বাংলা চলচ্চিত্রে যাঁদের হাত ধরে নবযুগের সূচনা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে অন্যতম নায়করাজ রাজ্জাক। জন্মস্থান কলকাতা হলেও ১৯৬৪ সালে তিনি পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে চলে আসেন। শুরুর দিকে করতে হয়েছে অনেক কষ্ট। অভিনয়ে সুযোগের জন্য ঘুরতে হয়েছে অনেকের দ্বারে দ্বারে। অপেক্ষায় ছিলেন শুধু একটা সুযোগের। তাকে সেই সুযোগটি দেন দেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ও গল্পকার জহির রায়হান। এজন্যই বোধহয় রাজ্জাকের কাছে আজীবন স্মরণীয় ও শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন তিনি।

কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের জন্মদিন আজ। বিশেষ এই দিনে সামনে এসেছে রাজ্জাকের পুরোনো একটি সাক্ষাৎকারে ভিডিও।

সেখানে রাজ্জাক বলেন, ‘জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। নাটক করেছি, টেলিভিশনে ছোট্ট অনুষ্ঠানও করাতাম। সেখান থেকে যে অর্থ পেতাম তাতেই সংসার কোনোরকম চলত। জীবনের সঙ্গে খুব যুদ্ধ করেছি। সেই যুদ্ধের সময় যে সেনাপতি আমাকে সৈনিক হিসেবে পথ দেখিয়েছিলেন তাঁকে যদি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ না করি তাহলে আমার জীবন ব্যর্থ। তিনি হলেন জহির রায়হান সাহেব। যিনি আমাকে চলচ্চিত্রে এনেছেন।’

প্রায় পাঁচ দশকের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন রাজ্জাক। মেধা, যোগ্যতা ও পরিশ্রম দিয়ে তিনি হয়েছেন নায়করাজ রাজ্জাক।

ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের স্মৃতিচারণ করে রাজ্জাক বলেন, “ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য আমি যখন পাগলের মত ঘুরে বেড়াচ্ছি, বিভিন্ন জায়গা থেকে আমাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে তখন জহির রায়হান সাহেব আমাকে সুযোগ দিয়েছেন। প্রথম দেখায় তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘আমি আপনাকে নায়ক বানাবো’। তিনি আমাকে নায়ক বানানোর জন্য ‘হাজার বছর ধরে’ ছবিতে নেওয়ার কথা ছিল কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত নানা কারণে সিনেমাটি হয়নি। পরবর্তীতে তিনি ‘বেহুলা’ সিনেমায় আমাকে সুযোগ করে দেন।”

‘বেহুলা’ সিনেমার পর তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে অভিনয় করে গেছেন। রাজ্জাক বলেন, ‘জহির রায়হান সাহেবের পরামর্শে আমি পরবর্তীতে এগিয়ে গেছি। তিনি আমাকে শিখিয়েছেন, চলচ্চিত্রে লোভ করলে কিছুই পাওয়া যায় না, বরং ত্যাগ করতে হয়। তার এই বাণী আমি জীবনের প্রত্যেকটি পর্যায়ে মেনে চলেছি। তাই আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় ও শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব জহির রায়হান সাহেব।’

চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে রাজ্জাকের বয়স যখন ৩৫ বছর তখনই এই সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করা হয়। সেসময় তিনি বলেন, ‘৩৫ বছর হল বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আমি নিজেকে জড়িয়ে রেখেছি। আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া হল দেশের মানুষের স্নেহ-মমতা-ভালোবাসা। কারণ, একজন শিল্পীকে এতোদিন ধরে শ্রদ্ধার আসনে বসিয়ে রাখা পৃথিবীতে খুব বিরল। আমি একজন শিল্পী বা নায়ক যিনি দেশের মানুষের কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে আছি। এর থেকে বড় পাওয়া আর কিছু হতে পারে না।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন য়কর জ র জ জ ক কর জ র জ জ ক চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।

আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।

আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।

সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
  • পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না: আসিফ নজরুল
  • বিসিআইসির নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ
  • এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
  • ৪৪তম বিসিএস: মনোনীত প্রার্থীদের তথ্য চেয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • ‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’ 
  • ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
  • মাইলস্টোনে দগ্ধ ৩৩ জন এখনো ভর্তি, আইসিইউতে ৩
  • শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনলে বোঝা যায়, তাঁর এখনো প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা আছে: আইন উপদেষ্টা
  • দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে