ভোমরা সীমান্তে যৌথ মাপ-জরিপ স্থগিত
Published: 21st, January 2025 GMT
সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে বাংলাদেশিদের জমিতে ধান চাষে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্য ও কয়েকজন ভারতীয় নাগরিকের বাধা দেওয়ার ঘটনায় যৌথ মাপ ও জরিপ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তবে বর্তমানে সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) ভোমরা বন্দরের লক্ষ্মীদাড়ি এলাকায় অবস্থান করে দেখা যায়, বিজিবি সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে কাউকে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। আর সীমান্তের ওপারে ভারতের অংশে টহল দিচ্ছেন বিএসএফ সদস্যরা।
এদিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই দেশের সার্ভে বিভাগের জমি মাপ ও জরিপ করার কথা ছিল গতকাল সোমবার। ১২ জানুয়ারি বিজিবি ও বিএসএফের পতাকা বৈঠকে যৌথভাবে মাপ ও জরিপের সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের প্রধান কার্যালয় থেকে বলা হয়, ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে ২০ জানুয়ারি মাপ ও জরিপের কথা উল্লেখ করে ঢাকায় জরিপ অধিদপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু জরিপ অধিদপ্তর থেকে তাদের কিছু জানানো হয়নি।
সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভোমরা ক্যাম্পের হাবিলদার মিজানুর রহমান বলেন, “অনিবার্য কারণবশত আজ যৌথ মাপ ও জরিপ হবে না।”
সাতক্ষীরার লক্ষ্মীদাড়ি গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল হোসেন বলেন, “ভোমরার লক্ষ্মীদাড়ি সীমান্তের কুমড়াখালী খালের বাংলাদেশ অংশে ১০ শতক জমি তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে ইজারা নিয়েছেন। সেই জমিতে ১১ জানুয়ারি সকালে বোরো ধান রোপণ করতে যান। এ সময় বিএসএফ ও ভারতীয় লোকজন তাকে ধান রোপণ করতে বাধা দেন। ওই জমি ভারতীয় অংশের বলে দাবি করেন তারা। একপর্যায়ে ধানের চারা রোপণ বন্ধ রাখেন তিনি।”
একই গ্রামের শাহীন গাজী বলেন, “তার বাবা নজরুল ইসলাম গাজী বাড়ির দক্ষিণ পাশে প্রায় এক বিঘা জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে চাষাবাদ করে আসছেন। কয়েক দিন আগে দুজন শ্রমিক নিয়ে ওই জমিতে চাষ করতে গেলে ভারতের বিএসএফের সদস্যরা বাধা দেন। ওই জমি ভারতের মধ্যে পড়েছে বলে দাবি তাদের।”
ঢাকা/শাহীন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসএফ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।
খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।
উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।
উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।