৫ ঘণ্টা পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া এবং ৭ ঘণ্টা পর আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চালু
Published: 5th, February 2025 GMT
এক দিন বিরতির পর ঘন কুয়াশায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ৩০মিনিট থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর আজ বুধবার সকাল পৌনে আটটা থেকে ওই নৌপথে চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
একই কারণে মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথে গতকাল রাত দুইটা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর আজ সকাল সাড়ে আটটা থেকে এ রুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়। নদী পাড়ি দিতে না পারায় ঘাটে থাকা গাড়ির যাত্রীসহ চালকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় জানায়, রোববার দিবাগত মধ্যরাত ১২টার পর থেকে কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ফেরি বন্ধ থাকে। প্রায় ৯ ঘণ্টা পর সোমবার সকাল ৯টা থেকে রুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সোমবার রাতে নদী অববাহিকায় হালকা কুয়াশা পড়লেও ফেরি চলাচলে সমস্যা হয়নি। এক দিন বিরতি দিয়ে গতকাল মধ্যরাত থেকে আবারও কুয়াশা পড়তে থাকে। দুর্ঘটনা এড়াতে ২টা ৩০মিনিট থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ফেরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ রুটে ছোট-বড় ১৬টি ফেরি রয়েছে। এর মধ্যে দৌলতদিয়ায় ফরিদপুর, বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর, শাহপরাণ, ভাষাশহীদ বরকত, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ও কপোতি নামের ছয়টি ফেরি নোঙর করে থাকে। পাটুরিয়ায় বনলতা, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন, এনায়েতপুরী, গোলাম মাওলা ও গৌরী নামের পাঁচটি ফেরি নোঙর করে থাকে। আজ সকাল পৌনে আটটা থেকে এ রুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
আরও পড়ুনকয়েক ঘণ্টা পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চালু০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ঢাকাগামী জামান ও সৌহার্দ্য পরিবহনের দৌলতদিয়া ঘাট তত্ত্বাবধায়ক মনির হোসেন বলেন, শীত আর কুয়াশায় দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীসহ গাড়ির চালক-সহকারীদের। অন্যদিকে ঘাটে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেড়ে যায়। মাঝেমধ্যে যাত্রীদের মুঠোফোন, টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যায়।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, এক দিন বিরতির পর মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে পুনরায় ঘন কুয়াশা পড়তে থাকে। অতিমাত্রায় ঘন কুয়াশা পড়তে থাকলে দুর্ঘটনা এড়াতে রাত আড়াইটা থেকে এ রুটে ফেরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাঁচ ঘণ্টা পর আজ সকাল পৌনে আটটা থেকে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
অন্যদিকে মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট রুটেও গতকাল রাত দুইটা থেকে ফেরি বন্ধ থাকে। এ সময় কাজিরহাট ঘাটে ফেরি শাহ আলী এবং আরিচা ঘাটের কাছে ধানসিঁড়ি, চিত্রা, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান, খানজাহান আলী ও কিষাণী নামের ফেরি নোঙর করে। প্রায় সাত ঘণ্টা পর আজ সকাল ৯টা থেকে এ রুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আবদুল্লা রনি বলেন, আজ সকাল ৯টা থেকে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এ সময় ঘাটে আটকে থাকা পণ্যবাহী গাড়ির চালক ও সহকারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র দ লতদ য় দ র ঘটন গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট
ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট। আজ শুক্রবার সকাল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা—রাজবাড়ী, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ থেকে আসা কর্মজীবীরা বিভিন্ন যানবাহনে ঘাটে পৌঁছে লঞ্চে নদী পার হচ্ছেন। মাত্র তিন থেকে চার মিনিটে প্রতিটি লঞ্চ যাত্রী বোঝাই করে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে।
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থেকে আসা পোশাকশ্রমিক মো. সাব্বির হোসেন হাত ধরে নববধূর সঙ্গে লঞ্চে উঠছিলেন। তিনি জানান, ঢাকার হেমায়েতপুরের একটি পোশাক কারখানায় দুজনেই কাজ করেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর এটাই তাঁদের একসঙ্গে কর্মস্থলে ফেরার প্রথম যাত্রা।
সাব্বির বলেন, বালিয়াকান্দি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় রাজবাড়ী হয়ে দৌলতদিয়ায় এসেছেন। রাস্তায় তেমন ভোগান্তি না থাকলেও লঞ্চঘাটে এসে ভিড়ে পড়েছেন। শনিবার থেকে তাঁদের কারখানা খুলছে, তাই আজই রওনা হয়েছেন। ভিড়ের মধ্যে যাতে কেউ হারিয়ে না যায়, সে জন্য এক হাতে লাগেজ ও আরেক হাতে নববধূর হাত শক্ত করে ধরে রেখেছেন।
রাজবাড়ীর কালুখালী থেকে আসা আরেক পোশাকশ্রমিক মিম আক্তার বলেন, তিনি সাভারের একটি কারখানায় কাজ করেন। ছুটিতে বাড়ি এসে ঈদ করেছেন। শনিবার কারখানা খুলবে—জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাগনেকে সঙ্গে নিয়ে আজই রওনা হয়েছি। দেরি করলে ঝামেলা হতে পারে।’
সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, কাঠের সেতু পেরিয়ে সারিবদ্ধভাবে যাত্রীরা পন্টুনে দাঁড়াচ্ছেন। টিকিটকর্মীরা সেতুতে উঠে টিকিট দিচ্ছেন। প্রতিটি লঞ্চ কয়েক মিনিটেই যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে। ঘাটে আনসার, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএর সদস্যদের সহায়তায় ভিড় সামলানো হচ্ছে।
দৌলতদিয়া নৌ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য মাসুদ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ভিড় কম ছিল, তবে আজ শুক্রবার সকাল থেকে চাপ বাড়ছে। শনিবার থেকে অফিস ও কারখানা খোলার কারণে অনেকে আজই ফিরছেন।
ঘাট ইজারাদারের প্রতিনিধি আবদুল আউয়াল জানান, বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রী চলাচল শুরু হলেও আজ সকাল থেকে ঘাটে ভিড় বেড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে যাত্রীর সংখ্যা আরও বাড়ছে। এই চাপ শনিবার পর্যন্ত থাকতে পারে।
বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের টার্মিনাল সুপারভাইজার মো. শিমুল হোসেন বলেন, যাত্রীদের নির্বিঘ্ন পারাপারের জন্য দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ২০টি লঞ্চের মধ্যে ১৮টি চলাচল করছে। অতিরিক্ত চাপ পড়লে বাকি দুটি লঞ্চও চালু করা হবে।