দেশের লবণের চাহিদার বড় একটি জোগান আসে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা ও কক্সবাজার জেলা থেকে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার লবণের উৎপাদন বেশ ভালো বলতে হবে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ নেই লবণচাষিদের। মধ্যস্বত্বভোগী ও সিন্ডিকেটের কারণে লবণ উৎপাদন করে মাথায় হাত তাঁদের। আগেও অনেকবার এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে লবণচাষিদের। এ দুর্গতি থেকে কি তাঁদের মুক্তি নেই?

প্রথম আলোর একটি সরেজমিন প্রতিবেদনে কক্সবাজারের লবণচাষিদের কাছ থেকে জানা যায়, জানুয়ারি মাসে প্রতি মণ লবণ বিক্রি হয় ২৪০ টাকায়। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দাম ১৮০-১৮৫ টাকায় নেমে এসেছে। এতে প্রতি মণ লবণে চাষিদের ১৭০ টাকার মতো লোকসান হচ্ছে। কারণ, প্রতি মণ লবণ উৎপাদনে চাষিদের খরচ হয় প্রায় ৩৫০ টাকা।

দফায় দফায় লবণের দাম কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে চাষিরা বলছেন, মধ্যস্বত্বভোগী ও কার্গো বোটের মালিকেরা সিন্ডিকেট করে লবণের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার চার হাজারের বেশি চাষি লবণ চাষ করেন। সিন্ডিকেটের বাইরে গিয়ে লবণ বিক্রির সুযোগ নেই। এখানে আছে কার্গো বোটের মালিকদের দৌরাত্ম্যও। উৎপাদিত লবণ সমুদ্রপথে কার্গো বোটে করেই ঢাকা-চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ-খুলনাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠাতে হয়। ফলে তাঁদের কাছে হাত-পা বাঁধা চাষিদের।

প্রতি কেজি লবণ বিক্রি করে পাওয়া যাচ্ছে পাঁচ টাকার কম। এই সামান্য মূল্যে কী করে লবণ বিক্রি করেন চাষিরা! ফলে মাঠের পর মাঠ সাদা লবণের স্তূপ পড়ে আছে। এখন কক্সবাজারের কোথাও লবণ মজুত কিংবা সংরক্ষণের গুদামও নেই। চাষিরা উৎপাদিত লবণ মাঠে গর্ত খুঁড়ে সংরক্ষণ করেন। পরবর্তী সময়ে দাম বাড়লে যেন বিক্রি করা যায়। কিন্তু এভাবে তো সংকট সমাধান করা সম্ভব নয়। বেশির ভাগ চাষি উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে লবণ উৎপাদনে নামেন। মৌসুমে ন্যায্যমূল্যে লবণ বিক্রি করলে ৮০ শতাংশ চাষিই পথে বসবেন বলে জানা যাচ্ছে।

৪৪ হাজার প্রান্তিক চাষি, ১ লাখ শ্রমিকসহ কক্সবাজার জেলার অন্তত ১০ লাখ মানুষ লবণ উৎপাদন, পরিবহন ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কার্গো বোটের মালিকদের নিয়ন্ত্রণ ও সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে লবণের এ বিশাল খাত হুমকির মুখে পড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

সম্প্রতি কক্সবাজারের লবণের মাঠ পরিদর্শনে যান শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান। তিনি লবণ উৎপাদন কার্যক্রম পরিদর্শনের পাশাপাশি চাষিদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর জেলা প্রশাসন, লবণচাষি, লবণ মিলের মালিক ও বিসিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এ খাতের সমস্যা ও সংকটগুলোর বিষয়ে তিনি অবহিত হয়েছেন। আমরা আশা করি, লবণশিল্পের উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকার কার্যকর ভূমিকা রাখবে। মধ্যস্বত্বভোগী ও সিন্ডিকেট ভাঙার ব্যাপারে সরকারকে কঠোর হতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: লবণ ব ক র র লবণ লবণ র

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে চুরির মামলার ২ আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩

বন্দরে বসতঘরে চুরির ঘটনার মামলার ২ চোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতরা হলো বন্দর উপজেলার ফরাজীকান্দা ছোট মসজিদ এলাকার কাজীমুদ্দিনের ছেলে সাব্বির(২২) ও একই এলাকার ইয়াজল হোসেন মিয়ার ছেলে অলিদ(৪০)। এ ব্যাপারে গৃহিনী শান্তা বেগম বাদী হয়ে ধৃতদের বিরুদ্ধে  বন্দর থানায়  চুরির মামলা দায়ের করেন। যার নং ১(১১)২৫। 

এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার জয়নগর এলাকার সিরাজুল মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম (৩২) নামে এক যুবককে সন্দেহ জনক ভাবে আটক করে পুলিশ। ধৃতদের সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে উল্লেখিত মামলায়  আদালত প্রেরণ করেছে পুলিশ।

গত রোববার (২ নভেম্বর)  রাতে বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত ৪ অক্টোবর বন্দর উপজেলা  ফরাজীকান্দা এলাকায় এ চুরির ঘটনাটি ঘটে।

‎মামলার তথ্য সূত্রে জানা গেছে,  মামলার বাদিনী বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা গ্ ছোট মসজিদস্থ তার  পিতার বাড়িতে বসবাস করে আসছে। বিবাদী একই এলাকার সম্পর্কে বাদিনী চাচাত ও ফুফাত ভাই ।

গত ৩ অক্টোবর বাদিনী নানা মৃত্যুবরন করলে বাদিনীসহ তার  পরিবারের লোকজন মুন্সিগঞ্জস্থ নানা বাড়িতে যায়। পরের দিন গত ৪ অক্টোবর বাদিনী তার পিতার বাড়িতে এসে  রুমে প্রবেশ করলে সবকিছু এলোমেলো দেখতে পায়।

সন্দেহ হলে ঘরের ভিতর তল্লাশী করিলে দেখতে পাড আমাদের দুটি এড্রয়েট মোবাইল সেট,মাটির ব্যাংকে রক্ষিত ১০ হাজার টাকা,দামী ব্রান্ডের ব্লুটোথসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি করে নিয়ে যায় ।

ঘরের বিভিন্ন স্থানে খোজ করিয়াও বর্নিত মালামালের কোন সন্ধান পাওয়া যায় নাই। বিবাদীরা ইতিপূর্বেও আমার বাড়িতে চুরি করেছিল এবং আমাদের প্রতিবেশিরা আমাদের অনুপস্থিতিতে বাড়ির চারপাশে ঘুরাঘুরি করতে দেখেছে বলে জানায়।

‎‎পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।  এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার জয়নগর এলাকার সিরাজুল মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম (৩২) নামে এক যুবককে সন্দেহ জনক ভাবে আটক করে। পরে আটককৃতকে পুলিশ আইনের ৩৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ