নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় মো. আলিফ (১৮) নামে এক কিশোরকে গুলি করে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শামীম ওসমানকে প্রধান আসামি করে একটি একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলায় শামীম ওসমানের  ভাই জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি সেলিম ওসমান, ছেলে অয়ন ওসমান ও ভাতিজা আজমেরি ওসমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক ভূঁইয়া রাজু ও নাসিক ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আব্দুর রহিম মেম্বারসহ ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করে  অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে মামলা দায়ের করার এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম। এরআগে আদালতের নির্দেশে বুধবার দিবাগত রাত ১২টায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার বাদী আহত মো.

আলিফের পিতা মো. অহিদ মিয়া। তিনি পরিবার নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের ধনুহাজী রোড এলাকায় বসবাস করেন।  

মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২১ জুলাই বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের ডাচ-বাংলা ব্যাংক এলাকায় ভিকটিমসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলন চলাকালীন সময়ে সাবেক এমপি শামীম ওসমান, তার ভাই জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি সেলিম ওসমানের নির্দেশে এবং শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরি ওসমান ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়ার নেতৃত্বে সশস্ত্র অবস্থায় মিছিলে হামলা চালায়। হামলায় তারা আগ্নেয়াস্ত্র, শর্টগান, পিস্তল, ককটেল, লাঠি, ইট-পাটকেল এবং ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে।

হামলাকারীদের গুলিতে ভিকটিমের বাম পায়ের হাঁটুতে গুলি লাগে এবং তিনি গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা ট্রাস্ট হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘ চিকিৎসা গ্রহণ করেন। চিকিৎসা শেষে বাদী থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানায় মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি আদালতে মামলার আবেদন করেন। 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, আমরা আদালতে নির্দেশে মামলাটি থানায় রুজু করেছি।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ল ম ওসম ন স দ ধ রগঞ জ শ ম ম ওসম ন ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ অয়ন ওসম ন স দ ধ রগঞ জ থ ন শ ম ম ওসম ন স ব ক এমপ দ য় র কর

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ