আমরা যেন হাসিনার পাতা ফাঁদে পা না দেই: মির্জা ফখরুল
Published: 9th, February 2025 GMT
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ছাত্র জনতা ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের উৎখাতের মধ্য দিয়ে অভ্যুত্থানে সফলতা অর্জন করেছে। কিন্তু আজকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে.. আমরা যেন হাসিনার পাতা ফাঁদে পা না দেই। আজকে দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হচ্ছে। অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে, এর জন্য সম্পূর্ণভাবে হাসিনার যে ফ্যাসিস্ট রেজিম ছিলো, সেই রেজিমই দায়ী। আমাদেরকে সাবধানতার সঙ্গে পা ফেলতে হবে।’
রোববার বিকেলে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন তিনি। এদিন বিএনপি মহাসচিব যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, দলের মহাসচিব ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিমানবন্দরে অবতরণ করেছেন বিকাল ৪ টা ৫৮ মিনিটে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে লন্ডনে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা ব্যারিস্টার জায়মা জারনাজ রহমান।
গত ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ এ আমন্ত্রিত হয়ে যোগ দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতিনিধি জায়মা জারনাজ রহমান।
সফর সম্পর্কে মির্জা ফখরুল জানান, তাদের যুক্তরাষ্ট্র সফর খুব সফল হয়েছে। যে উদ্দেশ্যে ছিলো, তা সফল হয়েছে।
‘খালেদা জিয়া ভালো আছেন’
বেগম জিয়া কেমন আছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তার চিকিৎসা হবে কিনা, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডাম ভালো আছেন। ট্রিটমেন্ট চলছে।’
জায়মা রহমানের সঙ্গে প্রতিনিধি দলের অভিজ্ঞতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভালো, ভালো অভিজ্ঞতা।’
‘অন্ধকারকে অন্ধকার নিয়ে দূর করা যায় না’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা অন্ধকারকে দূর করতে আরেকটা অন্ধকার দিয়ে দূর করা যায় না। তাকে আলো দিয়ে দূর করতে হয়। সেই আলোকবর্তিকা জাগিয়ে আমাদেরকে সামনের দিকে যেতে হবে।’
‘আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আহ্বান জানাতে চাই, সবাই একযোগে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য, স্থিতিশীলতারক্ষার জন্য ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য আমাদের কাজ অব্যাহত রাখতে হবে।’
অপারেশন ডেভিল হার্ট নিয়ে জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘আমরা তো বাইরে ছিলাম, ডেভিল হার্ট জানি না। ডেভিল হার্ট মানে ফ্যাসিস্টকে জানি। এতদিন পর বোধোদয় হয়েছে, সেজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম র জ ফখর ল ব এনপ দ র কর র জন য রহম ন ব এনপ ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে গভীর রাতে বুড়া-বুড়ির বাড়িতে হামলা
বন্দরের জাঙ্গাল এলাকায় ইট ভাটার মাটি কাটতে না দেয়ায় নিরিহ নিরপরাধ বৃদ্ধ দম্পত্তির (বুড়া-বুড়ি) নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী ও বাড়ি ঘরে ব্যাপক হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশের উপস্থিতিতে একটি ইট ভাটা মালিকের সন্ত্রাসী বাহিনী এই হামলা ও ভাংচুরের নেতৃত্ব দিয়েছে বলে ভূক্তভোগীরা জানিয়েছেন। এরপর উল্টো তাদের ধরে নিয়ে তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছেন। পরে জামিনে বের হয়ে ভুক্তভোগী এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে পুলিশ মামলা না নেয়ায় আতংকে রয়েছেন তারা।
জানা গেছে, বন্দরের জাঙ্গালের বাকদোবাড়িয়া এলাকায় অবস্থিত ৩টি ব্রিক ফিল্ডের মালিক মোঃ আলমগীর হোসেন। সে সাধারন মানুষের জমি জোর পূর্বক দখল করে মাটি কেটে ইট ভাটা পরিচালনা করে আসছে বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের আদালতে বেশ কয়েকটি দেওয়ানী মামলা চলমান রয়েছে।
ভূক্ত ভোগী বন্দরের জাঙ্গাল এলাকায় বৃদ্ধা মহিলা মিনারা বেগম মিনু জানান, আমার জমি জমার বিভিন্ন ভূয়া কাগজপত্র সৃজন করে ইট ভাটার মালিক আলমগীর জোর পূর্বক দখল করে মাটি কাটার চেষ্টা চালায়।
আমি ও আমার পরিবার এতে জোরালো আপত্তি করি এবং আমার স্বামী তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ আদালতে একাধিক দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। এতে ইট ভাটার মালিক আমাদের উপর ক্ষীপ্ত হয়ে আমাদের প্রানে মেরে ফেলার জন্য আলমগীর নানা ষড়যন্ত্রের ফাদ পাততে থাকে।
আর এ কাজে থানা পুলিশকে সে ম্যানেজ করে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের জীবন শেষ করে দেয়ার অপচেষ্টা চালায়। গত ২০ এপ্রিল রবিবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে গভীর রাত ৩টা পর্যন্ত বন্দর থানার দারোগা জলিল, শরীফ ও বন্দর কামতাল ফাড়ির দারোগা মনির সহ প্রায় ২৫ জন পুলিশ আমার বাড়ীর চারদিকে ঘেরাও করে রাখে।
এসময় ব্রিক ফিল্ডের মালিক আলমগীরের প্রায় ২০/২৫ জনের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী দা, সাবল, বটি, খুন্তি, কুড়াল সহ দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে বাড়ীর গেট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ব্যাপক হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। পরবর্তীতে বন্দর থানা পুলিশ বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করে আমাকে ও আমার বৃদ্ধ স্বামীকে জোর পূর্বক থানার পুলিশ ভ্যানে তুলতে চায়।
বন্দর থানা পুলিশ কোন মামলা ছাড়াই বিনা ওয়ারেন্টে টানা হেচড়া করে আমাদেরকে থানায় নিয়া যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আমি মামলা ছাড়া বিনা ওয়ারেন্ট আমাদের কেন থানায় নিয়া যাবেন জানেত চাইলে আমাকে ও আমার স্বামী আঃ বাতেন (৬০) কে বেধম প্রহার করেন। আমি একজন বৃদ্ধা মহিলা হওয়া স্বত্তেও পুলিশ আমাকে উপর্যপুরি ৪টি বেত্রাঘাত করে।
তখন আমি পুলিশের হাতে পায়ে ধরে কোন মতে পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেলেও গভীর রাত ৩টায় আমার স্বামী আঃ বাতেন (৬০)কে জোরপূর্বক বন্দর থানায় নিয়া যায়।
থানায় নিয়ে ব্রিক ফিল্ডের মালিক আলমগীরের ম্যানেজার মজিবরকে বাদী বানাইয়া আমাদের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ এর ১০/১৩/১৬ ধারায় একটি মিথ্যা মামলা নং-২৪৪২৫ দায়ের করেন।
বন্দর থানার পুলিশ আমার স্বামীকে ২০ এপ্রিল ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন সহ নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরন করলে বিজ্ঞ আদালত শুনানী অন্তে রিমান্ডের আবেদন না-মঞ্জুর পূর্বক জামিন প্রদান করেন এবং পরবর্তীতে গত ২২ এপ্রিল আমি বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন করলে মহামান্য আদালত আমাকেও জামিন প্রদান করেন।
বর্তমানে আমরা আদালত থেকে জামিন নেয়র পর এ ঘটনায় বন্দর থানায় মামলা করতে গেলে ব্রিক ফিল্ডের মালিক আলমগীরের দাপটের কারনে পুলিশ কোন মামলা নিচ্ছে না।
এখন আমি আদালতে প্রতিকার চেয়ে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি। আমি এই ঘটনার সুুষ্ট তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে কথা বলতে বন্দর থানার ওসির মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।