রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন কলেজটির একদল শিক্ষার্থী। বুধবার বিকেল ৫টার পর থেকে কলেজটির মূল ফটকে সামনে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ ব্যানারে তারা এ অনশন শুরু করেন। এ সময় তারা ৭ দফা দাবি জানান।

অনশনে অংশ নেওয়া কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী এফ রায়হান বলেন, আমি সরকারি তিতুমীর কলেজের একজন শিক্ষার্থী। তিতুমীর ঐক্যের ডাকে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে নিজ দায়িত্বে আমি আমরণ অনশনে যোগ দিয়েছি। তিতুমীর কলেজের ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিত করা ও ঢাকা উত্তরে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই আন্দোলন আজ সময়ের দাবি। আমাদের এই সংগ্রাম শুধু তিতুমীরের নয়, বরং সমগ্র জাতির উচ্চশিক্ষার উন্নয়নের জন্য।

তিনি আরও বলেন, এই অনশন কেবল আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, এটি আমাদের সবার অধিকারের জন্য লড়াই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনারা যারা ন্যায়বিচার ও শিক্ষার সমতার পক্ষে, তারা এই আন্দোলনে আমাদের পাশে দাঁড়াবেন। আসুন, একসাথে আমরা আমাদের অধিকার আদায় করি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি শক্তিশালী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলি।

বেল্লাল হাসান নামের বাংলা বিভাগ আরেক শিক্ষার্থী বলেন, যেদিন সিদ্দিকুর রহমান ভাইয়ের সাথে আমার দেখা হয় সেদিন নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এদেশে প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষার দ্বার তৈরি করে, শিক্ষা সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলবো। নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে দেশে শিক্ষার জন্য আর কোনো সিদ্দিক চোখ হারাবে না। শিক্ষা হবে সকলের জন্য উন্মুক্ত। শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার হলেও তা থেকে এদেশের মানুষ বঞ্চিত। দেশের সেরা প্রতিষ্ঠান থেকে তথাকথিত মেধাবী তৈরি হয় না, তৈরি হয় তোতা পাখি।

তিনি আরও বলেন, দেশের শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক শিক্ষার মানে তখনই নেওয়া সম্ভব যখন প্রচলিত সিন্ডিকেট ভেঙে শিক্ষা করা হবে সকলের জন্য উন্মুক্ত এবং তা শুধু মাত্র তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমেই সম্ভব। আমি আশা করি আমার জীবনের মধ্য দিয়ে হলেও দেশের শিক্ষা সংস্কার হোক তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য দিয়ে।যার মাধ্যমে দেশে আর কোনো মায়ের বুক যাতে খালি না হয়, সিদ্দিক ভাইয়ের মতো কারো চোখ না হারাতে হয়।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম তিতুমীর ঐক্যের সাত দফা দাবিগুলো হলো- তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা। শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন ও ২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুটি বিষয় আইন ও সাংবাদিকতা বিভাগ সংযোজন।

এছাড়াও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিতকরণ ও আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ।

উল্লেখ্য, সরকারি তিতুমীর কলেজকে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে বিগত ২৮ বছর ধরে আন্দোলন করছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের সরকারের পটপরিবর্তনের পর শিক্ষার্থীরা আবারও নতুন করে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টাসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপন করেন তারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ত ম র কল জ আমরণ অনশন ত ত ম র কল জ আমরণ অনশন র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।

আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগে

এ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।

সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
  • টানা ৩০ ঘণ্টা অনশনে তিন জবি শিক্ষার্থী অসুস্থ
  • তিন দাবিতে অনশনে জবি শিক্ষার্থীরা
  • শিগগিরই প্রশাসকরা দায়িত্ব নেবে ৫ ব্যাংকের
  • ডিসেম্বর মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আশ্বাস জবি উপাচার্যের
  • জকসুর রোডম্যাপসহ ৩ দাবিতে অনশনে জবি শিক্ষার্থীরা
  • চরাঞ্চলের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করে উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি
  • সম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী
  • চারটি দলের সঙ্গে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যুক্ত হলো জাগপা
  • নারীদের আসন বাড়ানো, সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বার্থ সুরক্ষার দাবি