রাফীরা তিন বোন ও এক ভাই। দুই বোন যুক্তরাজ্যে থাকেন। আরেকজন সিলেটে। এক বোন দুই সপ্তাহ আগে বাংলাদেশে এসেছেন।
শুরুর দিকে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও গানের ভিডিও বানালেও চলচ্চিত্র বানিয়ে সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পান রায়হান রাফী। প্রথম চলচ্চিত্র ‘পোড়ামন ২’ বানিয়ে নিজেকে সবার কাছে পরিচিত করে তোলেন তিনি। এই পরিচালকের সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘তুফান’, যা গত বছরের সবচেয়ে আলোচিত ও ব্যবসাসফল ছবি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’
স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’
আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।