৪৯তম বিশেষ বিসিএস: লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১২১৯জন
Published: 19th, October 2025 GMT
৪৯তম (বিশেষ) বিসিএসের এমসিকিউ টাইপ লিখিত পরীক্ষার ফল আজ রোববার রাতে ফল প্রকাশ করা হয়েছে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ হাজার ২১৯ প্রার্থী। বাংলাদেশের সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ফল প্রকাশের এক সপ্তাহের বিরতির পর ২৬ অক্টোবর থেকে শুরু হবে মৌখিক পরীক্ষা।
শিক্ষার বিশেষ এই বিসিএসে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ৬৮৩টি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, এ বিসিএসে মোট ৩ লাখ ১২ হাজারের বেশি প্রার্থী আবেদন করেছেন। ফলে প্রতিটি পদের বিপরীতে গড়ে ৪৫৬ জন প্রার্থী প্রতিযোগিতা করছেন।
৪৯তম বিসিএস পরিক্রমাএ বিশেষ বিসিএসটি সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের জন্য আয়োজন করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল চলতি বছরের ২১ জুলাই। এমসিকিউ টাইপ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১০ অক্টোবর, যা ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরের একাধিক কেন্দ্রের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। পরীক্ষায় মোট উপস্থিত ছিলেন ১ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭০ জন প্রার্থী। উপস্থিতির হার ৫৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
আরও পড়ুনফ্রিল্যান্সিংয়ে নামার আগে এ পাঁচটি বিষয় ভাবুন১৩ ঘণ্টা আগেপিএসসি পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ওয়েবসাইটে আসনবিন্যাস, সময়সূচি এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে।
পিএসসি জানিয়েছে, শিক্ষা ক্যাডারের এই বিশেষ বিসিএসে দ্রুত ফলাফল প্রকাশ ও মৌখিক পরীক্ষার পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে প্রার্থীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার দিন শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফল প্রকাশ ও মৌখিক পরীক্ষার সময়োপযোগী আয়োজন প্রার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করছে।
আরও পড়ুনজাপানে মেক্সট স্কলারশিপে উচ্চশিক্ষা, জিপিএ ২.৩০ হলে আবেদন ১৩ ঘণ্টা আগে
শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, ৪৯তম (বিশেষ) বিসিএসের নিয়োগপ্রক্রিয়া ত্রুটিমুক্ত করতে পারলে ভবিষ্যতের প্রার্থীরা পিএসসির প্রতি আস্থাশীল থাকবে।
আরও পড়ুনপিএসসির ২৮২৫ পদে আবেদন শেষ ২০ অক্টোবর, বেশি প্রধান শিক্ষকের পদ ১১২২টি১১ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ র ব স এস প এসস
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে ইতিহাস মুছে ফেলার রাজনীতি: এবার টার্গেট তাজমহল
মাত্র ১৭ জন অশ্বারোহী নিয়ে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি ১২০৪ সালে লক্ষ্মণ সেনকে পরাজিত করে বাংলা জয় করেন। স্কুলে আমার পাশে বসত আমার বন্ধু নারায়ণ। আমার মনে আছে ইতিহাস শিক্ষক এই বিষয়টা যখন পড়াচ্ছিলেন, নারায়ণ খুব মন খারাপ করেছিল।
ইতিহাসের ক্লাসে আমাদের আরেক দিন পড়ানো হলো পলাশীর যুদ্ধ। নবাব সিরাজউদ্দৌলা তাঁর বিরাট বাহিনী নিয়েও হেরে গেলেন রবার্ট ক্লাইভের অল্প কয়জন সৈন্যের কাছে, অস্তমিত হলো বাংলার স্বধীনতা। এবার আমি ও নারায়ণ দুজনেই ক্লাসে খুব মন খারাপ করলাম।
ক্লাস থেকে বের হয়ে আবার আমরা স্বাভাবিকভাবে খেলাধুলা করলাম। কী আর আমরা করতে পারতাম? নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে তো আর ফিরিয়ে আনা যেত না!
ইতিহাসের এসব দুঃখবোধ সবার থাকবে, যার যেমন আবেগ। কিন্তু ইতিহাসের ঘড়ি ও ঘটনা তো পাল্টানো যাবে না, সবাইকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে হয়। পুরোনো ইতিহাসকে টেনে এনে নিজের মনে ও অন্যদের মনে জ্বালা সৃষ্টি করা কোনো কাজের কাজ নয়। আর সমাজে প্রতিহিংসা সৃষ্টি করা তো আরও জঘন্য কাজ।
ঠিক এই জিনিসটাই হচ্ছে আজকের ভারতে। ভারতবর্ষে মুসলিম শাসন নিয়ে কিছু লোক এমনিতেই অন্তর্জ্বালায় ভুগছেন, নরেন্দ্র মোদির উত্থানের পর তাঁরা ক্রমান্বয়ে প্রতিহিংসার বারুদ ছড়াচ্ছেন। এই প্রতিহিংসা ভারতের হিন্দু উগ্র জাতীয়তাবাদীদের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সঙ্গে মিশে ধ্বংসাত্মক আকার ধারণ করছে। ইতিহাসের প্রতিহিংসার প্রথম বড় বলি ছিল অযোধ্যার বাবরি মসজিদ, যেটাকে ভেঙে গড়া হলো রামমন্দির।
ভারতের অসাম্প্রদায়িক ও উদারপন্থী জনগণ অবশ্য সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর কার্যক্রমকে নিন্দা জানিয়ে আসছে। এমনকি গত সাধারণ নির্বাচনে রামমন্দির এলাকার সংখ্যাগুরু হিন্দু জনগণ ভোট দিয়ে বিজেপির লোকসভা প্রার্থীকে হারিয়ে জানান দেন—তারা এসব উগ্রতার বিরুদ্ধে।
লাভ হতে পারে ভারতীয় ডানপন্থী রাজনীতিবিদদের এবং মোদির দল বিজেপির। তারা আশা করবে তাদের ভোটব্যাংকে যোগ হবে আরও অনেক বেশি হিন্দু ভোট। সংখ্যালঘুদের অপদস্থ করে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের ভোট বাড়ানোই এসব প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির মূল উদ্দেশ্য। তবে হিতে বিপরীতও হতে পারে, যেমন করে মোদির দল গত নির্বাচনে হারিয়েছিল রামমন্দির এলাকার লোকসভা আসনটি।তাই বলে কি উগ্রবাদীদের দমানো যায়? তাঁরা মুসলমান বিদ্বেষ ছড়াবার জন্য নতুন নতুন কৌশল বের করা শুরু করলেন।
এইসব ‘সংশোধনবাদী ইতিহাসবিদেরা’, কেউ কেউ ‘স্থপতিবিদ’ সেজে মোগল স্থাপত্যের সমালোচনা করছেন। আবার কেউবা ‘প্রত্নতাত্ত্বিক’ সেজে কোন মসজিদের নিচে কয়টা মন্দির আছে এবং তাজমহল কোন মন্দির দখল করে গড়া হয়েছে, এসব নিয়ে ‘ইতিহাস’ গড়ছেন। এই উগ্রবাদীরা রাজনৈতিক কারণে ইতিহাসকে টেনেহিঁচড়ে অপ-ইতিহাস তৈরি করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন এবং সমাজে ধর্মীয় বিভাজন ছড়াচ্ছেন।
তাঁরা এসব অপ-ইতিহাস প্রচার করতে বিভিন্ন উপায় বের করছেন এবং আরও বেশি লোককে ক্রুদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে এই ইতিহাসের বিকৃতি আরও বড় আকারে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য দক্ষিণপন্থী চিত্র প্রযোজক-পরিচালক ও সিনেমাকর্মীদের একটা গ্রুপ ইতিহাসকে বিকৃত করে নতুন নতুন চলচ্চিত্র তৈরি করছেন। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন মিঠুন চক্রবর্তী, অনুপম খের ও পরেশ রাওয়ালের মতো নামকরা অভিনেতারা।
এবার কল্পকাহিনির ভিত্তিতে সিনেমা বানানো হয়েছে তাজমহলকে নিয়ে, নাম—‘দ্য তাজ স্টোরি’।