জিম্মি মুক্তির জন্য হামাসকে আলটিমেটাম, নইলে যুদ্ধবিরতি বাতিলের হুমকি ট্রাম্পের
Published: 11th, February 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি অবসানের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার তিনি বলেছেন, শনিবার দুপুরের মধ্যে হামাস যদি সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি না দেয়, তাহলে তিনি এ চুক্তি শেষ করে দিতে পারেন।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করার অভিযোগ এনে হামাসের পক্ষ থেকে শর্ত অনুযায়ী জিম্মি মুক্তি স্থগিত করার কথা জানানোর পর ট্রাম্প এমন হুমকি দিলেন।
আরও পড়ুনওয়াশিংটনে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী: গাজা নিয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব নাকচ করেছে আরব দেশগুলো৭ ঘণ্টা আগেহামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি গত ১৯ জানুয়ারি কার্যকর হয়। এর মধ্য দিয়ে গাজা উপত্যকায় টানা ১৫ মাসের ইসরায়েলি হামলার লাগাম টানা হয়। শর্ত মেনে এরই মধ্যে পাঁচ দফায় জিম্মি ও বন্দিবিনিময় করেছে হামাস ও ইসরায়েল।
তবে ট্রাম্পের এক ঘোষণায় পরিস্থিতি অনেকটাই ঘোলাটে হয়ে ওঠে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নেওয়ার পর ট্রাম্প জানান, গাজার নিয়ন্ত্রণ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। খালি করা হবে গাজা উপত্যকা। সেখানকার ২০ লাখের বেশি বাসিন্দাকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যদি শনিবার ১২টার মধ্যে সব জিম্মিকে ফেরত দেওয়া না হয়, আমার মনে হয়, এটাই উপযুক্ত সময়। আমি বলব, এটা (যুদ্ধবিরতি) বাতিল করো।’
আরও পড়ুনজিম্মি মুক্তি স্থগিত হামাসের, সেনা সতর্কতা ইসরায়েলের১০ ঘণ্টা আগেএএফপির খবরে জানা যায়, হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবাইদা সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি জিম্মি মুক্তির কথা রয়েছে। তবে পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত জিম্মি মুক্তি স্থগিত থাকবে। তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের কারণে যুদ্ধবিরতির পর বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় ফিরতে দেরি হয়েছে। তাঁদের গুলির লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এ ছাড়া গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছাতে দেয়নি ইসরায়েল। তাই পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত জিম্মি মুক্তি স্থগিত থাকবে।
পরে আরেক বিবৃতিতে হামাস জানায়, ‘নির্ধারিত বন্দিবিনিময়ের পাঁচ দিন আগে ইচ্ছাকৃতভাবে এই ঘোষণা (স্থগিতের) দিয়েছিল হামাস। এর উদ্দেশ্য ছিল চুক্তির শর্ত পূরণের জন্য যাতে (ইসরায়েলি) দখলদারির বিরুদ্ধে চাপ তৈরির জন্য মধ্যস্থতাকারীরা পর্যাপ্ত সময় পান। দখলদারেরা চুক্তির শর্ত মেনে চললে পরিকল্পনা অনুযায়ী পরবর্তী ধাপে বন্দিবিনিময়ের কাজ এগিয়ে নিতে দরজা খোলা থাকবে।’
ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের সেনাবাহিনী যেকোনো সম্ভাব্য দৃশ্যপটের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
আরও পড়ুন সমালোচনার মুখেও গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে ‘অনড়’ ট্রাম্প১৪ ঘণ্টা আগেসহায়তা বন্ধের হুমকিগাজা খালি করার জন্য ট্রাম্পের প্রস্তাবকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলছে জাতিসংঘ। অনেক বিশ্লেষকেরও একই মত। ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে এ প্রস্তাব।
কিন্তু ট্রাম্প অনড়। সোমবার তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র জর্ডান ও মিশর যদি গাজা নিয়ে তাঁর পরিকল্পনার আওতায় ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে তিনি ‘সম্ভবত’দেশগুলোর জন্য সহায়তা বন্ধ করে দেবেন।
মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি সোমবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে বলেছেন, আরব দেশগুলো বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরানো এবং উপত্যকাটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া-বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব নাকচ করেছে। এর পরই ট্রাম্প এমন হুঁশিয়ারি দিলেন।
এদিকে চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটনে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদতুল্লাহর সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক করার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুনগাজাকে ‘বড় আবাসন এলাকা’ মনে করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প১৬ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
দ্বিতীয় বছরের মত কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের কোনো সিনেমাা বা তথ্যচিত্র দেখানো হচ্ছে না। সম্প্রতি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব কমিটির তরফে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানানো হয়ছে। পরবর্তীতে কমিটির তরফে তাদের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে যে ছবি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে কোন ক্যাটাগরিতেই বাংলাদেশি সিনেমার নাম উল্লেখ নেই।
মূলত ভিসা জটিলতা এবং রাজনৈতিক কারণেই এই চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের উপস্থিতি থাকছে না।
বিষয়টি নিয়ে গত বছরই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারপার্সন পরিচালক গৌতম ঘোষ। সেসময় তাকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। সেদেশে ভিসা সমস্যা রয়েছে। আর বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসতে অনেকটা সময় লাগবে। স্বাভাবিকভাবেই এই অবস্থায় চলচ্চিত্র উৎসবের তালিকায় বাংলাদেশের কোনো ছবি নেই। আমরা আশা করব চলচ্চিত্র উৎসবের পরবর্তী এডিশনের (৩১ তম) আগে প্রতিবেশী দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”
কিন্তু এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও অবস্থার যে কোনো পরিবর্তন হয়নি তা চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের অনুপস্থিতির ঘটনাটাই পরিষ্কার।
যদিও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি কমিটির এক সদস্য বলেছেন, “আন্তর্জাতিক বিভাগে বাংলাদেশ থেকে শুধুমাত্র একটি ছবি জমা দেওয়া হয়েছিল। তানভীর চৌধুরীর ‘কাফ্ফারাহ’। কিন্তু দুঃখের বিষয় এটি আমাদের কাঙ্ক্ষিত মানদণ্ড পূরণ করতে পারেনি। ফলে চলচ্চিত্র উৎসবে এই ছবিটি জায়গা পায়নি।”
চলতি বছরের ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে ৩১ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। এক সপ্তাহব্যাপী এই উৎসব চলবে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এই উৎসবে ৩৯ টি দেশের ২১৫ টি ছবি দেখানো হবে। ভারত ছাড়াও অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, পোল্যান্ড, বেলজিয়াম, ইতালি, ব্রাজিল, মরক্কো, অস্ট্রিয়া, তুরস্ক, বলিভিয়া, গুয়েতেমালা, শ্রীলংকা, চীন, জাপান, ইরান, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, ফিলিস্তিন, ইরাক, সৌদি আরব, মিশর, সুদান, লেবানন।
সুচরিতা/শাহেদ