এক দিন বিরতির পর ঘন কুয়াশায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ৩০মিনিট থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর আজ বুধবার সকাল পৌনে আটটা থেকে ওই নৌপথে চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

একই কারণে মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথে গতকাল রাত দুইটা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর আজ সকাল সাড়ে আটটা থেকে এ রুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়। নদী পাড়ি দিতে না পারায় ঘাটে থাকা গাড়ির যাত্রীসহ চালকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় জানায়, রোববার দিবাগত মধ্যরাত ১২টার পর থেকে কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ফেরি বন্ধ থাকে। প্রায় ৯ ঘণ্টা পর সোমবার সকাল ৯টা থেকে রুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।

সোমবার রাতে নদী অববাহিকায় হালকা কুয়াশা পড়লেও ফেরি চলাচলে সমস্যা হয়নি। এক দিন বিরতি দিয়ে গতকাল মধ্যরাত থেকে আবারও কুয়াশা পড়তে থাকে। দুর্ঘটনা এড়াতে ২টা ৩০মিনিট থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ফেরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ রুটে ছোট-বড় ১৬টি ফেরি রয়েছে। এর মধ্যে দৌলতদিয়ায় ফরিদপুর, বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর, শাহপরাণ, ভাষাশহীদ বরকত, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ও কপোতি নামের ছয়টি ফেরি নোঙর করে থাকে। পাটুরিয়ায় বনলতা, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন, এনায়েতপুরী, গোলাম মাওলা ও গৌরী নামের পাঁচটি ফেরি নোঙর করে থাকে। আজ সকাল পৌনে আটটা থেকে এ রুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

আরও পড়ুনকয়েক ঘণ্টা পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চালু০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ঢাকাগামী জামান ও সৌহার্দ্য পরিবহনের দৌলতদিয়া ঘাট তত্ত্বাবধায়ক মনির হোসেন বলেন, শীত আর কুয়াশায় দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীসহ গাড়ির চালক-সহকারীদের। অন্যদিকে ঘাটে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেড়ে যায়। মাঝেমধ্যে যাত্রীদের মুঠোফোন, টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যায়।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, এক দিন বিরতির পর মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে পুনরায় ঘন কুয়াশা পড়তে থাকে। অতিমাত্রায় ঘন কুয়াশা পড়তে থাকলে দুর্ঘটনা এড়াতে রাত আড়াইটা থেকে এ রুটে ফেরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাঁচ ঘণ্টা পর আজ সকাল পৌনে আটটা থেকে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

অন্যদিকে মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট রুটেও গতকাল রাত দুইটা থেকে ফেরি বন্ধ থাকে। এ সময় কাজিরহাট ঘাটে ফেরি শাহ আলী এবং আরিচা ঘাটের কাছে ধানসিঁড়ি, চিত্রা, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান, খানজাহান আলী ও কিষাণী নামের ফেরি নোঙর করে। প্রায় সাত ঘণ্টা পর আজ সকাল ৯টা থেকে এ রুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আবদুল্লা রনি বলেন, আজ সকাল ৯টা থেকে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এ সময় ঘাটে আটকে থাকা পণ্যবাহী গাড়ির চালক ও সহকারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র দ লতদ য় দ র ঘটন গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত

নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য খুলে দিয়েছে সরকার। সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছিল, কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবেন। কিন্তু দুই দিনে একজন পর্যটকও যেতে পারেননি। কারণ, পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ। কবে থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হবে, তা নিয়েও কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।

কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকেই পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতের কথা। এ জন্য ১ হাজার ৭০০ জন ধারণক্ষমতার দুটি জাহাজ—এমভি কর্ণফুলী ও এমভি বার আউলিয়া চলাচলের অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু গতকাল শনিবার ও আজ রোববার ওই রুটে কোনো জাহাজ চলেনি। আরও চারটি জাহাজ চলাচলের অনুমতির জন্য আবেদন করেছে।

সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত যাপন করা যাবে না, তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপনের সুযোগ থাকবে। বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবে না। পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে। কিউআর কোডবিহীন টিকিট নকল বলে গণ্য হবে।

সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে রাতের বেলায় সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সৈকতে মোটরসাইকেল বা সি-বাইকসহ মোটরচালিত যান চলাচলও বন্ধ। নিষিদ্ধ পলিথিন বহন এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক (চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, পানির বোতল ইত্যাদি) ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

পর্যটক নেই, ফাঁকা ঘাট

আজ সকাল সাতটায় নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, কোনো যাত্রী নেই। বাঁকখালী নদীতেও পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ দেখা যায়নি। ঘাটে অবস্থান করছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। জানা যায়, গতকাল সকালে তিনজন পর্যটক টিকিট কেটে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, পরে জাহাজ না থাকায় ফিরে যান।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য সেন্ট মার্টিন উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় গত দুই দিনে কোনো পর্যটক যেতে পারেননি। নভেম্বরে দিনে গিয়ে দিনে ফেরার নিয়ম থাকায় সময় ও সুযোগ কম, আবার দীর্ঘ জাহাজযাত্রার কারণে অনেকেই নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। তারপরও আমরা সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঘাটে অবস্থান করছি।’

জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, টানা ৯ মাস বন্ধ থাকার পর ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে উখিয়ার ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাট কিংবা টেকনাফের কোনো স্থান থেকে এখনো জাহাজ চলাচলের অনুমতি নেই।

জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে।

গত ডিসেম্বরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ছেড়ে কক্সবাজারের পথে পর্যটকবাহী একটি জাহাজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
  • ডুবচরে আটকা পড়া ‘বোগদাদিয়া ৭’ এর যাত্রীরা নিরাপদে
  • সেন্টমার্টিনের দ্বার খোলা, ছাড়েনি জাহাজ
  • সেন্টমার্টিনের দ্বার খুলছে শনিবার, জাহাজ চালাবেন না মালিকরা
  • সুনামগঞ্জে জমি থেকে ৫ কোটি টাকার বালু চুরির অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা