প্রধান উপদেষ্টা না আসলে শাহবাগ ছাড়বেন না শহীদ পরিবারের সদস্যরা
Published: 6th, February 2025 GMT
ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ তিন দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করে রেখেছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। তারা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এসে দেখা না করলে অবরোধ না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন এবং মামলা প্রত্যাহার করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে শহীদ পরিবারের সদস্যরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। দুপুর ২টা পর্যন্ত তারা অবরোধ জারি রেখেছেন। এরফলে চারদিকের সড়কে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়েছে।
শহীদ পরিবারের সদস্যদের দাবিগুলো হলো-১.
শহীদ পরিবারের প্রতিনিধি দলের সদস্য গত ৪ আগস্ট মিরপুরে শহীদ শাহরিয়ার আলভীর বাবা আবুল হাসান। তিনি বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডে শাহরিয়ার হাসান আলভী ৪ আগস্ট মিরপুরে গুলিবিদ্ধ হয়। গুলি তার পেট ভেদ করে বেরিয়ে যায়। জীবনের শেষ সময়ে তার সঙ্গে আমি দেখা করতে পারিনি। এরকম নির্মম হত্যাকাণ্ডের ছয় মাস অতিবাহিত হলো কিন্তু আমার সন্তান হত্যার বিচার দেখতে পাচ্ছি না। আমরা আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছি, এই ট্রাইব্যুনাল একটি রঙ্গমঞ্চে পরিণত হয়েছে। তারা এখনও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করতে পারেনি। অথচ হত্যাকারীদের নিরাপদে দেশ ত্যাগ করতে দেওয়া হচ্ছে।
গত ২৬ জানুয়ারি ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে তার বাসভবনে যান শহীদ পরিবারের সদস্যরা। তবে তারা দেখা করতে পারেননি জানিয়ে শহীদ ইমাম হোসেনের ভাই রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদেরকে গত ৩০ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার কথা তবে তারা দেখা করেননি তিনি। তাহলে শহীদ পরিবার যাবে কোথায়? আজকে ড. ইউনূস এখানে আসবে। তা না হলে আমরা শহীদ পরিবার সকল মামলা প্রত্যাহার করে নেব।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অবর ধ জ ল ই গণহত য ইউন স অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস