মতবিনিময় সভা: অধূমপায়ী ও তরুণদের সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবি
Published: 10th, February 2025 GMT
দেশে তামাকজনিত পণ্য ব্যবহারের কারণেই বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার ২৫৩ জন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। অথচ এই মৃত্যুর মিছিলকে অবজ্ঞা করে তামাক কোম্পানি রাজস্বের অজুহাত দেখিয়ে আইন সংশোধনকে বাধাগ্রস্ত করে। তাদের এই অপকৌশল বন্ধে গণমাধ্যমের জোরালো ভূমিকা রাখা জরুরি।
‘অধূমপায়ী ও তরুণদের সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এবং কোম্পানির অপপ্রচার বন্ধে গণমাধ্যমের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন আলোচকেরা। আজ সোমবার সকালে রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আয়োজক ছিল ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ।
এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা.
হার্ট ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশে ধূমপান না করেও বিভিন্ন জনপরিসর ও পাবলিক পরিবহনে প্রতিনিয়ত পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অধূমপায়ীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর পর থেকেই তামাক কোম্পানিগুলো অর্থ ও আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর চিঠি দিয়ে আইন সংশোধনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তারা রাজস্ব ও কর্মসংস্থান হারানোর ভিত্তিহীন তথ্য দিচ্ছে। তবে এনবিআরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন করার পর পরবর্তী দুই অর্থবছরে সিগারেট খাতে রাজস্ব আয় বেড়েছে যথাক্রমে প্রায় ১৮ শতাংশ ও ৩৭ দশমিক ৫২ শতাংশ। একইভাবে ২০১৩ সালে সংশোধনীর পর পরবর্তী দুই অর্থবছরে সিগারেট খাতে রাজস্ব আয় বেড়েছে যথাক্রমে ২৫ দশমিক ৫১ শতাংশ ও ৪৬ দশমিক ৫২ শতাংশ।
এ ছাড়া ২০২১ সালের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, খাদ্য, পানীয় ও তামাকপণ্য বিক্রি করে—এ রকম খুচরা দোকানের সংখ্যা মাত্র ১ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪১, যারা অন্যান্য পণ্যের সঙ্গেই তামাকপণ্য বিক্রি করে থাকে। তাই কর্মসংস্থান হারানোর তথ্যটিও বিভ্রান্তিকর।
সভায় গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকেরা বলেন, তরুণদের হাতেই দেশের ভবিষ্যৎ। আর তাঁদের টার্গেট করেই তামাক কোম্পানিগুলোর নানান অপতৎপরতা। তাই তরুণদের সুরক্ষায় সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টির পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দ্রুত সংশোধন দরকার।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, ধূমপান না করেও ৬১ হাজারের বেশি শিশু পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিভিন্ন রোগে ভুগছে। একই সঙ্গে আইন শক্তিশালী না হওয়ায় দেশের ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রায় ৭ শতাংশ তামাক ব্যবহার করে। এদের সুরক্ষায় বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাস করা প্রয়োজন। তা না হলে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর হার বাড়তেই থাকবে।
উল্লেখ্য, বিদ্যমান আইনটিকে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উপনীত করতে ডব্লিউএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সংশোধনীর প্রস্তাব করেছে। সেগুলো হলো সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রর্দশন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির যেকোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা; বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন ও খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা এবং ই-সিগারেটসহ সব ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা।
মতবিনিময় সভায় বিসিআইসির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ গণমাধ্যমে কর্মরত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ কর
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে গবেষণা পুরস্কার এবং লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডের আবেদন করুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ ‘রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার’ ও ‘রাজ্জাক শামসুন নাহার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ইন ফিজিক্স’ প্রদানের জন্য দেশের পদার্থবিজ্ঞানী ও গবেষকদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
কোন সালের জন্য পুরস্কার —ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে প্রতিষ্ঠিত ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালের গবেষণা কাজের জন্য এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
পুরস্কার মল্যমান কত —১. পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে মৌলিক গবেষণার জন্য পুরস্কার পাওয়া গবেষককে রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার হিসেবে নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে।
২. পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে আজীবন অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একজন বিজ্ঞানী বা গবেষককে নগদ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের রাজ্জাক শামসুন নাহার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
আবেদনের শেষ তারিখ —আগ্রহী প্রার্থীদের আগামী ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) বরাবর আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে—আবেদনকারীদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তিন কপি আবেদনপত্র, তিন প্রস্থ জীবনবৃত্তান্ত, তিন প্রস্থ গবেষণাকর্ম এবং তিন কপি ছবি আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
দরকারি তথ্য—১. জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকাশিত গবেষণাকর্ম পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে।
২. যৌথ গবেষণা কাজের ক্ষেত্রে গবেষণা পুরস্কারের অর্থ সমান হারে বণ্টন করা হবে। এ ক্ষেত্রে সহযোগী গবেষক বা গবেষকের অনুমতি নিয়ে আবেদন করতে হবে।
৩. আবেদনকারী যে বছরের জন্য আবেদন করবেন পাবলিকেশন ওই বছরের হতে হবে।
৪. একই পাবলিকেশন দিয়ে পরবর্তী বছরের জন্য আবেদন করা যাবে না।
৫. কোন কারণে একজন প্রার্থী পুরস্কারের জন্য আবেদন করলে প্রার্থিতার স্বল্পতা বিবেচনা করে তাঁর আবেদন বিবেচনা করা হবে।
৬. পরীক্ষক তাঁর গবেষণা কাজের পুরস্কারের জন্য সুপারিশ না করলে তাঁকে পুরস্কারের বিষয়ে বিবেচনা করা হবে না।
৭. পদার্থবিজ্ঞানে রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার একবার প্রাপ্ত গবেষকও পরবর্তী সময়ে আবেদন করতে পারবেন।
৮. নতুন গবেষককে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
৯. যদি মানসম্মত গবেষণা কাজ না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে পূর্বের পুরস্কার পাওয়া গবেষকের নতুন গবেষণা কাজের পুরস্কারের জন্য পরীক্ষকের সুপারিশের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে।
# আবেদন জমা দেওয়ার ঠিকানা: প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।