কন্যাসন্তান নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বিপদে চিরঞ্জীবী
Published: 13th, February 2025 GMT
দক্ষিণ ভারতের জনপ্রিয় তারকা চিরঞ্জীবী; ইন্ডাস্ট্রির নতুন প্রজন্মের কাছে প্রেরণার নাম। কিন্তু সেই দক্ষিণি তারকাদের বাড়িতেই কন্যাসন্তান নিয়ে লিঙ্গবৈষম্যমূলক মন্তব্য! সম্প্রতি জনপ্রিয় দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেতা ব্রহ্মানন্দমের ‘ব্রহ্মা আনন্দম’ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে হাজির হয়েছিলেন চিরঞ্জীবী। সেখানেই কন্যাসন্তান নিয়ে তাঁর এক নেতিবাচক মন্তব্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের
এ অনুষ্ঠানে চিরঞ্জীবীকে বলতে শোনা যায়, বাড়িতে এত নাতনিরা আছে, নিজেকে লেডিস হোস্টেলের তত্ত্বাবধায়ক বলে মনে হয়। রামচরণকে বলেছি, এবার যেন ছেলে হয়। চিরঞ্জীবীর কথায়, ‘আমি সব সময় চাই আর ছেলে রামচরণকে বলিও যে অন্তত এবার যেন তোর একটা ছেলে হয়। আমাদের পারিবারিক পরম্পরা বজায় রাখার জন্য একজন বংশপ্রদীপ চাই। আমার ভয় হয়, আবার যেন ওর কন্যাসন্তান না হয়।’
এ মন্তব্য ভাইরাল হতেই বিতর্কের ঝড়! চিরঞ্জীবীর মতো বড় তারকার কাছ থেকে লিঙ্গবৈষম্যমূলক এমন মন্তব্যে অবাক হয়েছেন অনুরাগীরা।
আরও পড়ুনভক্তকে ধাক্কা দিয়ে তোপের মুখে রামচরণ১২ জুন ২০২৪এ বিতর্ক নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেননি চিরঞ্জীবী। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দার ঝড় বইছে। তারকা হিসেবে এমন মন্তব্য করে থাকলেও অভিনেতার ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে দাবি তাঁদের। একজন লিখেছেন, ‘এই শতকে দাঁড়িয়েও আপনার মতো একজনের কাছ থেকে এমন মন্তব্য!’ আরেকজন লিখেছেন, ‘আপনার মতো তারকার এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা উচিত নয়।’
উল্লেখ্য, বিয়ের প্রায় ১১ বছর পর রামচরণ, উপাসনার সংসার আলো করে জন্ম নিয়েছে কন্যাসন্তান। শখ করে দাদা চিরঞ্জীবীই নাতনির নাম রাখেন ‘মেগা প্রিন্সেস’। তবে এবার সেই চিরঞ্জীবীই কিনা লিঙ্গবৈষম্যমূলক মন্তব্য করলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।
সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’
সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’