ফাইব্রয়েড টিউমার জরায়ুর একটি অতি পরিচিত টিউমার। এই টিউমারের লক্ষণগুলো হলো, মাসিকের সময় অধিক রক্তপাত ও ব্যথা হওয়া। যদিও ৭৫ শতাংশের ক্ষেত্রে এই টিউমার কোনো ধরনের লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও থাকতে পারে। অবস্থানভেদে এই টিউমার তিন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন- সাব সেরাস, ইন্ট্রা মুরাল এবং সাব মিউকাস। এর মধ্যে সাধারণত সাব মিউকাস টিউমারই অধিক জটিলতার কারণ হয়ে থাকে। গর্ভধারণের আগে যদি এই টিউমার ধরা পড়ে, তবে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। টিউমার অপসারণ করা দরকার হবে যদি দীর্ঘদিন চেষ্টার পরও গর্ভধারণে ব্যর্থ হলে এবং বন্ধ্যত্বের আর কোনো কারণ না পাওয়া গেলে।
বন্ধ্যত্ব সমস্যার জন্য টিউমার অপারেশন করার আগে কিছু শর্ত পূরণ করা জরুরি। যেমন বন্ধ্যত্বের জন্য অন্য কোনো কারণ আছে কিনা তা দেখে নেওয়া, হিস্টারো স্যালফিংগোগ্রাম বা ল্যাপারোস্কপি করে ফেলোপিয়ান টিউব (ডিম্বনালি) খোলা কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। স্বামীর শুক্রাণু বা বীর্য নরমাল থাকতে হবে। জরায়ুতে টিউমার থাকা অবস্থায় গর্ভধারণ হয়ে থাকলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা কোনো অসুবিধা করে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে টিউমারের
কারণে মা এবং সন্তানের বিভিন্ন জটিলতা হতে পারে, যেমন-
গর্ভপাতের আশঙ্কা বেশি থাকে, বিশেষ করে টিউমারটি যদি সাব মিউকাস হয়। কারণ সাব মিউকাস টিউমার জরায়ুর ভেতরে অবস্থিত হওয়ায় ভ্রূণ এবং প্লাসেন্টার স্থাপনকে বাধাগ্রস্ত করে। গর্ভধারণের কারণে এই টিউমারেরও কিছু পরিবর্তন হয়, যা জটিলতা তৈরি করে। যেমন– জরায়ু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিউমারের আকার ও সাইজ পরিবর্তন হতে পারে। অনেক সময় টিউমারের মধ্যে রক্তক্ষরণ হয়ে, অথবা পানি জমা হয়ে পেটে প্রচণ্ড ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে। প্লাসেন্টা যদি টিউমারের ওপর অবস্থিত হয় তবে অনেক সময় প্লাসেন্টা সেপারেশন হয়ে অ্যান্টি পারটাম হেমোরেজ (রক্তপাত) হতে পারে। এ ছাড়া বাচ্চার ওজন কম হওয়া, প্লাসেন্টা প্রিভিয়া (গর্ভফুল নিচের দিকে থাকা), সময়ের আগে ডেলিভারি হওয়া ইত্যাদি জটিলতা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফাইব্রয়েডের কারণে অনেক সময় নরমাল ডেলিভারির পথ বাধাগ্রস্ত হয় এবং সিজারের প্রয়োজন হতে পারে। তা ছাড়াও ডেলিভারির সময় এবং এর পরবর্তী সময়ে অধিক রক্তপাতের আশঙ্কা থাকে। টিউমার ফেলে দেওয়া হবে কিনা তা নির্ভর করে টিউমারটি কোথায় অবস্থিত এবং এর আকার-আকৃতির ওপরে। আবার ডেলিভারির পর অনেক টিউমার আকারে ছোট হয়ে যায় এবং পরবর্তী সময়ে কোনো অপারেশন নাও লাগতে পারে। 

[গাইনি বিশেষজ্ঞ]
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।

আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।

আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।

সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
  • পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না: আসিফ নজরুল
  • বিসিআইসির নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ
  • এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
  • ৪৪তম বিসিএস: মনোনীত প্রার্থীদের তথ্য চেয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • ‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’ 
  • ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
  • মাইলস্টোনে দগ্ধ ৩৩ জন এখনো ভর্তি, আইসিইউতে ৩
  • শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনলে বোঝা যায়, তাঁর এখনো প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা আছে: আইন উপদেষ্টা
  • দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে