জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংস্কারের ওপর এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করনীতি বারবার পরিবর্তন হলে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা যথাযথভাবে করা যায় না। বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হন। ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতির স্বার্থে করনীতির ধারাবাহিকতা থাকা দরকার। কোনো পরিবর্তনের চিন্তা থাকলে তার জন্য অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ এবং অনেক আগে থেকে ঘোষণা দেওয়া জরুরি। গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সিএ ভবনে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) যৌথভাবে এর আয়োজন করে। 
সরকার গঠিত এনবিআর সংস্কার কমিটির সদস্য এবং সংস্থাটির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, তাদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার কোনো সময়সীমা দেওয়া হয়নি। তারা অন্তর্বর্তীকালীন একটি রিপোর্ট দিয়েছেন এবং চেষ্টা করছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের। তিনি মনে করেন, এনবিআর সংস্কারে প্রথম দরকার নীতি এবং প্রশাসন আলাদা করা। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ডিজিটাইজেশন। তাঁর মতে, এনবিআরকে ক্ষমতায়িত করতে হলে সংস্থাটিকে স্বাধীন করতে হবে।  

সংস্কার কমিটির সদস্য এবং এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড.

নাসিরউদ্দীন আহমেদ বলেন, করনীতির ধারাবাহিকতা খুব দরকার। ধারাবাহিকতা না থাকলে যথাযথ ব্যবসায়িক পরিকল্পনা করা যায় না। রাজস্ব সংগ্রহ বাড়াতে এনফোর্সমেন্ট জোরদার করতে হবে এবং ব্যাপকভাবে মোটিভেশনে যেতে হবে। তিনি মনে করেন, অর্থনীতি সমৃদ্ধির দিকে না গেলে এবং সুশাসনের ঘাটতি থাকলে কর আদায় করা কঠিন। ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাহত করে কর সংগ্রহ করতে গেলে কাজ দেবে না। 

সংস্কার কমিটির সদস্য এবং এনবিআরের সাবেক সদস্য আমিনুর রহমান অর্থ পাচার প্রতিরোধ ও উৎসে করহার যৌক্তিকীকরণের ওপর জোর দেন। কমিটির আরেক সদস্য এবং এনবিআরের সাবেক সদস্য ফরিদ উদ্দিন কার্যকর করহার অনেক বেশি বলে মন্তব্য করেন। পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ নীতির ধারাবাহিকতার ওপর জোর দেন। সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান উচ্চাকাঙ্ক্ষী সংস্কারের প্রয়োজনীতা তুলে ধরেন। 
বৈঠকে উপস্থাপনা করেন আইসিএবির সিইও শুভাশীষ বসু। স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিএবি সভাপতি মারিয়া হাওলাদার। ইআরএফের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি দৌলত আক্তার মালা। আলোচকদের মধ্যে ছিলেন ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান, আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবির ও জামাল উদ্দিন আহমেদ, এফবিসিসিআইর প্রশাসক হাফিজুর রহমান প্রমুখ। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: করন ত ন ত র ধ র ব হ কত কম ট র র ওপর ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বকাপে জায়গা করতে বিশ্বকাপজয়ীকে কোচের দায়িত্ব দিল ইতালি

দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা যে কতটা গৌরবের আর আনন্দের, সেটা একজন বিশ্বকাপ জয়ের-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড়ের চেয়ে আর কে ভালো বোঝাতে পারবেন?

আর এমন ভাবনা থেকেই এবার গানারো গাত্তুসোকে জাতীয় ফুটবল দলের কোচ নিয়োগ দিয়েছে ইতালি। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করা নিয়ে শঙ্কায় আছে। এর আগে খেলতে পারেনি ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে। টানা তৃতীয় আসর যাতে দর্শক হয়ে না থাকতে হয়, সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী গাত্তুসোকে দায়িত্ব দিয়েছে ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন এফআইজিসি।

২০২৬ বিশ্বকাপের ইউরোপিয়ান বাছাইয়ে ইতালি খেলছে ‘আই’ গ্রুপে। পাঁচ দলের গ্রুপ থেকে শুধু শীর্ষ স্থানধারী দলই বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করতে পারবে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাবে। এই মুহূর্তে ‘আই’ গ্রুপে ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে নরওয়ে। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইসরায়েল। ইতালির অবস্থান তিনে, ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট।

গত সপ্তাহে নরওয়ের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হারার পরই এফআইজিসি কোচ লুসিয়া স্পালেত্তিকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিদায় নিশ্চিতের পরও সোমবার মল দোবার বিপক্ষে ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ান স্পালেত্তি, ম্যাচটি ইতালি ২-০ ব্যবধানে জেতে।

নরওয়ে নিজেদের প্রথম চার ম্যাচের চারটিতেই জেতায় ইতালি এখন চাপে আছে। হাতে এখনো ৬টি ম্যাচ বাকি। তবে শীর্ষস্থানে থাকতে হলে নিজেদের বাকি সব ম্যাচ তো জিততেই হবে, নরওয়েকেও পয়েন্ট হারাতে হবে। আর এমন জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই ইতালি দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন গাত্তুসো।

৪৭ বছর বয়সী গাত্তুসো ২০০০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ইতালির জাতীয় দলে খেলেছেন। এর মধ্যে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের সেরা পারফরমারদের একজন ছিলেন। সব ম্যাচেই শুরুর একাদশে ছিলেন, পরে জায়গা করে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপের অলস্টার একাদশেও। ২০১৩ সালে সুইজারল্যান্ডের ক্লাব সিওনে খেলোয়াড় কাম কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন থেকে গত ১২ বছরে মোট ৯টি ক্লাবের ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন গাত্তুসো। যার মধ্যে আছে নিজের সাবেক ক্লাব এসি মিলান এবং ভ্যালেন্সিয়া ও মার্শেই। সর্বশেষ ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব হাইদুক স্প্লিটের দায়িত্বে ছিলেন, যা গত মাসে পারস্পরিক সমঝোতায় ছেড়ে দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোচ হিসেবে মোট ৩৭৬টি ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়িয়ে গাত্তুসোর জয়ের হার ৪২.৮২ শতাংশ। জিতেছেন ১৬১টিতে, ড্র ১০৮ আর হার ১০৭-এ।
এখন দেখার বিষয়, ইতালি দলে তার সাফল্যের হার কতটা হয়, বিশেষ করে যখন দলের দরকার শতভাগ জয়। ইতালি জাতীয় দল তাদের পরবর্তী ম্যাচ খেলবে ৫ সেপ্টেম্বর এস্তোনিয়ার বিপক্ষে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ