ছয় হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে স্পাইসি বা মশলাদার খাবার গ্রহণ করছে মানুষ। বিশ্বব্যাপী মশলাদার খাবারের চাহিদাও অনেক। ১৬ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক ‘হট অ্যান্ড স্পাইসি ফুড ডে’। অন্তত ২০০০ বছর ধরে এই দিবসটি পালন করা হচ্ছে। এই দিবসে শরীরে যেসব খাবার তাপ উৎপাদন করতে পারে এমন খাবার গ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করা হয়।
স্পাইসি বা মশলাদার খাবার শরীরের জন্য নানা কারণে ভালো। স্পাইসি ফুডের কয়েকটি উপকারিতা জেনে নিন।
১.
আরো পড়ুন:
যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য সারা আলী খানের পরামর্শ
যে অভ্যাসগুলো তারুণ্য ধরে রাখে
২. মশলা প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে। আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে আদা ও রসুন ব্যবহার করা হয় আবার মশলা হিসেবেও এগুলোর অধিক ব্যবহার রয়েছে। বহু শতাব্দী ধরে মাথাব্যথা, অটোইমিউন ডিসঅর্ডার এবং আর্থ্রাইটিস চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে এসব মশলা।
৩. মশলাযুক্ত খাবার বিপাককে দ্রুত করতে সাহায্য করতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বিভিন্ন মশলা যেমন— গোলমরিচ, হলুদ, দারুচিনি এবং জিরা ক্ষুধা কমাতে সহায়তা দেয়। এগুলো বিপাক প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে।
দিনটি উদযাপন করতে বাসায় ‘হট অ্যান্ড স্পাইসি’ ফুড পার্টির আয়োজন করতে পারেন। অথবা স্পেশার কোনো রেসিপি তৈরি করতে পারেন।
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান
১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।
কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!
দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।
কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।
আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।
অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।
এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।
একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।
বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান