‘শেখ হাসিনার কোনো বক্তব্য যদি মিডিয়াতে প্রচার করা হয়, সেটার পরিণতি সেই মিডিয়াকেই নিতে হবে।’ বুধবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ কথা বলা হয়েছে। এতে লেখা হয়েছে, ‘খুনি, গণহত্যাকারী, ফ্যাসিস্ট হাসিনার কোনো বক্তব্য যদি মিডিয়াতে প্রচার করা হয়, সেটার পরিণতি সেই মিডিয়াকেই নিতে হবে।’

একই কথা বলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহও।  ‘৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ চ্যাপ্টার ক্লোজড’ এই মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ প্রসঙ্গ এ দেশে আর নেই। তাঁর কোনো ভাষণ যদি এখন কোনো গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়, তাহলে সে গণমাধ্যম শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করছে বলে ধরে নিতে হবে। সুশীলতাকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলেই গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। হাসিনার প্রশ্নে কোনো সুশীলতা নয়।’

 

বুধবার রাজধানীর বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শিরোনামে এক জনমত কর্মসূচি চালু প্রসঙ্গে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। 

গণমাধ্যমের উদ্দেশে হাসনাত বলেন, ‘মিডিয়ায় এখনও দেখি ভাশুরের নাম মুখে নিতে কেমন যেন লাগে। এখনো সাবেক প্রধানমন্ত্রী লেখা হয়। উনি কি সাবেক, নাকি ফ্যাসিবাদের “বুচার অব দিস মাদারল্যান্ড”? তিনি এই বাংলাদেশের বুচার (কসাই)। তিনি চেয়ার টিকিয়ে রাখতে দুই হাজার মানুষকে হত্যা করেছেন। কেন মিডিয়াতে ফ্যাসিবাদী খুনি হাসিনা লেখা হয় না? ফ্যাসিবাদী খুনি হাসিনা যদি না লেখেন বা না বলেন, আপনারা আওয়ামী কাঠামো বা মিডিয়া রয়েছে, সেটির সিলসিলা অব্যাহত রাখছেন।’

তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর ফ্যাসিবাদবিরোধী যে দলগুলো আছে, তাদের সঙ্গে আমাদের মতের পার্থক্য হবে, রাজনৈতিক মতপার্থক্য হবে, বিভাজন থাকবে। কিন্তু এক জায়গায় স্পষ্ট, হাসিনা ও ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন কোনোভাবে এ দেশে হতে দেওয়া হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ট র পর

এছাড়াও পড়ুন:

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সচিবালয় অভিমুখে মিছিল, সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সচিবালয় অভিমুখে মিছিল নিয়ে যাওয়ায় পুলিশের বাধার মুখে পড়েছেন ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ একাধিক সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে ও লাঠিপেটা করে। এতে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। এ ঘটনায় রাজধানীর প্রেসক্লাব এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

আজ রোববার বেলা সোয়া একটার দিকে প্রেসক্লাব সংলগ্ন সচিবালয়ের ৫ নম্বর ফটকের কাছে এ ঘটনা ঘটে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আলোচনার জন্য সচিবালয়ের ভেতরে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।

সকাল থেকেই ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের মধ্যে যাঁদের আবেদন করার বয়স শেষ হয়ে গেছে, তাঁরা আবেদনকারীর বয়সসীমা ৩৫ বছর পর্যন্ত বাড়িয়ে তাঁদের একবার আবেদন করার দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। বেলা দেড়টার দিকে তাঁরা সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা শুরু করেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সচিবালয় এলাকা গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা অঞ্চল। এখানে ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে। মিছিলকারীরা তা অমান্য করায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের হালকা শক্তি প্রয়োগ করতে হয়েছে।’

আজকের ঘটনায় পাঁচ থেকে ছয়জন আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। ডিসি মাসুদ বলেন, ‘মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের এক থেকে দুই রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে হয়েছে। এতে আমাদের দু-একজন পুলিশ সদস্যও সামান্য আহত হয়েছেন।’

আন্দোলনকারীদের একজন রাজ্জাকুল হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানালেও সরকার আমাদের দাবি মেনে নিচ্ছে না। এখন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করছে, অথচ আমাদের ১৭তম ব্যাচের সমস্যার সমাধান করছে না।’

এই আন্দোলনকারী বলেন, দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে। তাই তিন দফা দাবি দিয়ে তাঁরা সচিবালয়ের দিকে যান। কিন্তু পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে।

নিবন্ধনধারীদের তিনটি প্রধান দাবি হলো

১. আপিল বিভাগের রায় অনুসারে সনদের মেয়াদ থাকা সাপেক্ষে করোনা মহামারির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছরের আওতায় এনে ১৭তম ব্যাচের প্রার্থীদের জন্য বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অন্তত একবার আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে।

২. ১৭তম ব্যাচের বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এনটিআরসিএর ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে।

৩. আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় ও এনটিআরসিএর রূপরেখা বাস্তবায়ন বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ