যুক্তরাষ্ট্রের ভারী বোমার চালান পৌঁছালো ইসরায়েলে
Published: 17th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
ইসরায়েল-হামাস চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ২০০০ পাউন্ড ওজনের এমকে-৮৪ বোমার চালান পেয়েছে ইসরায়েল। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, বাইডেনের প্রশাসন এই চালান আটকে রেখেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও অনুমোদন দেওয়ার পর এই চালান ইসরায়েলে পৌঁছালো।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, আজ রাতে যে গোলাবারুদের চালান ইসরায়েলে এসেছে, যা ট্রাম্প প্রশাসনের পাঠানো। এগুলো বিমানবাহিনী ও আইডিএফের (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। তাছাড়া ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্কের আরেকটি প্রমাণ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের সহায়তা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। এরই অংশ হিসেবে হাজার হাজার ২০০০ পাউন্ডের বোমা পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এক চালানের পরই এই বোমা পাঠানো বন্ধ করে দেন তিনি।
এসব বোমা ব্যবহারে বেসামরিক জনগণের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে, বিশেষ করে গাজা যুদ্ধে ব্যবহার করা হতে পারে- এই আশঙ্কায় ইসরায়েলকে ২০০০ পাউন্ডের বোমা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেল বাইডেন প্রশাসন।
এমকে-৮৪ নামের এই ২০০০ পাউন্ড ওজনের বোমাটি পুরু কংক্রিট ও ধাতু ভেদ করতে পারে। এই বোমার বিস্ফোরণ ব্যাপক এলাকা জুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে সক্ষম।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, বোমার এই চালান এমন সময় ইসরায়েলের হাতে এসেছে, যখন গাজায় হওয়া নাজুক যুদ্ধবিরতি প্রায় ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। এই বিরতি যেকোনো সময় ভেঙে পড়ার উদ্বেগ জানিয়েছে গাজাবাসী।
তকে ট্রাম্পের বোমার চালান পাঠানো পদক্ষেপ প্রত্যাশিতই ছিল। বাইডেনের স্থগিতাদেশ বাতিল করে দেওয়ার পর ট্রাম্প বলেছিলেন, আমরা এগুলো ছেড়ে দিয়েছি। তারা এগুলোর জন্য অর্থ দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছে। তারা অর্থ দিয়েছিল, এমন অনেক জিনিস বাইডেন সরবরাহ করেননি। সেগুলো এখন পাঠানো হচ্ছে।
দখলদার ইসরায়েলের অন্যতম মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প ও বাইডেন দুজনেই ইসরায়েলের ঘোর সমর্থক। গাজায় সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস নির্মূলে ইসরায়েলি অভিযানের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছিল।
গাজায় মানবিক সংকট নিয়ে মানবাধিকার কর্মীরা তীব্র সমালোচনা করলেও ওয়াশিংটন তাতে পাত্তা দেয়নি। ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সরবরাহে নিষেধাজ্ঞার দাবি উঠলেও তা সফল হয়নি। উল্টো ওয়াশিংটন বলছে, তারা গাজার হামাস, লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতিদের মতো ইরান সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো থেকে নিজেকে রক্ষায় ইসরায়েলকে সহায়তা করছে।
সূত্র: সিএনএন
এনজে
.উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ