জামানত ছাড়া ৫৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিলে দুর্নীতি হবেই বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুদকের মামলায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের রিমান্ড শুনানির এক পর্যায়ে তিনি এ কথা বলেন। 

বিচারক বলেন, ‘‘দুর্নীতির মামলায় সাজার পরিমাণ বাড়ানো দরকার। সাজা কম হওয়ায় দুর্নীতি বেড়েছে। জামানত ছাড়া একজন ব্যক্তিকে ৫৮ হাজার কোটি ঋণ দিলে দুর্নীতি তো হবেই।’’

এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, ‘‘আমরাও দুর্নীতির সাজা চাই। যারা এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তাদের সাজা হোক। তবে আলমগীর কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত না।’’

আদালত সূত্রে জানা গেছে, কারাগারে থেকে এদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। তার উপস্থিতিতে ১২টা ৩৪ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। 

এ সময় দুদক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জামিনের বিরোধিতা করে রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। দুদক চাইলে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন বলে নির্দেশ দেন আদালত।

এর আগে গত বুধবার এ মামলায় গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে দুদক। তবে আদালত এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার শুনানি হবে বলে জানান। একইসঙ্গে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।  

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের নামে মোট ৭২ কোটি ৮৫ লাখ ৩ হাজার ৫২৮ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে যার বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় ৫৩ কোটি ৫৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬৭ টাকা। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে গত ১৬ বছরে রেলের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকা/মামুন//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আলমগ র

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদ পুনর্মিলনীর নামে বিএনপির আয়োজনে আ.লীগের মিলনমেলার অভিযোগ

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় বিএনপির নেতাদের আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনীর নামে আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) নেতাকর্মীদের মিলনমেলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জি এম আলমগীর হোসেন ও রঘুনাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রব আকুঞ্জীর আহ্বানে থুকড়া বাজারে করা হয় এ আয়োজন। অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন মধ্যাহ্নভোজে। ঈদ পুনর্মিলনীর নামে এভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের চেষ্টায় উপজেলাজুড়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে।  

বুধবার (১১ জুন) দুপুর ২টায় ডুমুরিয়া উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের থুকড়া বাজার জনতা সমিতি ভবনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জি এম আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনুদ্যুতি কুমার মন্ডলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রংপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আদিত্য কুমার মন্ডল, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এস এম গাউসুল হক, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বি এম কামাল হোসেন, ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বি এম বিদ্যুৎ আলম, ডুমুরিয়া উপজেলা যুবলীগের নেতা ও রঘুনাথপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জি এম শামীমুর রহমান, ডুমুরিয়া উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিভা বিশ্বাস, নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির নেতা সঞ্জিত কুমার মন্ডল, ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা তপন বিশ্বাস, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা সুকৃতি বিশ্বাস, যুবলীগ নেতা বিপন্ন মন্ডল, আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের এজেন্ট খ্যাত শচীন্দ্রনাথ বৈরাগী ও রুইদাস মন্ডল, কাছারি বাড়ি আর আর জি টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বীরেশ্বর বৈরাগী। 

ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া বীরেশ্বর বৈরাগীর বিরুদ্ধে গত ১৭ বছরে ২২ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের নামে প্রায় ২ কোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করা ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জি এম আলমগীর হোসেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে মিলনমেলা করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, এটা কোনো রাজনৈতিক প্রোগ্রাম নয়। অবসরপ্রাপ্ত ও বর্তমান শিক্ষক এবং এলাকার সুধীজনদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এখানে যারা ছিলেন, তারা আগে আওয়ামী লীগ করতেন, এখন করেন না। 

সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করা ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনুদ্যুতি কুমার মন্ডলের সঙ্গে মুঠো ফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

কাছারি বাড়ি আর আর জি টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বীরেশ্বর বৈরাগী বলেন, ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের কথা বলে আমাকে ওই প্রোগ্রামে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। আমার বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ষড়যন্ত্রমূলক। এখানে বিএনপির তিনটি গ্রুপ, তারাই এগুলো ছড়াচ্ছে। আগে ইউএনওসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা এ বিষয়টি তদন্ত করেছে। কিন্তু, কোনো প্রমাণ পায়নি।

এ বিষয়ে খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু জানিয়েছেন, এ অনুষ্ঠানের বিষয়ে তিনি অবগত নন। এ বিষয়ে ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। 

বিএনপির কোনো নেতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর পুনর্বাসনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মনিরুজ্জামান মন্টু।  

ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপির সঙ্গে চীনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
  • বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • হবিগঞ্জে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • নাটক প্রকাশ নিয়ে নিলয়ের ক্ষোভ, যা জানাল দীপ্ত কর্তৃপক্ষ
  • শিল্পী-নির্মাতাকে না জানিয়ে ইউটিউবে নাটক প্রকাশ, নিলয়ের ক্ষোভ
  • শিল্পী-নির্মাতাকে না জানিয়ে নাটক রিলিজ, নিলয়ের ক্ষোভ
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর
  • ঈদ পুনর্মিলনীর নামে বিএনপির আয়োজনে আ.লীগের মিলনমেলার অভিযোগ