বালু মহালের ড্রেজার থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে লক্ষ্য করে গুলি!
Published: 17th, January 2025 GMT
নরসিংদীর রায়পুরার মেঘনা নদীতে অভিযানে গেলে অবৈধ বালু মহালের ড্রেজার থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে লক্ষ্য করে গুলি করার ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে রায়পুরা উপজেলার চরমধূয়া এলাকার মেঘনা নদীতে এ গুলির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা।
ইউএনও জানান, মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে দুটি স্থানে বালু উত্তোলন করার খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শফিকুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাজ্জাদ পারভেজ পুলিশ ফোর্স নিয়ে অভিযানে যান। এসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বালু মহাল ইজারা নিয়ে নরসিংদীর রায়পুরার চরমধূয়া সীমান্তে এসে বালু উত্তোলন করার দায়ে একটি ড্রেজার জব্দ এবং দুইজনকে আটক করে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পরে স্পিডবোট নিয়ে একই এলাকার অপর একটি অবৈধ বালু মহালে অভিযানে গেলে ড্রেজার হতে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়। এসময় পর্যাপ্ত ফোর্স না থাকায় অভিযান পরিচালনা না করেই পিছু হটেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
কে বা কারা এ গুলির ঘটনা ঘটিয়েছে তা চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ইউএনও।
ঢাকা/হৃদয়/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস